ছেলেবেলায় যে ক্লাবের সমর্থনে গলা ফাটিয়েছেন, যে দলে খেলতেন নিজের আইডল জোনিমির বোবান, ক্যারিয়ারের শেষবেলায় সেই এসি মিলানে যোগ দিয়ে দুর্দান্ত কিছু অর্জনের প্রত্যাশার কথা শোনালেন লুকা মদ্রিচ। আর সেজন্য নতুন সতীর্থদের উদ্দেশ্যে এই তারকা মিডফিল্ডারের পরিষ্কার বার্তা, সাধারণ মানের ফুটবল খেললে হবে না।
৯০ দশকে ইউরোপিয়ান ক্লাব ফুটবলে সবচেয়ে শক্তিশালী দলগুলোর একটি ছিল এসি মিলান। সেই তারাই আজ ধুঁকছে। গত মৌসুমের সেরি আয় একের পর এক বাজে পারফরম্যান্সে অষ্টম হয়ে আসর শেষ করে দলটি। রিয়াল মাদ্রিদে সফল ১৩টি বছর কাটিয়ে এবং ক্লাবটির হয়ে রেকর্ডসংখ্যক শিরোপা জয়ের পর গত সোমবার মিলানের সঙ্গে এক বছরের চুক্তি করেন ৩৯ বছর বয়সী মদ্রিচ। মেয়াদ আরও এক বছর বাড়ানোর সুযোগও রাখা আছে চুক্তিপত্রে। নতুন ঠিকানায় এসে মিলান টিভিকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে দলটিকে শীর্ষ পর্যায়ে ফেরানোর লক্ষ্যের কথা বললেন মদ্রিচ।
তিনি জানান, “সাধারণ মানের ফুটবল খেলে খুশি হতে পারে না। দলের সম্ভাব্য সবচেয়ে বড় লক্ষ্য ও শিরোপা জয়ের তাড়না থাকতে হবে এবং বিশ্বের সেরা দলগুলোর সঙ্গে লড়াই করতে হবে। আর সেই কারণেই আমি এখানে।”
সাক্ষাৎকারের এক ফাঁকে মদ্রিচকে তার ছোট্টবেলার মিলানের ওয়ার্মআপ জার্সি পরা একটা ছবি দেখানো হয়। তখন স্মৃতির ভেলায় ভেসে যেন সেই সময়ে ফিরে যান তিনি। মদ্রিচ বলেন, “বেড়ে ওঠার সময়, আমি অনেক ইতালিয়ান লিগের ম্যাচ দেখতাম এবং আমার ফেভারিট দল ছিল এসি মিলান। ওই সময়ে ক্রোয়েশিয়ায় আমরা অনেকে মিলানকে অনুসরণ করতাম, কারণ তখন এটা বিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয় ক্লাবগুলোর একটি ছিল। এছাড়া সেই সময় (সাবেক ক্রোয়াট মিডফিল্ডার) জোনিমিরি বোবান এই ক্লাবে খেলতেন, যিনি আমার আদর্শ ছিলেন।”
ইউরোপিয়ান কাপ বা চ্যাম্পিয়ন্স লিগের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ শিরোপা জিতেছে এসি মিলান। কিন্তু গতবার সেরি আয় অষ্টম হওয়ায় আগামী মৌসুমে ইউরোপিয়ান প্রতিযোগিতার কোনো পর্যায়েই দেখা যাবে না তাদেরকে। দলকে আবার সেরা অবস্থানে ফেরাতে কাজ করতে চান মদ্রিচ। আর দুই মাসের কম সময়ে ৪০ বছর পূর্ণ হবে মদ্রিচের। এই বয়সের অনেক আগেই অনেক ফুটবলার ক্যারিয়ারের ইতি টেনে দেন। কেউ খেলা চালিয়ে গেলেও, ইউরোপের বাইরের কোনো ক্লাবে পাড়ি জমান যেখানে চাপ কিছুটা কম। মদ্রিচের সামনেও তেমন সুযোগ ছিল, কিন্তু তিনি এখানেই থাকার সিদ্ধান্ত নেন। সেই কারণও জানালেন তিনি।
মদ্রিচ বলেন “আমি ইউরোপে থাকতে চেয়েছি, প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক ফুটবল খেলা চালিয়ে যেতে চেয়েছি। (ইউরোপের বাইরের ক্লাবের) কিছু প্রস্তাব পেয়েছিলাম, কিন্তু মিলানের প্রস্তাব পাওয়ার প্রথম মূহূর্ত থেকেই নিজের কাছে সবকিছু পরিষ্কার হয়ে যায়।”
বিডি-প্রতিদিন/আব্দুল্লাহ