প্রতিপক্ষ বাংলাদেশে খেলবেন হামজা দেওয়ান চৌধুরী। ইংলিশ প্রিমিয়ার ফুটবলে খেলার অভিজ্ঞ হামজা বিশ্বমানের ফুটবলার। সেজন্য এএফসি এশিয়ান কাপের বাছাইপর্বে বাংলাদেশের বিপক্ষে ম্যাচটিকে হালকা মেজাজে নেওয়ার কোনো সুযোগ ছিল না ভারতীয় কোচ মানোলো মারকুয়েজের। দলের স্ট্রাইকিং জোনে নেই ক্ষুরধার কোনো স্ট্রাইকার। অনেকটা বাধ্য হয়ে অবসর থেকে ফিরিয়ে আনেন ৪০ বছর বয়সি স্ট্রাইকার সুনীল ছেত্রীকে। ফিরলেও বাংলাদেশের বিপক্ষে মঙ্গলবার ম্যাচে কোনো প্রভাবই বিস্তার করতে পারেননি ছেত্রী। উল্টো হামজার অলআউট ফুটবলে ত্রাহিকূল অবস্থার সৃষ্টি হয়েছিল ভারতীয় ফুটবল দলের। বাংলাদেশের ফুটবলাররা ৩-৪টি গোল মিস করলে ম্যাচটি শেষ পর্যন্ত গোলশূন্য ড্র হয়েছে। ম্যাচটি জিততে না পেরে হতাশ বাংলাদেশের কোচ হাবিয়ের কাবরেরা। দেশের মাটিতে ম্যাচ ড্র হওয়ায় ক্ষুব্ধ ভারতীয় ফুটবল সমর্থকরা। শিলংয়ে কোণঠাসা হয়ে ফুটবল খেলে কোনোরকমে ড্র করায় ক্ষুব্ধ ভারতীয় কোচ মানোলোও। মিডিয়ার মুখোমুখিতে ক্ষোভ প্রকাশ করলেও হেরে না যাওয়ায় নিজেদের ভাগ্যবান বলেছেন ভারতীয় কোচ, ‘ভাগ্য ভালো আমরা হেরে যাইনি। ভারতীয় দলের এ রকম হতশ্রী খেলা খুব কম দেখেছি।’
বাংলাদেশ অপরিচিত প্রতিপক্ষ নয়। পাহাড়রাজ্য মেঘালয়ের শিলংয়ে এই প্রথম খেলছে বাংলাদেশ। সমতল ভূমি থেকে অনেক উঁচুতে বলে স্বাভাবিক নিয়মে শ্বাস নিতে কষ্ট হয়। তার ওপর ঠান্ডা, কনকনে বাতাস। এমন পরিবেশে বাংলাদেশে ফুটবলাররা খুব পরিচিত নন। এমন কন্ডিশনের সঙ্গে মানিয়ে নিতে বাংলাদেশের ফুটবলাররা সৌদি আরবে অনুশীলন করেন। সেই অভিজ্ঞতা কাজে লাগান দেশটির ফুটবলাররা। ভারত স্বাগতিক দেশ। বাংলাদেশ ম্যাচের আগে মানোলোর শিষ্যরা মালদ্বীপের বিপক্ষে একটি প্রীতি ম্যাচও খেলে। স্বাগতিকরা সুযোগ পেয়েও জিততে পারেনি। অথচ র্যাঙ্কিংয়ে বাংলাদেশ থেকে অনেক এগিয়ে। ভারতের র্যাঙ্কিং ১২৬ এবং বাংলাদেশের ১৮৫। শক্তিমত্তায় ভারত এগিয়ে। কিন্তু মঙ্গলবারের ম্যাচে দ্বিতীয়ার্ধে কিছু সময় ছাড়ার বাকি সময়গুলোতে আধিপত্য বিস্তার করে খেলেছেন কাবরেরার শিষ্যরা। প্রথম ১০ মিনিটে ২টি গোলের সুযোগও তৈরি করেছিল সফরকারীরা। কিন্তু তাড়াহুড়া করায় গোল পায়নি। এর মধ্যে প্রথম মিনিটে গোলরক্ষক বিশাল কেথের মারাত্মক ভুলে ভারত পিছিয়ে পড়তে যাচ্ছিল। বাংলাদেশের মজিবর সুযোগটিকে কাজে লাগাতে পারেনি। গোলরক্ষক বিশালের ভুলের বিষয়ে কোচ মানোলো বলেন, ‘এ বিষয়ে খুব বেশি কথা বলতে চাই না।’ দলটির আক্রমণভাগে ধার ছিল না। ছেত্রী ছিলেন পুরোপুরি ফ্লপ। হামজা বোতলবন্দি করে রেখেছিলেন ছেত্রীকে। তার মধ্যে দলটির লেফট উইঙ্গার লিস্টন কোলাসো ভালো খেলেছেন। তার প্রশংসা করেছেন কোচ, ‘বাঁ-প্রান্তে লিস্টন ইতিবাচক ফুটবল খেলেছে। যদিও তা যথেষ্ট ছিল না।’
ঘরের মাঠ। পরিচিত পরিচিত পরিবেশ। নিজেদের সমর্থক। তারপরও হারতে হারতে ম্যাচ ড্র। এমন ড্রয়ের পর ক্ষুব্ধ মানোলো, ‘আমি শুধু হতাশ নই, প্রচণ্ড ক্ষুব্ধও। সৌভাগ্য যে আমরা গোল খাইনি। এক পয়েন্ট নিয়ে মাঠ ছেড়েছি। আমরা জঘন্য খেলেছি। দ্বিতীয়ার্ধে অবশ্য চেষ্টা করেছিলাম। কিন্তু জেতার জন্য তা যথেষ্ট ছিল না।’ বাংলাদেশের বিপক্ষে অ্যাওয়ে ম্যাচ ১৮ নভেম্বর।