রাজধানীসহ সারা দেশে গতকাল সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থানে ছিল আইন প্রয়োগকারী সংস্থা। অনাকাক্সিক্ষত পরিস্থিতি এড়াতে সেনাবাহিনীসহ বিভিন্ন বাহিনীর সহায়তায় নেওয়া হয় কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থা। এর অংশ হিসেবে রাজধানীতে গতকাল বসানো হয় বিশেষ নিরাপত্তা চৌকি। বৃহস্পতিবার রাত থেকেই নগরীর প্রধান সড়ক থেকে অলিগলিতে সক্রিয় ছিল বিশেষ মোটরসাইকেল প্যাট্রোল। প্রস্তুত ছিল পুলিশের রায়ট কারসহ বিশেষ সরঞ্জাম। কূটনৈতিক এলাকা ঘিরে ছিল আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোর বিশেষ দৃষ্টি।
ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) মুখপাত্র উপ-কমিশনার তালেবুর রহমান বলেন, সামগ্রিক পরিস্থিতি মোকাবিলার প্রস্তুতি হিসেবে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। গতকাল সকাল থেকে জাতীয় মসজিদের সামনের এলাকায় সেনাবাহিনী, পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী মোতায়েন করা হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে জলকামান, এপিসি মোতায়েন ছিল আশপাশের এলাকায়। পল্টনে, তোপখানা রোডের আশপাশের বিভিন্ন মোড়ে যৌথ বাহিনীকে সতর্ক অবস্থান নিতে দেখা যায়। ফিলিস্তিনে ইসরায়েলের বর্বরতাসহ অন্যান্য দেশে মুসলিমদের ওপর হামলার প্রতিবাদে বিভিন্ন ইসলামি দল ও সংগঠন ঢাকায় বিক্ষোভের ডাক দিয়ে সড়ক অবরোধ করলে এ ব্যবস্থা নেওয়া হয়। গতকাল জুমার নামাজের পর বায়তুল মোকাররম উত্তর গেট থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের করে খেলাফত মজলিস। তারা ফিলিস্তিনে বর্বর ইসরায়েলি হামলার বিচার দাবি করে বিভিন্ন স্লোগান দেন। বায়তুল মোকাররম মসজিদের পূর্ব পাশে সমাবেশ করে হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ। এর আগে বায়তুল মোকাররম মসজিদে প্রবেশের সময় মুসল্লিদের সঙ্গে থাকা ব্যাগে তল্লাশি করেন পুলিশ সদস্যরা। নাইটিঙ্গেল মোড়ে বিজিবি সদস্যদের অবস্থান করতে দেখা গেছে। পুরানো রমনা থানার সামনে ছিল সেনাবাহিনীর বিশেষ চৌকি। ওই রাস্তা দিয়ে যানবাহনে তল্লাশি করতে দেখা গেছে তাদের। কূটনৈতিক পাড়ায় ভারতীয় দূতাবাসের সামনে ছিল সেনাসহ বিভিন্ন বাহিনীর অবস্থান। বায়তুল মোকাররমের উত্তর গেট, প্রেস ক্লাব, পল্টন, হাই কোর্ট, সার্ক ফোয়ারার সামনে সতর্কাবস্থানে থাকতে দেখা যায় যৌথ বাহিনীর সদস্যদের। কাউকে সন্দেহজনক মনে হলে তল্লাশি করতেও দেখা গেছে। জাতীয় প্রেস ক্লাব ও শাহবাগ মোড়ে ছিল পুলিশের অবস্থান। গুলশান, উত্তরা, মিরপুর, রমনা, পুরান ঢাকা ও মতিঝিলের বিভিন্ন এলাকা এবং রামপুরা টিভি স্টেশনসহ রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনার সামনে নিরাপত্তা বাহিনীর উপস্থিতি দেখা গেছে সকাল থেকেই।
বৃহস্পতিবার ডিএমপির ক্রাইম কমান্ড অ্যান্ড কন্ট্রোল সেন্টার সূত্রে জানা যায়, গত ২৪ ঘণ্টায় ডিএমপির ৫০টি থানা এলাকায় জননিরাপত্তা বিধানে দুই পালায় ডিএমপির ৬৬৭টি টহল টিম দায়িত্ব পালন করছে। এর মধ্যে রাতে ৩৪০টি ও দিনে ৩২৭টি টিম দায়িত্ব পালন করছে। টহল টিমগুলোর মধ্যে রয়েছে মোবাইল প্যাট্রোল টিম ৪৭৯টি, ফুট প্যাট্রোল টিম ৭৩টি ও হোন্ডা প্যাট্রোল টিম ১১৫টি। এ ছাড়া মহানগর এলাকার নিরাপত্তা বৃদ্ধির লক্ষ্যে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ও কৌশলগত স্থানে ডিএমপি ৭১টি পুলিশি চেকপোস্ট পরিচালনা করছে।