ঘটনাটি ঘটেছে ভারতের বিহার রাজ্যে। সেখানে বর্ষার সময়ে প্রায়ই সাপের কামড়ে শিশুর মৃত্যুর ঘটনা ঘটে। তবে এবার শিশুর কামড়ে মৃত্যু হয়েছে সাপের, তাও আবার গোখরা সাপ। বিহারের ওই অঞ্চলে কোবরা বা গোখরা সাপকে স্থানীয় ভাবে গেহুঁওন সাপ বলা হয়।
ঘটনার সময় শিশুটির মা ঘরের পিছন দিকে কাজ করছিল। মাটির চুলার জন্য কাঠগুলো গুছিয়ে রাখছিলেন তিনি। এক বছর বয়সী গোবিন্দ মায়ের পাশেই খেলছিল। তখনই সাপটা বেরিয়ে আসে। সাপটাকে দেখেই গোবিন্দ সেটাকে ধরে এক কামড় বসিয়ে দেয়। তখনই সবাই খেয়াল করে, এটা আসলে গেহুঁওন সাপ। কথাগুলো বিবিসিকে বলছিলেন শিশুটির মা মতিসারি দেবী।
ভারতের বিহারের পশ্চিম চম্পারন জেলার এক ছোট গ্রাম মোহছি বনকাটোয়ার বাসিন্দা গোবিন্দর পরিবার। তার বাবা সুনীল সাহ গ্রামে ঘুরে ঘুরে আইসক্রিম বিক্রি করেন। মতিসারি দেবী বলেন, দাঁত দিয়ে সাপটাকে কামড় দেওয়ার পর কিছুক্ষণের জন্য অজ্ঞান হয়ে গিয়েছিল গোবিন্দ। ওকে আমরা প্রথমে গ্রামের স্বাস্থ্য কেন্দ্রে নিয়ে গিয়েছিলাম। সেখান থেকে ওকে বেতিয়া হাসপাতালে নিয়ে যাই। এখন বাচ্চা সুস্থ আছে।
স্থানীয় সাংবাদিক নেয়াজ বলেন, শিশুটি বাড়ি ফিরে এসেছে। ওকে নিয়ে সবাই খুব আলোচনা করছে। শ্রাবণ মাসে সাপ বের হবে এটা খুবই স্বাভাবিক ব্যাপার। কিন্তু এরকম ঘটনা আমাদের এলাকায় প্রথম হল।
এক বছরের শিশু গোবিন্দকে চিকিৎসা করেছিলেন শিশু রোগ বিভাগের ডা. কুমার সৌরভ। তিনি বলেন, শিশুটিকে যখন ভর্তি করার জন্য আনা হয়েছিল, তখন ওর চেহারা একটু ফুলে গিয়েছিল। মুখের আশপাশটা ফোলা ছিল। বাড়ির লোক আমাদের জানায়, সাপের মুখের পাশে কামড় দিয়েছিল শিশুটি আর সাপের দেহের কিছুটা বোধহয় খেয়েও ফেলেছিল।
তিনি আরো বলেন, কোবরা সাপ যখন মানুষকে ছোবল মারে তখন তার বিষ আমাদের রক্তে চলে যায়। রক্তে বিষ মিশে যাওয়ার ফলে নিউরোটক্সিসিটি হয়, আমাদের স্নায়ুতন্ত্রে প্রভাব ফেলে। এর থেকে মৃত্যুও হতে পারে। আবার যখন কোনো মানুষ কোবরা সাপকে কামড়িয়ে দেয়, তখন মুখ দিয়ে ওই বিষ আমাদের পাচনতন্ত্রে চলে যায়। মানবদেহ ওই বিষকে নিষ্ক্রিয় করে দেয়। অর্থাৎ সাপের বিষ দুভাবে কাজ করে। এক হল বিষ আমাদের স্নায়ুতন্ত্রে প্রভাব ফেলে অন্যটি হল মানব শরীর বিষটি নিষ্ক্রিয় করে দেয়।
কিন্তু কোনো মানুষ যদি সাপকে কামড়ে দেয় আর সেই ব্যক্তির খাদ্যনালীতে কোনো আলসার বা অন্য ক্ষতস্থান থাকে যা থেকে রক্তক্ষরণ হচ্ছে, সেক্ষেত্রে রোগীর অবস্থা সংকটাপন্ন হতে পারে। সূত্র : বিবিসি বাংলা।
বিডি-প্রতিদিন/শআ