গাজায় যুদ্ধবিরতি নিয়ে মিসরীয় মধ্যস্থতাকারীদের সাথে আলোচনার জন্য হামাসের একটি প্রতিনিধিদল কায়রোতে পৌঁছেছেন।
শনিবার ফরাসি গণমাধ্যম এএফপি’কে এ তথ্য জানিয়েছেন ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী হামাস যোদ্ধার এক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা।
শুক্রবার হামাসের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা তাহের আল-নুনু বলেছেন, ‘খলিল আল-হাইয়ার নেতৃত্বে হামাসের আলোচক প্রতিনিধিদল কায়রোর উদ্দেশ্যে রওনা হয়েছেন’।
তিনি বলেন, যুদ্ধের অবসানের জন্য হামাসের দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে আলোচনা করার জন্য এটি মিসরীয় কর্মকর্তাদের সাথে আলোচনা করবে।
গাজা উপত্যকায় আটক জিম্মিদের মুক্তি নিশ্চিত করার জন্য ইসরায়েলের সর্বশেষ প্রস্তাব হামাস এই মাসে প্রত্যাখ্যান করার পর এই পুনর্নবীকরণ প্রস্তাবটি আনা হলো।
হামাস বলেছে, তারা ‘আংশিক’ যুদ্ধবিরতি চুক্তি মেনে নেবে না। ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলের ওপর হামাসের হামলার ফলে শুরু হওয়া যুদ্ধ বন্ধ করার জন্য একটি ‘ব্যাপক’ চুক্তির আহ্বান জানিয়েছে।
দুই মাসের যুদ্ধবিরতি ভেঙে যাওয়ার পর, গত ১৮ মার্চ ইসরায়েল তাদের বিমান ও স্থল হামলা পুনরায় শুরু করার পর থেকে আলোচনায় কোনো অগ্রগতি হয়নি।
গত মঙ্গলবার হামাসের একজন কর্মকর্তা বলেছেন, যুদ্ধবিরতি নিয়ে ‘নতুন ধারণা’ নিয়ে আলোচনা করার জন্য একটি প্রতিনিধিদল মিসরীয় কর্মকর্তাদের সাথে দেখা করবেন।
শুক্রবারের ঘোষণাটি এমন এক সময় এলো যখন জাতিসংঘের বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি জানিয়েছে, গাজায় তাদের খাদ্য মজুদ শেষ হয়ে গেছে।
কাতার, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং মিসরের মধ্যস্থতায় গত ১৯ জানুয়ারি থেকে শুরু হওয়া একটি যুদ্ধবিরতি চুক্তির ফলে ইসরায়েলি হেফাজতে থাকা জিম্মি এবং ফিলিস্তিনি বন্দীদের বিনিময়ের পাশাপাশি সাহায্যের পরিমাণ বৃদ্ধি পায়। কিন্তু পরবর্তী পর্যায়ের শর্তাবলী নিয়ে মতবিরোধের কারণে এটি ভেঙে যায়।
হামাস জোর দিয়ে বলেছে, যুদ্ধের স্থায়ী অবসানের জন্য আলোচনা করা উচিত। যেমনটি সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের ঘোষিত জানুয়ারির কাঠামোতে বর্ণিত ছিল। তবে ইসরায়েল প্রথম পর্যায়ের মেয়াদ বাড়ানোর চেষ্টা করেছিল।
ইসরায়েল তাদের আক্রমণ পুনরায় শুরু করার পর থেকে গাজায় কমপক্ষে ২ হাজার ৬২ জন নিহত হয়েছেন।
হামাস-নিয়ন্ত্রিত গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী জানা গেছে, যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে মোট মৃতের সংখ্যা কমপক্ষে ৫১ হাজার ৪৩৯ জনে পৌঁছেছে।
ইসরায়েলি সরকারি পরিসংখ্যানের ওপর ভিত্তি করে এএফপির হিসাব অনুযায়ী জানা গেছে, ২০২৩ সালে ইসরায়েলের ওপর হামাসের হামলায় ১২১৮ জন নিহত হন, যাদের বেশিরভাগই বেসামরিক নাগরিক।
হামাস ২৫১ জনকে অপহরণ করেছে, যাদের মধ্যে ৫৮ জন এখনও গাজায় আটক রয়েছে, যার মধ্যে ৩৪ জন ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর মতে মৃত।
সূত্র : এএফপি।
বিডি-প্রতিদিন/বাজিত