প্যারামিলিটারি বাহিনী র্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেসের (আরএসএফ) কাছ থেকে খার্তুম আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর পুনর্দখল করেছে সুদানের সেনাবাহিনী। সেনারা এটি সম্পূর্ণ সুরক্ষিত করেছে বলে সামরিক সূত্রে জানা গেছে। এটি সেনাবাহিনী ও প্রতিদ্বন্দ্বী আরএসএফের মধ্যে দুই বছর ধরে চলা সংঘাতের একটি গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি। সংবাদমাধ্যম আলজাজিরা এ খবর জানিয়েছে।
গতকাল সেনাবাহিনী রাজধানী খার্তুমে বিমানবন্দর-সংলগ্ন এলাকাগুলোও ঘিরে ফেলে। এক সামরিক সূত্র এএফপিকে জানায়, সেনারা খার্তুমের কেন্দ্রের দক্ষিণে কৌশলগত জাবাল আওলিয়া এলাকাকে ঘিরে ফেলেছে, যা ওই অঞ্চলে আরএসএফের শেষ বড় ঘাঁটি ছিল। সূত্রটি নাম প্রকাশ না করার শর্তে কথা বলেছে, কারণ তার মিডিয়াকে ব্রিফ করার অনুমতি নেই। সেনাবাহিনী ম্যানশিয়া ব্রিজের উভয় পাশও সুরক্ষিত করেছে, যা খার্তুমে ব্লু নাইল নদী অতিক্রম করেছে। এর ফলে রাজধানীর ঠিক দক্ষিণে জাবাল আওলিয়া ব্রিজই এখনো আরএসএফের নিয়ন্ত্রণে থাকা ওই এলাকা থেকে বের হওয়ার একমাত্র পথ। ২০২৩ সালের এপ্রিল থেকে আরএসএফের বিরুদ্ধে যুদ্ধরত সেনাবাহিনী গত সপ্তাহে খার্তুমের মধ্যাঞ্চল থেকে প্যারামিলিটারি বাহিনীকে হটানোর অভিযান শুরু করে। এর আগে শুক্রবার প্রেসিডেন্ট প্রাসাদ পুনর্দখল করে বড় একটি বিজয় অর্জন করে। যুদ্ধ শুরুর পর থেকে আরএসএফ যোদ্ধারা বিমানবন্দরের ভিতরে অবস্থান করছিল, যা খার্তুমের সরকারি ও বাণিজ্যিক জেলার ঠিক পূর্বে অবস্থিত। সর্বশেষ খবর অনুযায়ী, শহরজুড়ে আরএসএফ যোদ্ধারা তাদের পূর্বে নিয়ন্ত্রিত এলাকা থেকে দক্ষিণ দিকে সরে যাচ্ছে, সম্ভবত জাবাল আওলিয়ার দিকে। স্থানীয়রা বলছেন, আরএসএফ মূলত দক্ষিণ খার্তুমে তাদের সেনা মোতায়েন করেছিল, যাতে প্রতিবেশী শহর ওমদুরমানের দিকে সেতু পেরিয়ে রাজধানী থেকে নিরাপদে সরে যায়। আলজাজিরার সংবাদদাতা হিবা মরগান বুধবার খার্তুম থেকে জানান, গত কয়েক ঘণ্টায় সুদানের সশস্ত্র বাহিনীর অর্জন বেশ উল্লেখযোগ্য।
তিনি বলেন, সংঘাতের প্রথম দিনগুলোতেই আরএসএফ বিমানবন্দরের নিয়ন্ত্রণ নেয় এবং এটি দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে যায়। একাংশ সরকারের নিয়ন্ত্রণে, অন্যদিক আরএসএফের হাতে। গত কয়েক ঘণ্টায় সেনাবাহিনীর অগ্রগতির ফলে তারা বিমানবন্দরের পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ ফিরে পেয়েছে, যার মধ্যে বেসামরিক অংশও অন্তর্ভুক্ত। তারা বিমানবন্দর-সংলগ্ন বেশকিছু আবাসিক এলাকাও দখল করতে সক্ষম হয়েছে। মরগান আরও বলেছেন, আরএসএফ বিশেষ প্রতিরোধ গড়ে তুলতে পারেনি বলে মনে হচ্ছে। প্রায় দুই বছরের যুদ্ধে হাজার হাজার মানুষ প্রাণ হারিয়েছে। ১ কোটিরও বেশি মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে এবং বিশ্বের সবচেয়ে বড় খাদ্য সংকট ও বাস্তুচ্যুতি হয়েছে।