যুক্তরাষ্ট্রের টেনেসি অঙ্গরাজ্যের ম্যাকইউয়েন শহরের একটি বিস্ফোরক উৎপাদন কারখানায় ভয়াবহ বিস্ফোরণ ঘটেছে। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত ১৯ জন নিখোঁজ রয়েছেন। এছাড়া, বিস্ফোরণে মাত্রা অনেক বেশি হওয়ায় বহু মানুষের হতাহতের আশঙ্কা করা হচ্ছে। নিখোঁজদের সন্ধ্যানে উদ্ধার অভিযান শুরু করেছে কর্তৃপক্ষ।
স্থানীয় সময় শুক্রবার সকালে অ্যাকুরেট এনার্জেটিক সিস্টেম নামের ওই বিস্ফোরক উৎপাদক প্রতিষ্ঠানে এই দুর্ঘটনা ঘটে। কারখানাটি টেনেসি অঙ্গরাজ্যের রাজধানী ন্যাশভিল শহর থেকে প্রায় ৫০ মাইল পশ্চিমে অবস্থিত।
মার্কিন সংবাদ মাধ্যম এবিসি নিউজ এক প্রতিবেদনে জানায়, স্থানীয় সময় শুক্রবার সকাল ৭টা ৪৮ মিনিটে এই বিস্ফোরণ ঘটে। এতে কারখানার ভবনটি সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়ে যায়। বিস্ফোরণের তীব্রতা এত বেশি ছিল যে, ১০-১১ মাইল দূরের এলাকাতেও ঘর-বাড়ি কেঁপে ওঠে।
লরেন রোয়ার্ক নামের এক নারী বাসিন্দা জানান, বিস্ফোরণের সময় তার ঘর যেন কেঁপে উঠেছিল। তিনি ভেবেছিলেন, নিজেই বুঝি কোনো বিস্ফোরণের শিকার হয়েছেন। পরে বাড়ির উঠানে গিয়ে তিনি বড় বড় ধরনের কিছু ধ্বংসাবশেষ দেখতে পান। এগুলো হয়তো ওই বিস্ফোরণ থেকেই তার উঠানে উড়ে এসেছে।
আরেক বাসিন্দা কাদি আর্নল্ড জানান, তিনি মাঝে মাঝে ওই কারখানা থেকে ছোটখাটো বিস্ফোরণের শব্দ শুনতেন। কিন্তু এই শব্দ ছিল একেবারেই ভিন্ন। এত জোরে কাঁপুনি উঠেছিল যে, তিনি ভেবেছিলেন তার নিজের ঘরেই বিস্ফোরণ হয়েছে। পরে বুঝতে পারেন, এটা ওই কারখানার ভেতরেই কোনো বড় ধরনের দুর্ঘটনা।
এদিকে, এ বিস্ফোরণের পর এক প্রেস ব্রিফিংয়ে টেনেসি অঙ্গরাজ্যের হামফ্রেস কাউন্টির শেরিফ ক্রিস ডেভিস জানান, বিস্ফোরণে ১৯ জন নিখোঁজ রয়েছেন। এছাড়া, কয়েকজন নিহত হয়েছেন। তবে কতজন নিহত হয়েছেন তা নির্দিষ্ট করে জানাননি তিনি।
শেরিফ বলেন, আমার কর্মজীবনে আমি যতগুলো পরিস্থিতির সম্মুখীন হয়েছি, এটি সম্ভবত তার মধ্যে সবচেয়ে মর্মান্তিক।
তিনি জানান, দুর্ঘটনার পর ঘটনাস্থল থেকে চার থেকে পাঁচজনকে হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। তবে হতাহতদের বিষয়ে বিস্তারিত কোনো তথ্য জানাননি তিনি।
অন্যদিকে, ওই কারখানায় বিস্ফোরণে পরপরই টেনেসির গভর্নর বিল লি জানান, তিনি বিষয়টি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছেন। পরিস্থিতির ওপর সবসময় দৃষ্টি রাখছেন বলেও জানান লি।
মার্কিন গণমাধ্যমগুলোর তথ্য অনুযায়ী, অ্যাকুরেট এনার্জেটিক সিস্টেম নামের ওই প্রতিষ্ঠান যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা দফতর, হোমল্যান্ড সিকিউরিটি, মহাকাশ ও খনি শিল্পে বিস্ফোরক সরবরাহ করে থাকে। প্রতিষ্ঠানটির ওয়েবসাইট অনুযায়ী, তারা বিভিন্ন ধরনের বিস্ফোরক ও শক্তিশালী যন্ত্রাংশ তৈরি করে।
হঠাৎ কী কারণে কারখানাটিতে বিস্ফোরণ ঘটেছে তা এখনো জানা যায়নি। সেই রহস্য উদঘাটনে মাঠে নেমেছে স্থানীয় পুলিশসহ একাধিক মার্কিন সংস্থা।
তথ্যসূত্র : এবিসি নিউজ
বিডি প্রতিদিন/কেএ