পোপ ফ্রান্সিসের অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ায় যোগ দিতে ইতালির রোমে এসে মুখোমুখি হলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। শনিবার অনুষ্ঠিত এই অনুষ্ঠানে দুই নেতার মধ্যে সংক্ষিপ্ত সাক্ষাৎ হয় বলে জানায় ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট কার্যালয়।
এটি ছিল ফেব্রুয়ারিতে হোয়াইট হাউজে হওয়া তিক্ত বাকবিতণ্ডার পর তাদের প্রথম সরাসরি সাক্ষাৎ। ওই সময় ট্রাম্প ও ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্স, জেলেনস্কিকে ‘অকৃতজ্ঞ’ বলে তিরস্কার করেছিলেন।
এদিকে, পোপের অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ায় অংশ নেওয়ার আগে ট্রাম্প বলেন, রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে একটি শান্তিচুক্তি সই হওয়ার খুব কাছাকাছি অবস্থা তৈরি হয়েছে। ট্রাম্পের বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফের মস্কো সফর এবং রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে আলোচনার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই তিনি এ মন্তব্য করেন।
ট্রাম্প জানান, বেশিরভাগ গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে দুই পক্ষের মধ্যে একমত হওয়া গেছে। রাশিয়া ও ইউক্রেনকে দ্রুত ‘উচ্চপর্যায়ের’ বৈঠক করে চুক্তি সম্পন্ন করতে তিনি উৎসাহিত করছেন। তবে মস্কো ও যুক্তরাষ্ট্রের আলোচনায় ইউক্রেনের কোনো প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন না।
ক্রেমলিনও এই আলোচনা ‘গঠনমূলক’ বলে আখ্যায়িত করেছে। পুতিনের ঘনিষ্ঠ সহযোগী উষাকভ বলেন, ইউক্রেন সংকট সমাধানে সরাসরি রুশ-ইউক্রেনীয় বৈঠক ফের শুরু হওয়ার সম্ভাবনা নিয়ে আলাপ হয়েছে।
যুদ্ধবিরতির দাবি জেলেনস্কির
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি এক ভিডিও বার্তায় বলেন, রাশিয়ার ওপর নিঃশর্তভাবে যুদ্ধবিরতি মেনে নেওয়ার জন্য আন্তর্জাতিক চাপ বাড়াতে হবে। বিবিসিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি আরও বলেন, পূর্ণাঙ্গ ও নিঃশর্ত যুদ্ধবিরতি হলে ভূখণ্ড বিষয়ক আলোচনায় বসা যেতে পারে।
বিশ্লেষকদের ধারণা, যুক্তরাষ্ট্রের দেওয়া শান্তি প্রস্তাব বাস্তবায়িত হলে রাশিয়া দখল করা ইউক্রেনের বড় একটি অংশ ছেড়ে দিতে পারে। তবে ক্রিমিয়া প্রসঙ্গে ট্রাম্পের মন্তব্য নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়েছে। ট্রাম্প বলেছেন, ক্রিমিয়ার ওপর রাশিয়ার নিয়ন্ত্রণে তার সমর্থন রয়েছে। জেলেনস্কি অবশ্য এই বক্তব্য সরাসরি নাকচ করেছেন।
২০১৪ সালে মস্কো ইউক্রেনের ক্রিমিয়া অঞ্চল দখল করে নেয়। বর্তমানে ইউক্রেনের প্রায় ২০ শতাংশ ভূখণ্ড রুশ নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।
তিন বছরের বেশি সময় ধরে চলা রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধের লক্ষ্যে এবার চতুর্থবারের মতো মস্কো সফর করলেন ট্রাম্পের দূত স্টিভ উইটকফ। তার সঙ্গে প্রায় তিন ঘণ্টাব্যাপী বৈঠকে রুশ পক্ষ আশাবাদী মনোভাব প্রকাশ করেছে। এখন বিশ্ব অপেক্ষা করছে—এই আলোচনার ফল কী হয় এবং রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের কোনো শান্তিপূর্ণ সমাধান আসতে পারে কি না।
বিডিপ্রতিদিন/কবিরুল