ফুটবলার নায়করাজ রাজ্জাক
কলকাতায় জন্ম নেওয়া ও বেড়ে ওঠা নায়করাজ রাজ্জাক ছোটবেলা থেকেই ভালো ফুটবল খেলতেন। একটি ফুটবল টিমের সঙ্গেও যুক্ত ছিলেন তিনি। স্কুলজীবনেও ফুটবল খেলোয়াড় হিসেবে নাম করেন খুব। ঘটনাচক্রে একবার স্কুলের নাটকে অভিনয় করতে হয় তাঁর। অনবদ্য পারফরম্যান্সের সুবাদে সবার প্রশংসা পেয়ে একসময় অভিনয়েই ঝুঁকে পড়েন তিনি। ফুটবলারের পরিবর্তে হয়ে গেলেন নামি অভিনেতা।
ডাক্তার ববিতা
মা ছিলেন প্রখ্যাত চিকিৎসক। তাই মা চাইতেন তাঁর বুদ্ধিদীপ্ত এ মেয়েটিও হবে ডাক্তার। কিন্তু ববিতার ভগ্নিপতি প্রখ্যাত চলচ্চিত্রনির্মাতা জহির রায়হান মানে বড় বোন অভিনেত্রী সুচন্দার স্বামী তাঁকে নিয়ে আসেন চলচ্চিত্রে। অভিনয় করান ‘সংসার’ ছবিতে রাজ্জাক-সুচন্দার মেয়ের চরিত্রে। তাঁর অভিনয় প্রশংসিত হলে পরের ছবি ‘শেষ পর্যন্ত’। এ ছবিতে নায়িকা তিনি। নায়িকা হিসেবেও সফল। তারপর অভিনয়েই থিতু হন ববিতা।
রাজনীতিবিদ ফারুক
ছাত্রজীবন থেকেই রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন তিনি। রাজনীতি করতে গিয়ে পাক সরকারের রোষানলে পড়েন। তাঁর নামে দায়ের করা হয় ৩৭টি রাজনৈতিক মামলা। জারি হয় হুলিয়া। এ মামলা থেকে রক্ষা পেতে এক বন্ধুর পরামর্শে চলচ্চিত্রে অভিনয়ে আসেন তিনি। ১৯৭০ সালে অভিনয় করেন এইচ আকবরের ‘জলছবি’ চলচ্চিত্রে। ছবিটি সাফল্য পেলে তিনি রাজনীতির পাশাপাশি অভিনয়েই থেকে যান। অভিনয় থেকে অবশ্য অবসর নিয়ে তিনি সংসদ সদস্যও হয়েছেন।
গায়ক নাদিম
পুরান ঢাকার ছেলে নাজির বেগ ভালো গাইতেন। নামি গায়ক হওয়ার স্বপ্ন নিয়েই এগোচ্ছিলেন তিনি। একসময় প্রখ্যাত চলচ্চিত্রনির্মাতা এহতেশাম তাঁকে অভিনয়ে নিয়ে আসেন। তাঁকে নায়ক করে নির্মাণ করলেন ‘চকোরী’ ছবিটি। গান চালিয়ে গেলেও গায়কের পরিবর্তে নায়ক হিসেবেই পরিচিত হয়ে যান।
রাজনীতিবিদ সোহেল রানা
ছাত্রজীবন থেকেই রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত থাকা এবং মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেওয়া মাসুদ পারভেজ সোহেল রানা দেশ স্বাধীনের পর প্রযোজনা করেন স্বাধীন দেশের প্রথম মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক ছবি ‘ওরা ১১ জন’। ছবিটি দেখে স্বয়ং বঙ্গবন্ধু মাসুদ পারভেজকে চলচ্চিত্র অঙ্গনে থেকে যেতে বলেন। এরপর চলচ্চিত্র নির্মাণ-অভিনয়ে নিয়মিত হন।
