শারজাহকে নিজের করে নিয়েছিলেন পারভেজ হোসেন ইমন। দারুণ ছন্দে থাকা বাঁ-হাতি ওপেনার ‘মরুশহর’কে রাঙিয়েছেন চার-ছক্কার সৌকর্যে। খেলেছেন ক্যারিয়ারের প্রথম সেঞ্চুরি। তার ৫৪ বলে সেঞ্চুরির ম্যাচটিতে সংযুক্ত আরব আমিরাতের বিপক্ষে ২৭ রানে জিতেছে বাংলাদেশ। শারজাহতেই আগামীকাল সিরিজ জেতার ম্যাচ খেলবে তারা। ক্যারিয়ারের অষ্টম অভিষেক সেঞ্চুরি করে ম্যাচসেরা হয়েছেন পারভেজ ইমন।
তামিম ইকবাল ও পারভেজ হোসেন ইমনের মধ্যে যথেষ্ট মিল রয়েছে। দুজনই ক্রিকেটার। দুজনই ওপেনার। বাঁ-হাতে ব্যাটিং করেন। দুজনই সেঞ্চুরিয়ান। টি-২০ ফরম্যাটের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে দুজনই বাংলাদেশের পক্ষে সেঞ্চুরি করেছেন। দুজনে সেঞ্চুরি করেছেন দুই মরুরাজ্যের বিপক্ষে। তামিম সেঞ্চুরি করেছিলেন ২০১৬ সালে টি-২০ বিশ্বকাপের প্রথম রাউন্ডে ভারতের ধর্মশালায় ওমানের বিপক্ষে। গতকাল মরুশহর শারজাহতে সংযুক্ত আরব আমিরাতের বিপক্ষে সেঞ্চুরি করেন পারভেজ ইমন। খেলেন ৫৪ বলে ৫ চার ও ৯ ছক্কায় ১০০ রানের নান্দনিক ইনিংস। তিন অঙ্কের নান্দনিক ইনিংসটি পারভেজের অষ্টম টি-২০ ক্যারিয়ারে প্রথম এবং বাংলাদেশের দ্বিতীয় সেঞ্চুরি। তার সেঞ্চুরিতে বাংলাদেশ ২০ ওভারে সংগ্রহ করে ৭ উইকেটে ১৯১ রান। যা আমিরাতের বিপক্ষে দলগত সর্বোচ্চ। আগের সর্বোচ্চ ২০২২ সালে দুবাইয়ে ৫ উইকেটে ১৬৯। অবশ্য যে কোনো দলের বিপক্ষে দলগত সর্বোচ্চ শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ১৯.৪ ওভারে ৫ উইকেটে ২১৫ রান।
শারজাহর ম্যাচটি ছিল ইমন’স শো। তানজিদ তামিমের সঙ্গে নতুন বলে ওপেন করেন ইমন। প্রথম বল খেলেন দ্বিতীয় ওভারে। সাজঘরে ফেরেন ২০তম ওভারের প্রথম বলে। ১৮ ওভার ক্রিজে থেকে উইকেটের চারদিকে চার, ছক্কার ঝড় তোলেন। টাইগারদের ইনিংস ১২ ছক্কার ৯টিই ইমনের। যে কোনো টাইগার ক্রিকেটারের এক ইনিংসে সবচেয়ে বেশি ছক্কা হাঁকানোর রেকর্ড। আগের রেকর্ডটি রিশাদ হোসেনের। গত বছরের মার্চে সিলেটে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে রিশাদ ৩০ বলে ৫৩ রানের ইনিংসে ৭টি ছক্কা মেরেছিলেন। ইমনের সেঞ্চুরির ইনিংসটিতে ভাগ্য সহায়ক ছিল। ব্যক্তিগত ৮৪ রানে ক্যাচ দিয়েও বেঁচে যান বাঁ-হাতি ওপেনার। ১৬.২ ওভারে মাতিউল্লার লো ফুলটসে ক্যাচ দেন ইমন। ফিল্ডার ক্যাচ ধরার পর রিপ্লাইয়ে দেখা যায় বোলিং মার্ক টপকে গেছে তার স্টেপ। আম্পায়ার নো বল কল করেন। জীবন পেয়ে ১৯ নম্বর ওভারের শেষ বলে মাতিউল্লাহকে শর্ট স্কয়ারলেগে ঠেলে সেঞ্চুরি করেন ইমন। দলের রান তখন ৬ উইকেটে ১৮৫। ওভারের পরের ৫ বলে মাত্র ৬ রান যোগ করে টাইগাররা।
শারজাহতে আমিরাতের বিপক্ষে এই প্রথম খেলল বাংলাদেশ। আগের তিন টি-২০ ম্যাচের দুটি খেলেছে দুবাইয়ে ২০২২ সালে এবং ২০১৬ সালে মিরপুরে টি-২০ এশিয়া কাপে। গতকাল প্রথম খেলল শারজাহতে। আশ্চর্যজনকভাবে সত্যি, চারটি ম্যাচেই টস হেরেছে বাংলাদেশ। দুই দল এবার দ্বিতীয়বার টি-২০ সিরিজ খেলছে। সিরিজের প্রথম ম্যাচে একাদশে সুযোগ হয়নি টেস্ট অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্তর। দলের সঙ্গে গতকাল সকালে যোগ দেন রিশাদ হোসেন, নাহিদ রানা ও নাসুম আহমেদ। ইমিগ্রেশনজনিত কারণে নাহিদ ও রিশাদ দলের সঙ্গে যোগ দেন তিন দিন পর। তাদের সঙ্গেই যোগ দেন বাঁ-হাতি স্পিনার নাসুম। ম্যাচটি খেলে দিল্লি ক্যাপিটালসে খেলতে শারজাহ ছাড়বেন মুস্তাফিজুর রহমান। শারজাহ ছাড়ার আগে দারুণ বোলিং করেছেন বাঁ-হাতি এই পেসার। তার স্পেল ৪-০-১৭-২।
টার্গেট ১৯২ রান। এর আগে টাইগারদের বিপক্ষে জয় না পাওয়া আমিরাতের ব্যাটাররা শুরু থেকেই আক্রমণাত্মক ব্যাটিং করতে থাকেন। ১৬৪ রানের বেশি করতে পারেননি স্বাগতিকরা। হেরে যায় ২৭ রানে। আগের তিন ম্যাচে বাংলাদেশ জিতেছিল ৫১, ৭ ও ৩২ রানে।