তাইওয়ান সম্ভাব্য চীনা আগ্রাসনের প্রস্তুতি হিসেবে তাদের ইতিহাসের সবচেয়ে বড় সামরিক মহড়া শুরু করেছে । ১০ দিনব্যাপী এই মহড়ার নাম ‘হান কুয়াং। মহড়ায় যুদ্ধাবস্থা অনুকরণ করে সেনা, নৌ ও বিমানবাহিনীসহ রিজার্ভ সেনাদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে ।
মঙ্গলবার চীন ‘তাইওয়ানের সঙ্গে ‘একত্রীকরণ অনিবার্য’ হুঁশিয়ারি দেওয়ার পরদিনই বুধবার থেকে মহড়াটি শুরু হয়। চীনের এমন ঘোষণার মধ্যেই তাইওয়ান এ মহড়ার মাধ্যমে নিজের প্রতিরক্ষা সক্ষমতা যাচাই করছে।
মহড়ার শুরুতে তাইওয়ানের কমান্ড ও যোগাযোগ ব্যবস্থায় হামলার প্রতিরোধে প্রস্তুতির ওপর গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। সেনাবাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, হামলার শিকার হলে কীভাবে বিকেন্দ্রীভূতভাবে নেতৃত্ব ও প্রতিরক্ষা পরিচালনা করা যায়, মহড়ায় তা অনুশীলন করা হচ্ছে।
এবারের মহড়ায় ২২ হাজার রিজার্ভ সেনা অংশ নিচ্ছেন। এর মধ্যে প্রায় ৩০০ জনকে তাইওয়ানের তাওইয়ান শহরের একটি স্কুলে প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে।
প্রথম ধাপে প্রশান্ত মহাসাগরের উপকূলবর্তী দ্বীপগুলোর আশপাশে চীনা জাহাজের আগ্রাসন মোকাবিলার অনুশীলন হয়েছে। এরপর অনুকরণভিত্তিক ‘অ্যান্টি-ল্যান্ডিং’ অনুশীলনের মাধ্যমে সম্ভাব্য চীনা হামলার সময় বন্দর ও উপকূলীয় এলাকায় প্রতিরক্ষার অনুশীলন চলছে।
এ মহড়ায় নতুন অস্ত্রও ব্যবহৃত হচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্রের তৈরি হাই মোবিলিটি আর্টিলারি রকেট সিস্টেম (HIMARS) ও স্থানীয়ভাবে তৈরি স্কাই সোর্ড ক্ষেপণাস্ত্র প্রথমবারের মতো মহড়ায় যুক্ত করা হয়েছে।
তাইওয়ানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, মহড়ার একদিন আগে চীন তাইওয়ানের আকাশ ও জলসীমায় তৎপরতা বাড়িয়ে মহড়ায় বিঘ্ন ঘটাতে চেয়েছিল। তবে উপযুক্ত জবাব দিতে তাইওয়ান নজরদারি বিমান, যুদ্ধজাহাজ ও স্থলভিত্তিক ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থা মোতায়েন করে।
চীন তাইওয়ানকে নিজেদের অঞ্চল মনে করে এবং বলপ্রয়োগে অধিগ্রহণের হুমকি দিয়ে আসছে। তাইওয়ান অবশ্য চীনের এই দাবিকে প্রত্যাখ্যান করেছে এবং বলেছে, দ্বীপটির ভবিষ্যৎ নির্ধারণের অধিকার তাইওয়ানের জনগণেরই।
চীনের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র জিয়াং বিং বলেছেন, এই মহড়া শুধুই একটি ভাঁওতা, যা গণতান্ত্রিক প্রগতিশীল দলের (তাইওয়ানের শাসক দল) স্বার্থরক্ষায় পরিচালিত।
বিডিপ্রতিদিন/কবিরুল