যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে চলমান বাণিজ্য উত্তেজনা ও অভ্যন্তরীণ অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় নতুন পরিকল্পনার ঘোষণা করেছে চীন।
শুক্রবার চীনের পলিট ব্যুরোর এক উচ্চপর্যায়ের বৈঠকে এই পরিকল্পনার বিস্তারিত তুলে ধরা হয়।
সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২৫ সালে চীনা অর্থনীতিতে ইতিবাচক প্রবণতা দেখা গেলেও বাহ্যিক ধাক্কার প্রভাব বেড়েছে। বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, নিচের স্তরের ঝুঁকির বিষয়গুলো বিবেচনায় রেখে জরুরি পরিকল্পনা তৈরি ও অর্থনৈতিক কাজকর্মে স্থিরতা বজায় রাখতে হবে।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের আরোপিত বৈশ্বিক শুল্কের প্রতি ইঙ্গিত করে বিবৃতিতে বলা হয়েছে, চীন বহুপাক্ষিকতাকে সমর্থন করে এবং একতরফা চাপ ও কার্যকলাপের বিরোধিতা করে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সঙ্গে একযোগে কাজ করবে।
শুক্রবারের বৈঠকে অভ্যন্তরীণ অর্থনীতি চাঙ্গা করার জন্য একাধিক পদক্ষেপের কথা জানানো হয়। এর মধ্যে রয়েছে—বেকার ভাতা বৃদ্ধি, নিম্ন ও মধ্যম আয়ের মানুষদের আয় বাড়ানো, সেবা খাতের উন্নয়ন, ভোগব্যয় বৃদ্ধি ও বিদেশি ও অভ্যন্তরীণ বাণিজ্যের সংযুক্তি ত্বরান্বিত করা।
এছাড়াও দ্রুত নতুন আবাসন মডেল গড়ে তোলা, শহর পুনর্নির্মাণ প্রকল্প জোরদার করা এবং ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও নাগরিকদের জন্য আর্থিক সহায়তা বাড়ানোর ওপর জোর দেওয়া হয়েছে।
চীন কিছু মার্কিন পণ্যের ওপর থেকে ১২৫ শতাংশ আমদানি শুল্ক প্রত্যাহারের পরিকল্পনা করছে— এমন এক গুঞ্জনের মধ্যেই অনুষ্ঠিত হয়েছে এই বৈঠক। প্রতিবেদনে বলা হয়, চিকিৎসা সরঞ্জাম, সেমিকন্ডাক্টর এবং কিছু শিল্প রাসায়নিক (যেমন ইথেন) এই তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হতে পারে।
শুক্রবার আমেরিকান চেম্বার অব কমার্স ইন চায়নার প্রধান মাইকেল হার্ট জানান, চীনা কর্তৃপক্ষ মার্কিন পণ্য আমদানিকারকদের কাছ থেকে তথ্য নিচ্ছে— যেসব পণ্য তারা অন্য কোনও উৎস থেকে পাচ্ছে না।
তিনি বলেন, উভয় পক্ষই শুল্ক পর্যালোচনা করছে এবং ছাড়প্রাপ্ত পণ্যের তালিকা তৈরিতে অগ্রসর হচ্ছে— এটা ইতিবাচক পদক্ষেপ।
ট্রাম্প দাবি করেছেন, চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং তাকে ফোন করেছেন শুল্ক নিয়ে আলোচনা করতে। তবে চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় একে অস্বীকার করে বলেছে, এ ধরনের কোনও কথোপকথন হয়নি।
শুক্রবার ট্রাম্প হোয়াইট হাউসে সাংবাদিকদের বলেন, “আমরা চীনের সঙ্গে কথা বলছি। আজ সকালে বৈঠক হয়েছে। তবে তিনি কারা বৈঠকে ছিলেন তা জানাননি।”
চীনের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র হে ইয়াডং বৃহস্পতিবার বলেছিলেন, চীন ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে বর্তমানে কোনও অর্থনৈতিক বা বাণিজ্যিক আলোচনা হচ্ছে না।
অ্যাটলান্টিক কাউন্সিলের গ্লোবাল চায়না হাবের গবেষক ওয়েন-টি সুং বলেন, এই সিদ্ধান্তগুলো ইঙ্গিত দেয় যে, বেইজিং বৈশ্বিক অর্থনৈতিক পরিবেশকে প্রতিকূল হিসেবে দেখছে এবং দীর্ঘমেয়াদি বাণিজ্য সংঘাতের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছে। সূত্র: দ্য গার্ডিয়ান, ব্লুমবার্গ
বিডি প্রতিদিন/একেএ