এক॥
দুনিয়াজুড়ে আমেরিকান প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের পরিচিতি একজন রগচটা মানুষ হিসেবে। এ স্বভাবের জন্য অনেকে তাঁকে নিষ্ঠুর জার্মান শাসক হিটলারের সঙ্গে তুলনা করেন। কারও কারও মতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট আপাদমস্তক একজন জুয়াড়ি। ক্যাসিনো ব্যবসায়ী ট্রাম্পের কাছে রাজনীতি জুয়ার দানের মতো। ব্যবসায়ী ট্রাম্প মুখে হুমকিধমকি যা-ই করুন বাস্তবে তিনি যুদ্ধবাজ হিসেবে আবির্ভূত হতে চান না। তাঁর লোভ নোবেল শান্তি পুরস্কারের দিকে। শান্তিতে ট্রাম্পের নোবেল পুরস্কার পাওয়া উচিত লজ্জাশরমের মাথা খেয়ে এমন কথা তিনি বারবার বলেছেন। মার্কিন প্রেসিডেন্টের দাবি এ পর্যন্ত সাতটি যুদ্ধ থেমেছে তাঁর প্রচেষ্টায়। এর একটি হলো ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধ। ইরান-ইসরায়েলের যুদ্ধ বন্ধের হিরো হিসেবেও তিনি নিজেকে দাবি করেন। থাইল্যান্ড-কম্বোডিয়া, আর্মেনিয়া-আজারবাইজান কসোভো-সার্বিয়া, মিসর-ইথিওপিয়া, কঙ্গো-রুয়ান্ডা যুদ্ধ তাঁর কারণে বন্ধ হয়েছে এমন দাবি ডোনাল্ড ট্রাম্পের। এজন্য একটি নয় শান্তিতে সাতটি নোবেল পুরস্কার তাঁর পাওয়া উচিত এমন তত্ত্ব তিনি তুলে ধরেছেন এক ভোজসভায়। যুক্তরাষ্ট্রের এযাবৎকালের সবচেয়ে বাচাল প্রেসিডেন্ট বলে পরিচিত ট্রাম্পের দাবি, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধ করাও তাঁর পক্ষেই সম্ভব। কারণ রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট পুতিনের সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক ভালো। একই সঙ্গে রুশ প্রেসিডেন্টের আচরণে তিনি যে হতাশ সে কথাও তুলে ধরেছেন।
গত ২০ সেপ্টেম্বর শান্তির স্বঘোষিত মহাপুরুষ ডোনাল্ড ট্রাম্প গাজা যুদ্ধ বন্ধে কুড়ি দফা প্রস্তাব উপস্থাপন করেছেন। গাজা যুদ্ধের দুই বছর পূর্তির এক পক্ষকাল আগে ট্রাম্পের দেওয়া ওই প্রস্তাবে ইসরায়েল সায় দিয়েছে। হামাস চুক্তির গুরুত্বপূর্ণ অংশ যুদ্ধবিরতি এবং বন্দিবিনিময় সম্পর্কে ইতিবাচক মনোভাব দেখিয়েছে। তবে পুরো ২০ দফা পর্যালোচনায় তারা কিছুটা সময় চেয়েছে। পর্যবেক্ষকদের মতে, বাস্তবতার নিরিখে ট্রাম্পের শান্তি চুক্তি মেনে নেওয়া ছাড়া হামাসের গত্যন্তর নেই। কারণ গত দুই বছরে ইসরায়েলের লাগাতার হামলায় হামাস প্রায় নিঃশেষ। গাজায় নিতান্ত নির্বোধ ছাড়া কেউই হামাসের ওপর এখন আস্থা রাখে না। তাদের কোনো মিত্রও নেই। লেবাননের হিজবুল্লাহর অস্তিত্ব প্রায় বিলীন ইসরায়েলি হামলায়। হামাসের প্রধান পৃষ্ঠপোষক ইরানও ইসরায়েল ও মার্কিন হামলায় তাদের দাঁত ও নখর হারিয়েছে। সিরিয়া ছিল হামাসের অন্যতম ভরসা। সেখানে এখন ইসলামি হুকুমত প্রতিষ্ঠা করেছে ইসরায়েল ও আমেরিকার ভাড়াটে লোকেরা। হামাসের বিরুদ্ধে গাজা শুধু নয়, ফিলিস্তিনের সিংহভাগ মানুষ এখন ক্ষুব্ধ। কারণ হামাসের কারণে গাজা এখন এক ধ্বংসস্তূপের নাম। এমন কোনো পরিবার নেই, যারা তাদের স্বজন হারায়নি। এই ক্ষয়ক্ষতির জন্য দায়ী হামাসের কাণ্ডজ্ঞানহীন আচরণ।
দুই॥
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ভোরে অর্থাৎ আজ থেকে দুই বছর আগে হামাসের যোদ্ধারা গাজা থেকে ইসরায়েলে প্রবেশ করে। দিনটি ছিল শনিবার। ইহুদিদের ছুটি বা বিশ্রামের দিন। বলা হয়ে থাকে গাজা আক্রমণের অজুহাত সৃষ্টি করতেই হামাসের যোদ্ধারা ইসরায়েলে হামলা চালায়। তারা বেসামরিক লোকজনকে নির্বিচারে হত্যা করে। আচমকা হামলায় ৩৪৯ জন ইসরায়েলি সৈন্য ও নিরাপত্তারক্ষী নিহত হন।
