বাংলাদেশের ক্রীড়াঙ্গনের জন্য মাইলফলকই। হকির যে কোনো বিশ্বকাপে প্রথমবার খেলতে নামছে লাল-সবুজের দল। জাতীয় না হলেও অনূর্ধ্ব-২১ হকি বিশ্বকাপ খেলার অপেক্ষায়। ২৮ নভেম্বর থেকে ১০ ডিসেম্বর পর্যন্ত ভারতের চেন্নাই ও মাদুরায়ে অনুষ্ঠিত হবে যুবাদের বিশ্ব সেরার আসর। অনূর্ধ্ব-২১ দল বিশ্বকাপে জায়গা করে নিয়েছে গত ডিসেম্বরে। খেলোয়াড়রা নিজেদের ঝালাই করার জন্য পর্যাপ্ত সুযোগও পেয়েছিল। হকি ফেডারেশনও ঘোষণা দিয়েছিল ক্যাম্পে খেলোয়াড় বাছাই করে ছয় মাস অনুশীলন করবে। সেই পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা যায়নি। এখন দুই মাস কমে চার মাসের প্রস্তুতি নিতে হবে। তবু মন্দের ভালো বলা যায়। বিশ্বকাপের আগে ছেলেরা যে চার মাস অনুশীলনে থাকবে হকির প্রেক্ষাপটে এটাই বা কম কিসের। অনেকের তো শঙ্কা ছিল বিশ্বকাপের আগে জোড়াতালি দিয়ে প্রশিক্ষণ হয় কি না। সেই ভয়টা কেটে গেলেও শঙ্কা থেকে যাচ্ছে প্রস্তুতি কতটা জোরালো হবে?
প্রস্তুতির শুরুতেই তো হকিপ্রেমীরা বড় ধাক্কা খেয়েছে। কেননা যে কোচের হাত ধরে বাংলাদেশ বিশ্বকাপ খেলার সুযোগ পেল সেই মওদুদুর রহমান শুভকেই দায়িত্বে রাখা হয়নি। কেন রাখা হয়নি এ নিয়ে ফেডারেশনের কোনো ব্যাখ্যা নেই। অবশ্য এ অভ্যাস শুধু হকি নয়, দেশের অধিকাংশ ফেডারেশনই কথায় কথায় কোচ বদল করে। আগের দিন ক্যাম্পে ডাকা খেলোয়াড়রা রিপোর্ট করার পর আজ থেকেই প্রস্তুতিতে নেমেছে অনূর্ধ্ব-২১ দল। আপাতত দুই দেশি কোচ আশিকুজ্জামান ও মশিউর রহমান বিপ্লব অনুশীলন করাবেন মেহেরাব হোসেন সামিদের। সেপ্টেম্বর থেকে ডাচ কোচ সিগফ্রাইভ অ্যাকমাল প্রশিক্ষণ দেবেন যুবাদের। দেশীয় দুই কোচ খেলোয়াড়দের ফিটনেস দেখবেন। ৪৫ খেলোয়াড় অনুশীলনে নামলেও বাছাই প্রক্রিয়ায় তা ধাপে ধাপে কমে আসবে। মান যাচাই করে ডাচ কোচই চূড়ান্ত দল ঠিক করে দেবেন।
বিশ্বকাপে বাংলাদেশ খেলবে ‘এফ’ গ্রুপে। যেখানে প্রতিপক্ষ হিসেবে পাচ্ছে গতবারের রানার্সআপ ফ্রান্স, অস্ট্রেলিয়া ও দক্ষিণ কোরিয়া। শক্তিশালী দেশের বিপক্ষে খেলতে হবে। শক্তির বিচারে তিন দেশের বিপক্ষে বাংলাদেশের জয়ের সম্ভাবনা নেই বললে চলে। তাহলে বিশ্বকাপের অভিষেকটা কেমন হবে? বাস্তবতার কথা চিন্তা করলে পজিশন একেবারে নিচের দিকে না থাকে সেটাই টার্গেট বলা যায়। ক্যাম্পে ডাক পাওয়া খেলোয়াড়দের মধ্যে ৪৪ জনই হচ্ছে বিকেএসপির। একজন হলেন ঢাকার আরমানি টোলার নাজমুস সাবিত মাহমুদ।
হকির যে কোনো বিশ্বকাপে প্রথমবারের মতো খেলছে বাংলাদেশ। এতে ছেলেদের প্রস্তুতিটা রাঙানো যেতে পারে। দেশের সাবেক তারকাদের এনে অনুশীলন দেখালে যুবারা উজ্জীবিত হতে পারেন। হকি ফেডারেশন তা করবে কি না সেটাই প্রশ্ন। কিংবদন্তিদের সামনে থেকে দেখতে পারলে আত্মবিশ্বাসটাও বাড়ে।