বগুড়ায় একের পর এক খুনের ঘটনায় আতঙ্কিত জেলাবাসী। একটি খুনের রেশ না কাটতেই আরেকটি খুনের ঘটনা ঘটছে। বেশির ভাগ খুনের ঘটনার পিছনে বিয়ের প্রস্তাবে রাজি না হওয়া, আধিপত্য বিস্তার, ভূমি দখল, পারিবারিক কলহ, লুটপাট, মাদকের টাকা জোগাড় ও মাদক ব্যবসা নিয়ন্ত্রণকে কেন্দ্র করেই বগুড়ায় খুনের ঘটনা বাড়ছে।
বগুড়া জেলা পুলিশের সূত্রে জানা যায়, জেলার ১২টি উপজেলায় ২০২৫ সালের জানুয়ারিতে তিনজন, ফেব্রুয়ারিতে চারজন, মার্চে চারজন, এপ্রিলে তিনজন ও জুন এবং জুলাইয়ে পাঁচজনসহ মোট ১৯ জন নিহত হয়েছেন। অপরদিকে গত ২০২৪ সালে বগুড়ায় ৯৫টি খুনের ঘটনা ঘটেছে।
সর্বশেষ প্রেমের প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় বুধবার রাতে বগুড়ায় বসতবাড়িতে ঢুকে দাদি শাশুড়ি-নাতবউকে গলা কেটে হত্যা করা হয়েছে। এ ঘটনায় ছুরিকাঘাতে আহত হয়েছে ১৬ বছরের শিক্ষার্থী বন্যা আক্তার।
হত্যাকান্ডের ঘটনায় প্রধান অভিযুক্ত সৈকত হাসানকে গ্রেপ্তার করেছে জেলা গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ। বৃহস্পতিবার ভোর ৪টার দিকে শহরের খান্দার এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তার সৈকত হাসান বগুড়া শহরের ইসলামপুর হরিগাড়ী এলাকার মো. সোহেল ইসলামের ছেলে।
বগুড়া জেলা গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের অফিসার ইনচার্জ (ওসি) ইকবাল বাহার জানান, হত্যাকান্ডের পরপরই পুলিশ অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করতে মাঠে নামে। গ্রেপ্তার এড়াতে সৈকত নানান কৌশলে আত্মগোপনে ছিল। পরে পুলিশের অভিযানে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
এর আগে ৯ জুলাই দুপচাঁচিয়া উপজেলার লক্ষ্মীমন্ডপ গ্রামে নিজ বাড়িতে খুন হয় শ্বশুর ও পুত্রবধূ। এ সময় ঘরে থাকা শিশু রুকাইয়া তাসনিম মালিহা (৫) অলৌকিকভাবে বেঁচে যায়।
নিহতরা হলেন-ওই গ্রামের অবসরপ্রাপ্ত মাদরাসা শিক্ষক আফতাব হোসেন (৭০) ও তার ছেলের বউ রিভা আকতার (২৮)। রিভার স্বামী মো. শাহজাহান সৌদি আরবে থাকেন। হত্যাকান্ডে র সময় তাদের বাড়ির আসবাবপত্র তছনছ করা হয়েছে। পুলিশ বলছে, এটি চুরি বা ডাকাতির ঘটনা। এ ঘটনায় ১৪ জুলাই ডাকাত সর্দারসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। এ ছাড়া ১৪ জুন অপ্রাপ্ত বয়স্ক মেয়েকে বিয়ে না দেওয়ায় বাবাকে খুন করা হয়েছে। নিহত শাকিল আহম্মেদ (৪০) শহরের শিববাটি এলাকার বাসিন্দা এবং পেশায় রিকশাচালক ছিলেন। এই মামলায় তিনজকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
বগুড়ার পুলিশ সুপার জেদান আল মুসা জানান, জেলা পুলিশ জনগণের নিরাপত্তা ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় সবসময় কাজ করে যাচ্ছে। বগুড়ায় যতগুলো খুন হয়েছে এসব খুনের সঙ্গে যারা জড়িত তাদের চিহ্নিত করে গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। পুলিশ এসব নিয়ন্ত্রণে মাঠে রয়েছে।