নিহত বেসরকারি নাগরিকের সংখ্যা ৮৫৯। ইসরায়েলের কিবুতজিম শহরের সামরিক ঘাঁটি ও একটি সংগীত কনসার্ট ছিল হামাসের টার্গেট। ১ হাজার ২০০ লোককে হত্যার পর হামাস যোদ্ধারা ২৫০ ইসরায়েলিকে জিম্মি করে নিয়ে যায় গাজায়। যার মধ্যে কয়েকজন শিশুও ছিল। হামাস এমন একসময় ইসরায়েলে হামলা চালায় যখন দুই পক্ষের মধ্যে দৃষ্টিগ্রাহ্য কোনো উত্তেজনা ছিল না। ফিলিস্তিনের পশ্চিমতীর নিয়ন্ত্রণকারী ফিলিস্তিন কর্তৃপক্ষ বা ফিলিস্তিনি মুক্তি সংস্থা পিএলও মনে করে হামাস হামলা চালিয়ে প্রকারান্তরে ইসরায়েলকে গাজা উপত্যকায় আমন্ত্রণ জানিয়েছে।
আরবি হারাকাত আল মকাওয়ালা আল ইসলামিয়ার অর্থ ইসলামি প্রতিরোধ আন্দোলন। সংক্ষেপে হামাস। ফিলিস্তিনের মুক্তি এবং ইসলামি শাসন প্রতিষ্ঠার জন্য ১৯৮৭ সালে প্রখ্যাত ইসলামি পণ্ডিত আহমেদ ইয়াসিন এ দলটির প্রতিষ্ঠাতা। অভিযোগ রয়েছে, হামাস প্রতিষ্ঠায় ইসরায়েলের পরোক্ষ মদত রয়েছে।
হামাসের প্রতিষ্ঠাতা আহমেদ ইয়াসিন শীর্ষস্থানীয় ইসলামি পণ্ডিতই শুধু নন, একজন নিবেদিতপ্রাণ ফিলিস্তিনি নেতা হিসেবেও পরিচিত ছিলেন। ফিলিস্তিনের মুক্তি ও ইসলামি হুকুমত প্রতিষ্ঠায় হামাসের অঙ্গীকারের মধ্যেও কোনো খুঁত নেই। কিন্তু হামাসের আবির্ভাব ফিলিস্তিনের মুক্তিসংগ্রামকে শক্তিশালী করার বদলে বরং দুর্বল করেছে। ফিলিস্তিনিদের মধ্যে বিভাজন ঘটিয়ে তারা প্রকারান্তরে ৩৮ বছর ধরে ইসরায়েলের স্বার্থ রক্ষা করে চলছে।
হামাসের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগে তাদের এ দেশীয় দোসররা তেলেবেগুনে জ্বলে উঠতে পারেন। কিন্তু ২০০৯ সালের ২৪ জানুয়ারি অ্যান্ড্রু হিগিন্স যুক্তরাষ্ট্রের ওয়ার্ল্ড স্ট্রিট জার্নালে ইসরায়েল যে হামাস সৃষ্টিতে ভূমিকা রেখেছে সে তথ্যটি ফাঁস করেছেন। তিউনিসিয়ান বংশোদ্ভূত ইহুদি আভনার কোহেনকে উদ্ধৃত করে বলেছেন, ইসরায়েল হামাসের আত্মপ্রকাশে সাহায্য করেছে। কোহেন ইসরায়েল সরকারের ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের অধীনে দুই দশকেরও বেশি সময় ধরে গাজায় কর্মরত ছিলেন। তাঁর মতে ফিলিস্তিনি নেতা ইয়াসির আরাফাত এবং তাঁর নেতৃত্বাধীন প্যালেস্টাইন লিবারেশন অর্গানাইজেশন পিএলওকে ঠেকানোর জন্য হামাস সৃষ্টিতে উৎসাহ দেওয়া হয়।
২০২৩ সালের ৮ অক্টোবর টাইমস অব ইসরায়েলে প্রকাশিত এক নিবন্ধে তাল স্লাইডার দাবি করেন, ফিলিস্তিনি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা ঠেকানোর জন্য নেতানিয়াহু বছরের পর বছর ধরে ফিলিস্তিনের নেতা মাহমুদ আব্বাসের বিরুদ্ধে হামাসকে ব্যবহার করেছেন এবং তাদের নিজেদের অংশীদার ভেবেছেন। তিনি লিখেছেন নেতানিয়াহু হামাসকে সহযোগিতা করতে ইসরায়েলে গাজার শ্রমিকদের ওয়ার্ক পারমিট ২ হাজার থেকে ২০ হাজারে উন্নীত করেন।
৯ অক্টোবর ২০২৩ হারেৎজ-এর এক নিবন্ধে উল্লেখ করা হয় নেতানিয়াহু হামাসকে নিজেদের অংশীদার হিসেবে বিবেচনা করে গোপনে অর্থায়ন করতেন দ্বিরাষ্ট্রভিত্তিক সমাধানকে অসম্ভব করে তোলার জন্য। ২০১৯ সালের মার্চে ইসরায়েলের লিকুদ পার্টির সভায় তিনি বলেছিলেন, ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠাকে বাধাগ্রস্ত করতে হলে হামাসকে শক্তিশালী করতে হবে। তাদের জন্য অর্থায়ন করাও জরুরি। গাজার ফিলিস্তিনিদের পশ্চিমতীরের ফিলিস্তিনিদের থেকে বিচ্ছিন্ন করে রাখাকে তিনি নিজেদের কৌশল হিসেবে অভিহিত করেন।
