ইস্তাম্বুলে আফগানিস্তান ও পাকিস্তানের মধ্যে সম্পর্ক স্বাভাবিক করার আলোচনার মধ্যেই সীমান্তে ভয়াবহ সংঘর্ষের খবর পাওয়া গেছে। পাকিস্তান সেনাবাহিনীর দাবি, গত শুক্রবার ও শনিবার আফগান সীমান্ত পেরিয়ে আসা সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের সঙ্গে সংঘর্ষে পাঁচ সেনাসদস্য ও ২৫ সন্ত্রাসী নিহত হয়েছে।
রবিবার (২৬ অক্টোবর) পাকিস্তান সেনাবাহিনীর জনসংযোগ শাখা আইএসপিআর-এর বিবৃতির বরাতে বার্তা সংস্থা রয়টার্স এ তথ্য জানিয়েছে। বিবৃতিতে বলা হয়, আফগানিস্তান থেকে সশস্ত্র ব্যক্তিরা খুররম ও উত্তর ওয়াজিরিস্তান এলাকায় প্রবেশের চেষ্টা করেছিল। পাহাড়ি ও দুর্গম এই দুই জেলায় সংঘর্ষ হয়।
সেনাবাহিনীর বিবৃতিতে আরও বলা হয়, সীমান্ত অতিক্রমের এই চেষ্টা প্রমাণ করে যে আফগান সরকারের সন্ত্রাস দমনের অবস্থান নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যায়।
এ ঘটনায় আফগানিস্তানের পক্ষ থেকে এখনো কোনো আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। রয়টার্স জানিয়েছে, বিষয়টি নিয়ে তালেবান সরকারের মুখপাত্র ও প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলেও তারা মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন।
এদিকে, সংঘর্ষের সময়ই দুই দেশের প্রতিনিধিদল ইস্তাম্বুলে বসেছে দ্বিপক্ষীয় আলোচনায়, যার মূল উদ্দেশ্য সীমান্তে উত্তেজনা কমানো। চলতি মাসের শুরুতে দুই দেশের সেনাদের মধ্যে ভয়াবহ সংঘর্ষ হয়েছিল, যা ২০২১ সালে কাবুলে তালেবান ক্ষমতা গ্রহণের পর সবচেয়ে রক্তক্ষয়ী ঘটনা বলে জানা যায়।
পাকিস্তানের অভিযোগ, তালেবান সরকার সীমান্তে সন্ত্রাসীদের দমন করতে ব্যর্থ হয়েছে। এই অভিযোগ ঘিরে উভয় দেশের মধ্যে গোলাগুলি ও বিমান হামলার ঘটনা ঘটে। পরে দোহায় এক চুক্তির মাধ্যমে যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করা হয়।
তালেবান সরকার অবশ্য বরাবরই এই অভিযোগ অস্বীকার করে আসছে। বরং তারা দাবি করছে, পাকিস্তানি সামরিক অভিযান তাদের সার্বভৌমত্বের লঙ্ঘন।
পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা আসিফ বলেছেন, এখন পর্যন্ত যুদ্ধবিরতি টিকে আছে এবং তিনি বিশ্বাস করেন আফগানিস্তানও শান্তি চায়। তবে তিনি সতর্ক করে বলেন, “ইস্তাম্বুলে যদি সমঝোতা না হয়, তবে সংঘাত অনিবার্য।”
পাকিস্তান সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে আরও জানানো হয়েছে, সীমান্ত অতিক্রমের চেষ্টা করা সন্ত্রাসীরা ‘ফিতনা আল খারিজ’ নামের একটি সংগঠনের সদস্য। এই গোষ্ঠী বিদেশি পৃষ্ঠপোষকতায় পরিচালিত এবং উগ্রবাদী মতাদর্শে অনুপ্রাণিত বলে দাবি করা হয়েছে।
সূত্র: রয়টার্স, আরব নিউজ
বিডি প্রতিদিন/আশিক