ব্যাংকার বুলবুল আহমেদ
সরকারি ব্যাংকের ম্যানেজার ছিলেন বুলবুল আহমেদ। ঘটনাচক্রে একদিন প্রখ্যাত চলচ্চিত্রনির্মাতা আমজাদ হোসেনের সঙ্গে তাঁর দেখা হলে তিনি তাঁকে চলচ্চিত্রে অভিনয়ের প্রস্তাব দেন এবং নিয়ে যান ইউসুফ জহিরের কাছে। তিনি তাঁকে নিয়ে নির্মাণ করেন ‘ইয়ে করে বিয়ে’। ছবিটি সাফল্যের পর চাকরি ছেড়ে সিনেমায় নিয়মিত হন।
গায়ক আলমগীর
বাবার ইচ্ছা ছিল ছেলে ডাক্তার হবে আর নিজের স্বপ্ন গায়ক হওয়ার। স্বপ্ন পূরণে একসময় চলচ্চিত্রনির্মাতা সফদার আলী ভূঁইয়ার অফিসে যান। এ নির্মাতা তাঁকে গাইতে বললে চোখ বন্ধ করে তিনি গেয়ে যান। তাঁর এক্সপ্রেশন দেখে নির্মাতা তাঁকে নায়ক হওয়ার প্রস্তাব দেন। অভিনয় করেন ‘আমার জন্মভূমি’ ছবিতে।
নৃত্যশিল্পী শাবনূর
ছোটবেলা থেকেই ভালো নাচতে পারতেন। বাসায় শিক্ষক রেখে নাচও শিখেছিলেন। শাবনূরের পরিবারের সঙ্গে পরিচয় ছিল খ্যাতিমান চলচ্চিত্রনির্মাতা এহতেশামের। একসময় এ নির্মাতা শাবনূরের বাবা-মাকে প্রস্তাব দেন শাবনূরকে নায়িকা করার। ১৯৯৩ সালে এ নির্মাতা তাঁর ‘চাঁদনী রাতে’ ছবিতে শাবনূরকে নায়িকা করেন।
ইঞ্জিনিয়ার শাকিব খান
ছোটবেলা থেকেই ইঞ্জিনিয়ার হওয়ার প্রতি আগ্রহ ছিল শাকিব খানের। একসময় নৃত্য পরিচালক আজিজ রেজা তাঁকে নিয়ে যান এফডিসিতে শুটিং দেখার জন্য। সেখানে এক ফটোগ্রাফার তাঁর ছবি তুলে দেখান চিত্রনির্মাতা আফতাব খান টুলু ও সোহানুর রহমান সোহানকে। এরপর টুলু তাঁকে নিয়ে ‘ফুল নেবে না অশ্রু নেবে’ ও সোহান নির্মাণ করেন ‘অনন্ত ভালোবাসা’। ‘অনন্ত ভালোবাসা’ ১৯৯৯ সালে মুক্তি পেয়ে সফল হলে নিয়মিতভাবেই নায়ক হয়ে যান তিনি।
আইনজীবী সিয়াম
আইনের ছাত্র সিয়াম এ বিষয়ে পড়াশোনা শেষ করে প্র্যাকটিসও শুরু করেন। শখের বশে আসেন ছোটপর্দার নাটকের নায়ক হয়ে। এরপর জাজ মাল্টিমিডিয়া তাঁকে নায়ক করে নির্মাণ করে ‘পোড়ামন-টু’। তারপর একের পর এক দর্শকপ্রিয় সিনেমা উপহার দেন তিনি।
পাইলট রিয়াজ
বিমানের পাইলট হিসেবেই কর্মজীবন শুরু করেন রিয়াজ। তাঁর চাচাতো বোন অভিনেত্রী ববিতা একসময় তাঁকে নিয়ে পরিচয় করিয়ে দেন প্রখ্যাত চলচ্চিত্রনির্মাতা দিলীপ বিশ্বাসের সঙ্গে। দিলীপ বিশ্বাস তাঁকে নিয়ে নির্মাণ করেন ‘অজান্তে’ ছবিটি।