কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) ব্যবহার করে দ্রুততম সময়ে স্তন ক্যানসার শনাক্তে অভিনব প্রযুক্তি চালু করেছেন সৌদি আরবের চিকিৎসক সেলওয়া আল-হাজ্জা। তার স্টার্টআপ এসডিএম তৈরি করেছে ‘সামিয়া’ (এসএএমআইএ–সৌদি অটোমেটেড ম্যামোগ্রাম ইমেজ অ্যানালাইসিস) নামের এআইভিত্তিক সিস্টেম, যা মাত্র কয়েক মিনিটে স্তন ক্যানসার শনাক্ত করতে সক্ষম।
ডা. আল-হাজ্জা বলেন, “অক্টোবর মাস স্তন ক্যানসার সচেতনতার মাস হওয়ায় আমরা এই সময়টিতেই সামিয়া চালু করেছি।”
এসডিএম হলো কিং আবদুলআজিজ সিটি ফর সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজির দ্য গ্যারেজ ইনকিউবেটেড প্রথম হেলথ-টেক স্টার্টআপ, যা আগে ডায়াবেটিক রেটিনোপ্যাথি শনাক্তকরণে কাজ করেছে। এখন তারা স্তন ক্যানসারকেও প্রাথমিক পর্যায়ে শনাক্তের অন্তর্ভুক্ত করেছে।
তিনি জানান, সাধারণত ম্যামোগ্রামের রিপোর্ট পেতে রোগীদের ১–২ দিন থেকে সপ্তাহখানেক পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হয়। কিন্তু ‘সামিয়া’ ব্যবস্থায় ছবিটি সঙ্গে সঙ্গে ক্লাউডে পাঠানো হয় এবং এক মিনিটেরও কম সময়ে ফলাফল ফিরে আসে, যেখানে সম্ভাব্য ক্যানসারযুক্ত অংশ চিহ্নিত ও শ্রেণিবিন্যস্ত থাকে।
কিং আবদুলআজিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিসিন অনুষদের সহকারী অধ্যাপক ডা. ওমর ইস্কান্দারানি বলেন, “ক্যানসার চিকিৎসায় এআই ব্যবহার চিকিৎসার পরিকল্পনা, নির্ভুলতা ও দক্ষতা বাড়িয়ে তুলছে। এটি উন্নত চিকিৎসার মান দেশে নিশ্চিত করতে পারে এমনকি স্বল্প-খরচে।”
তিনি আরও জানান, “প্রাথমিক পর্যায়ে শনাক্ত করা গেলে স্তন ক্যানসার চিকিৎসার ব্যয় ২০–৩০ শতাংশ পর্যন্ত কমানো যায় এবং বেঁচে থাকার হার ৯৫ শতাংশ পর্যন্ত বাড়ে।”
সৌদি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্যমতে, দেশটিতে ৫০ শতাংশের বেশি স্তন ক্যানসার রোগী দেরিতে শনাক্ত হন, যা মৃত্যুহার ও চিকিৎসা ব্যয় উভয়ই বাড়ায়।
ড. আল-হাজ্জা বলেন, “সামিয়ার বিশেষত্ব হলো এটি স্থানীয়ভাবে উন্নত প্রযুক্তি ২৫ হাজার সৌদি নারীর ম্যামোগ্রাম ডেটা দিয়ে প্রশিক্ষিত, ফলে এর সংবেদনশীলতা ও নির্ভুলতা অন্য বিদেশি প্রযুক্তির তুলনায় বেশি।”
তার মতে, “এআই চিকিৎসকদের বিকল্প নয়, বরং সহায়ক। এটি চিকিৎসকদের কাজের চাপ কমিয়ে সময় ও অর্থ-উভয়ই সাশ্রয় করবে।” সূত্র: আরব নিউজ
বিডি প্রতিদিন/একেএ