ঢাকা ম্যাস র্যাপিড ট্রানজিট ডেভেলপমেন্ট প্রজেক্টের লাইন-১-এর (মেট্রোরেল) অধীনে ভূমি অধিগ্রহণে জালিয়াতি করে প্রায় পৌনে ৫ কোটি টাকা লুট হয়েছে। পুরান ঢাকার লালবাগের রিয়াজ উদ্দীন নামে এক ব্যক্তি লাইন-১-এর অধীনে নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জের পিতলগঞ্জ মৌজায় ডিপো অ্যাকসেস করিডর নির্মাণের জন্য ভূমি অধিগ্রহণে এ জালিয়াতির আশ্রয় নেন। তিনি ভূমি অধিগ্রহণের নামে সরকারি কোষাগার থেকে ৪ কোটি ৭১ লাখ ৭৬ হাজার ৪১৮ টাকা উত্তোলন করে আত্মসাৎ করেছেন বলে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) তদন্তে প্রমাণিত হয়েছে।
২০২২ সালের ৬ অক্টোবর, ২০২৩ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি, ৪ এপ্রিল, ১৩ এপ্রিল এবং ১৩ জুলাই পাঁচটি চেকের মাধ্যমে এসব টাকা তুলে নেওয়া হয়। ৩১ জুলাই এ ঘটনায় সমন্বিত জেলা কার্যালয় নারায়ণগঞ্জে দুদকের সহকারী পরিচালক আবদুল মালেক মামলা করেন।
দুদকসংশ্লিষ্টরা জানান, নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসনের এলএ শাখার কর্মকর্তাদের যোগসাজশ ছাড়া ওই টাকা হাতিয়ে নেওয়া সম্ভব নয়। ভূমি অধিগ্রহণের একটি চেক পাস হতে এলএ শাখার ল্যান্ড ইকুইজেশন কর্মকর্তা, সার্ভেয়ারসহ অন্তত ১২ জনের স্বাক্ষর লাগে। অথচ দুদকের কমিশন সভায় এদের কাউকে মামলায় আসামি করার বিষয়ে অনুমোদন দেওয়া হয়নি। জানা যায়, জালিয়াতির হোতা রিয়াজ উদ্দীন প্রথমে সংশ্লিষ্ট জমির মূল দলিল হারিয়ে গেছে বলে রূপগঞ্জ থানায় পাঁচটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন। পরে তিনি সাব-রেজিস্ট্রি অফিস থেকে ওই দলিলগুলোর সার্টিফায়েড কপি তুলে জমা দেন এবং ক্ষতিপূরণের টাকা তুলে নেন। জমিগুলো এর আগে সোনালী ব্যাংকের কাছে বন্ধক রাখা হয়েছিল এবং বন্ধকি দলিল এখনো কার্যকর রয়েছে।
মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, রিয়াজ উদ্দীনের বাড়ি লালবাগে। মেসার্স উইন্টার কালেকশান লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক গোপাল চন্দ্র বর্মন ১০ কোটি ৭৫ লাখ টাকা সোনালী ব্যাংক থেকে ঋণ নেন। ঋণের বিপরীতে জামিনদার রিয়াজ উদ্দীন। তিনি সহায়ক জামানত বাবদ তাঁর রূপগঞ্জের পিতলগঞ্জ মৌজায় ৯২.৫০ শতাংশ জমি বন্ধক রাখেন। যার দলিল ব্যাংকে জমা রাখা আছে। এদিকে এ জমির দলিলের মূল কপিগুলো হারিয়ে গেছে মর্মে জিডি করেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে সংশ্লিষ্ট সাব-রেজিস্ট্রি অফিস থেকে দলিলের অবিকল নকল (সার্টিফায়েড কপি) উত্তোলন করে খাঁটি হিসেবে ব্যবহার করে নারায়ণগঞ্জের ভূমি অধিগ্রহণ শাখায় জমা দেন। এরপর সরকারি কোষাগার থেকে ভূমি অধিগ্রহণের ক্ষতিপূরণ বাবদ ৪ কোটি ৭১ লাখ ৭৬ হাজার ৪১৮ টাকা উত্তোলন ও আত্মসাৎ করেন।