ঈদের দীর্ঘ ছুটিতে পর্যটকদের পদচারণে মুখর হয়ে উঠেছে সিলেট। ঈদের দুই দিন পর থেকে অর্থাৎ সোমবার থেকে সিলেটে বাইরের জেলাগুলো থেকে পর্যটক আসা শুরু করেছে। পর্যটনসংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা আশা করছেন, অনুকূল আবহাওয়া থাকায় আগামী এক সপ্তাহ পর্যটক সমাগম থাকবে সিলেটে। তবে জাফলংয়ে পর্যটকদের ওপর চোরাকারবারিদের হামলা ও উৎমাছড়া থেকে পর্যটকদের বের করে দেওয়ার ঘটনা শেষ পর্যন্ত নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে বলেও আশঙ্কা তাদের।
পর্যটনসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা জানান, সোমবার থেকে দেশের বিভিন্ন জেলার পর্যটকরা দলবেঁধে সিলেট আসতে শুরু করেছেন। সিলেটে এসেই প্রথমে কেউ ছুটছেন জাফলংয়ে আবার কেউ যাচ্ছেন সাদাপাথরে। ঈদের পর থেকে জাফলং, লালাখাল, সাদাপাথর, বিছনাকান্দি, উৎমাছড়া, রাতারগুলসহ সব কটি পর্যটন কেন্দ্রে পর্যটকদের উপচে পড়া ভিড় পরিলক্ষিত হচ্ছে। পাথরের ওপর ধলাই ও পিয়াইন নদীর স্বচ্ছ জলধারায় স্নাত হয়ে মনজুড়াতে দেখা গেছে পর্যটকদের। আবার কেউ হারিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেছেন রাতারগুলের গভীর অরণ্যে। জাফলংয়ে বেড়াতে যাওয়া পর্যটকদের ছুটতে দেখা গেছে মায়াবী ঝরনার টানে। তবে বৃষ্টি না হওয়ায় পানিশূন্য ঝরনা হয়তো মন ভরাতে পারেনি তাদের। তবে পাহাড়ি ঝরনার প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে মুগ্ধ হয়েছেন তারা। এর বাইরে সিলেটের চা-বাগানগুলোতে ঈদের দিন থেকে ছিল পর্যটকদের ভিড়। সিলেটে বেড়াতে আসা পর্যটকরা ওলিকুল শিরোমণি হজরত শাহজালাল (রহ.) ও হজরত শাহপরাণ (রহ.)সহ সিলেটের ওলি-আউলিয়াদের মাজার জিয়ারত করতেও ভুলছেন না। সিলেট হোটেল মোটেল অ্যান্ড গেস্ট হাউস ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাবেক সভাপতি এ টি এম শোয়েব বলেন, ‘সোমবার থেকে বাইরের জেলা থেকে সিলেটে পর্যটকরা আসতে শুরু করেছেন। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ও বন্যার আশঙ্কা দূর হওয়ায় আশা করা যাচ্ছে আগামী এক সপ্তাহ এবার সিলেটে পর্যটক সমাগম থাকবে।’
এদিকে পর্যটন কেন্দ্রগুলোতে কিছু অপ্রীতিকর ঘটনাও ঘটেছে। সোমবার বিকাল ৪টার দিকে পর্যটকদের ওপর হামলা চালিয়েছে চোরাকারবারিরা। এ ছাড়া সিলেটের কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার উৎমাছড়া পর্যটন কেন্দ্র থেকে রবিবার পর্যটকদের বের করে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় কিছু লোকের বিরুদ্ধে। এ বিষয়ে সিলেটের জেলা প্রশাসক শের মাহবুব মুরাদ গণমাধ্যমকে বলেন, ‘ইতোমধ্যে সেখানকার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে ঘটনাটি তদন্ত করতে বলা হয়েছে। এটি একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা। আশা করি পর্যটকদের ওপর এর কোনো প্রভাব পড়বে না।’