উত্তর মেসিডোনিয়া ও আলবেনিয়া ঘেঁষা ওরিদ লেকটির বয়স প্রায় ১০ লাখ বছর। এটাই ইউরোপের প্রাচীনতম লেক। আর সেই লেকের পানির নিচেই মিলল প্রায় ৮ হাজার বছরের পুরোনো মানববসতির সন্ধান। মানুষ নেই, রয়ে গেছে ঘরবাড়ির অবশিষ্টাংশ। শহরটি কীভাবে পানিতে তলিয়ে গেল, এর পেছনে ভূমিকম্প বা অন্য কোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগ দায়ী কি না তা অনুসন্ধানে ইতিহাস উল্টে-পাল্টে দেখছেন প্রত্নতত্ত্ববিদরা। দিন-রাত পরীক্ষা চলছে ল্যাবরেটরিতে।
খুব নিচে নয়, লেকের পানির তিন মিটার গভীরেই মিলেছে হারিয়ে যাওয়া এই প্রাচীন সভ্যতার সন্ধান। আবিষ্কারের নেশায় প্রতিদিন ঘণ্টার পর ঘণ্টা কাজ করছেন সুইজারল্যান্ড ও আলবেনিয়ার গবেষকরা। তুলে আনছেন কাঠের খুঁটি- যেগুলোর ওপর টিকে ছিল প্রাচীন মানুষের ঘরবাড়ি। মাটির পাত্র, তামার জিনিসপত্র, আর পোষা ও বন্য প্রাণীর হাড়। বেশ কিছু পাত্রে দেখা গেছে সূক্ষ্ম খোদাইয়ের নিদর্শন। প্রত্নতত্ত্ববিদরা বলছেন- এটাই ইউরোপের এখন পর্যন্ত প্রাচীনতম মানববসতির প্রমাণ।
গবেষক আলবার্ট হাফনার বলেন, এখন পর্যন্ত ইতালি ও স্পেনের কিছু অংশকে মনে করা হতো ইউরোপের সবচেয়ে প্রাচীন মানববসতির নিদর্শন। সেগুলো ছিল ৫২০০ থেকে ৫৩০০ খ্রিষ্ট-পূর্বাব্দ আগের। কিন্তু এই বসতিটি আরও অন্তত ৫০০ বছরের পুরোনো। রেডিও কার্বন ডেটিং ও গাছের বয়স নির্ধারণ করার মাধ্যমে বসতির বয়স নির্ণয় করা হয়েছে।
গবেষকদের ধারণা, এই জনগোষ্ঠীটি পৃথিবীর নানা অঞ্চলে কৃষি ও পশুপালন ছড়িয়ে দেয়। সেখানে কয়েক শ মানুষ একসঙ্গে বসবাস করত। সব মিলে ছয় হেক্টর জায়গাজুড়ে বিস্তৃত হতে পারে এই প্রাচীন নগরী। তবে গত ছয় বছরে খনন হয়েছে মাত্র এক শতাংশ। ইতোমধ্যে সহস্রাধিক কাঠের নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষা-নিরীক্ষা অব্যাহত রেখেছেন গবেষকরা। তথ্যসূত্র : রয়টার্স