কুষ্টিয়ার ইসলামী বিশ্ববিদ্যলয়ের (ইবি) এক শিক্ষকের বিরুদ্ধে নারী শিক্ষার্থীদের যৌন নিপীড়নের অভিযোগ উঠেছে। বডি শেমিং, বিভিন্ন সময় ভিডিও কল দেওয়া, ভিডিও কল না ধরলে পরীক্ষায় ফেল করানো, মার্ক দেওয়ার প্রলোভনে কুপ্রস্তাবসহ বিভিন্ন অভিযোগ করেছেন এক ডজন শিক্ষার্থী। গত ২২ জুন বিভাগের সভাপতি বরাবর এসব অভিযোগ দেন শিক্ষার্থীরা। এর প্রেক্ষিতে একাডেমিক কার্যক্রম থেকে অব্যহতি দেওয়া হয়েছে। অভিযুক্ত শিক্ষক বিশ্ববিদ্যালয়ের বায়োটেকনোলজি এন্ড জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. আজিজুলইসলাম।
ক্যাম্পাস এবং ভুক্তভোগী ছাত্রী সূত্রে জানা যায়, তিনি প্রত্যেক ব্যাচেই বিভিন্ন ছাত্রীদের টার্গেট করে বাজে ইঙ্গিত এবং কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য করেন। তিনি দীর্ঘদিন থেকে এ কাজটি করে যাচ্ছেন। অনেকে সঙ্গে এমন ঘটনা ঘটলেও ফেল করে দেওয়ার ভয়ে তারা কাউকে কিছু বলতে না। দুই একজন অভিযোগ করলে অধ্যাপক রেজাওয়ানুল ইসলাম সমাধান করে দেন। পরে অনেকের সঙ্গে এমন ঘটনা ঘটলে একসঙ্গে অভিযোগ করেছেন ছাত্রীরা।
বিভিন্ন বিভাগের ছাত্রীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, প্রত্যেক বিভাগেই এমন শিক্ষক রয়েছে। যারা সুন্দরী মেয়ে দেখে বিভিন্ন প্রলোভনে তাদের সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক করতে চান। রাজি হওয়া ওইসব শিক্ষার্থীদের নাম্বার টেম্পারিং করে সিজিপিএ বাড়িয়ে দেন। কিন্তু নিজের সম্মান ও ভয়ে তারা প্রতিবাদ করতে করেন না। শিক্ষার্থীরা পরিচয় গোপনে অভিযোগ দিলে সমস্যা প্রতিকারের ব্যবস্থা করলে অনেকের মুখোশ উন্মোচন হবে।
অভিযোগে এক শিক্ষার্থী বলেন, আমাকে রাতে ভিডিও কল দিত। আমি অডিও কল দিলে বলত আমি ভিডিও কল ছাড়া কথা বলি না। বাজে ইঙ্গিতপূর্ণ কথা বলার পাশাপাশি বডি শেমিং করাসহ কোর্সে ভালো রেজাল্ট করতে পারবো না বলে হুমকি দেন এই শিক্ষক।
অভিযোগে আরেক ছাত্রী বলেন, ট্যুরে যাওয়ার সময় আমি সাঁতার পারি কিনা জিজ্ঞেস করেন। আমি যখন বলি সাতার পারি না তখন তিনি বলেন, তাহলে তো এক সঙ্গে সাঁতার কাটতে পারব না। তিনি বডি ফিগারের বিষয়ে কম্প্লিমেন্ট দিতেন এবং ফার্স্ট ইয়ার থেকে চেক আউট করছেন বলে জানান। ভাইভাতে নিকাব নিয়ে কটাক্ষ করাসহ মার্ক দেওয়ার প্রলোভনে বিভিন্ন কুরুচিপূর্ণ প্রস্তাব দিতেন।
বায়োটেকনোলজি এন্ড জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক ড. নাজমুল হুদা বলেন, ‘অভিযোগ পাওয়ার পর ওই শিক্ষককে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত তিনি একাডেমিক কার্যক্রম থেকে বিরত থাকবেন।’
বায়োটেকনোলজি এন্ড জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. আজিজুল ইসলাম, ‘আমি এই বিষয়ে মেন্টালি আপসেট আছি। কোন মন্তব্য করতে চাচ্ছি না।’
বিডি প্রতিদিন/নাজমুল