ফেব্রুয়ারির পরিবর্তে ডিসেম্বরে অমর একুশে বইমেলা আয়োজন নিয়ে অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে। জাতীয় নির্বাচনের পর বইমেলা আয়োজনের প্রস্তাব দিয়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। তাই এখন নতুন দিনক্ষণ নিয়ে ভাবছে বইমেলার আয়োজক বাংলা একাডেমি। সূত্র জানান, বাংলা একাডেমি মনে করে নির্বাচনের পড়ে মেলা করার সুযোগ থাকবে না। কারণ নির্বাচনের পর রমজান ও ঈদ চলে আসবে। মার্চ থেকে ঝড়বৃষ্টি শুরু হবে। বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক অধ্যাপক মোহাম্মদ আজম বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, আমরা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে আলোচনা করব। এরপর এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত জানাব। এর আগে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উপপ্রধান তথ্য কর্মকর্তা ফয়সল হাসান গতকাল সংবাদ মাধ্যমে জানিয়েছেন, নির্বাচনের পর বইমেলা আয়োজনের ব্যাপারে আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত সভায় আলোচনা হয়েছে। সেটি সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়কে জানানো হয়েছে। এখন সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় কিংবা মেলার আয়োজক প্রতিষ্ঠান এ ব্যাপারে বলতে পারবে।
এদিকে বইমেলার নতুন সময় নিয়ে প্রকাশকদের মধ্যেও মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে। সৃজনশীল প্রকাশক সমিতির প্রকাশকরা ডিসেম্বরে বইমেলা আয়োজন নিয়ে দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে পড়েছেন। প্রতিভা প্রকাশের স্বত্বাধিকারী কবি ও লেখক মঈন মুরসালিন বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ডিসেম্বরে বইমেলা ঘোষণার আগে আমরা প্রকাশকরা তিনটি প্রস্তাব দিয়েছিলাম বাংলা একাডেমিকে। প্রথম প্রস্তাবটি গ্রহণ করা হয়, ফলে ১৭ ডিসেম্বর থেকে ১৫ জানয়ারির মধ্যে বইমেলা আয়োজনের সিদ্ধান্ত হয়। অনেক প্রকাশকই এর বিরোধিতা করছেন।
অন্যদিকে জাতীয় নির্বাচনের পরই মেলা আয়োজনের পক্ষে অনেক প্রকাশক। প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান কলি প্রকাশনীর স্বত্বাধিকারী এস এম মহির উদ্দিন কলি বলেন, প্রকাশকের পাশাপাশি একজন নাগরিক হিসেবেও আমি মনে করি জাতীয় নির্বাচনের পরই একুশে বইমেলার আয়োজন সঠিক সিদ্ধান্ত হবে। সুষ্ঠুভাবে জাতীয় নির্বাচন হওয়া যেমন চ্যালেঞ্জিং বিষয়, তেমনি বর্তমান প্রেক্ষাপটে জাতীয়ভাবে অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ। দূষ্কৃতকারীরা ডিসেম্বরে বইমেলাকে কেন্দ্র করে কোনো সহিংসতা করলে বা নিরাপত্তাজনিত ব্যাঘাত ঘটলে তা জাতীয় নির্বচনের ওপর প্রভাব পড়বে। উল্লেখ্য, এর আগে ১৯৮৩ সালে এরশাদের সময় স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনের কারণে একবার বইমেলা বন্ধ হয়েছিল। এ ছাড়া বইমেলা বন্ধ থাকার নজির নেই। তবে করোনা মহামারির সময় ২০২১, ২০২২, ২০২৩ সালে বইমেলার সময় পরিবর্তন করে মার্চ মাসে নেওয়া হয়েছিল।