১০ ডিসেম্বর ২০২৩ নিউইয়র্ক টাইমসের রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়, কাতারি কর্মকর্তারা এক দশক ধরে গাজায় প্রতি মাসে মিলিয়ন ডলার নগদ বিতরণ করছে সেখানকার হামাস সরকারকে সহায়তা করার জন্য। ইসরায়েলি সাংবাদিক ড্যান মার্গালিটের দেওয়া তথ্য, নেতানিয়াহু এক সাক্ষাৎকারে তাঁকে বলেছেন, হামাসসহ শক্তিশালী দুটি প্রতিপক্ষ থাকলে ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রসংক্রান্ত চাপ হ্রাস পাবে।
ফিলিস্তিনের মুক্তি আন্দোলনে ভাঙন সৃষ্টির জন্য হামাস সৃষ্টি করা হলেও সরাসরি ইসরায়েল তাদের অর্থায়ন করেনি। প্রকাশ্যে আমেরিকা ও গোপনে ইসরায়েলের বন্ধু হিসেবে বিবেচিত রাজতন্ত্রী আরব দেশগুলো এ অর্থায়ন করেছে বলে মনে করা হয়।
ফিলিস্তিনের গাজায় যুদ্ধ বন্ধে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প যে ২০ দফা প্রস্তাব দিয়েছেন, তাতে ইসরায়েলের পাশাপাশি স্বাধীন ফিলিস্তিন প্রতিষ্ঠার কোনো কথা নেই। তবে হামাস অস্ত্র সমর্পণ করলে গাজা এলাকার দায়িত্ব ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের ওপর ন্যস্ত করা হবে বলে আভাস দেওয়া হয়েছে। ফিলিস্তিনিরা পৃথিবীর অন্যতম প্রাচীন জাতি। তারা ফিলিস্তিন ভূখণ্ডের ভূমিপুত্র। ১৯৪৮ সালে ফিলিস্তিন ভূখণ্ডে ইসরায়েল ও ফিলিস্তিন নামে দুটি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নেয় জাতিসংঘ। জাতিসংঘের প্রস্তাবে সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগোষ্ঠী ফিলিস্তিনিদের জন্য কম ভূখণ্ড বরাদ্দ দেওয়া হয়। স্বভাবতই ফিলিস্তিনিদের কাছে সে প্রস্তাব গ্রহণযোগ্য ছিল না। একইভাবে আরব দেশগুলোর কাছেও ছিল তা অগ্রহণযোগ্য। কিন্তু জাতিসংঘের প্রস্তাবকে শিখণ্ডী হিসেবে ব্যবহার করে ইউরোপ থেকে আসা ইহুদিরা তাদের জন্য বরাদ্দ করা ভূখণ্ডের স্বাধীনতা ঘোষণা করে। এভাবে ইহুদিদের জন্য ইসরায়েল রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা হলেও ফিলিস্তিনিদের জন্য কোনো রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠায় জাতিসংঘ উদ্যোগ নেয়নি।
মধ্যপ্রাচ্যে শান্তি চাইলে ইসরায়েলের পাশাপাশি ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার বিকল্প নেই। ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা হলে তারা নিজেদের স্বার্থেই ইসরায়েলের সঙ্গে শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের পথ বেছে নেবে বলে বিশ্বাস করা যায়। ফিলিস্তিনিরা জেরুজালেমকে দুই রাষ্ট্রের অভিন্ন রাজধানী হিসেবেও মেনে নিতেও রাজি।
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুর ফিলিস্তিনি নিধন নীতি তাদের মরুব্বিদের উৎকণ্ঠার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। ইসরায়েলের বাইরে সবচেয়ে বেশি ইহুদির বাস যুক্তরাষ্ট্রে। ‘ইহুদি রাষ্ট্র’ হিসেবে পরিচয় দেওয়া ইসরায়েলের তুলনায় বেশি ইহুদির বসবাস সেখানে। সেই মার্কিন মুল্লুকের বেশির ভাগ ইহুদি বিশ্বাস করেন, ইসরায়েল গাজায় ‘যুদ্ধাপরাধ’ করেছে এবং ‘গণহত্যা’ চালিয়েছে।
জরিপে অংশ নেওয়া মার্কিন ইহুদিদের ৬১ শতাংশ বলেছে, তারা মনে করে, গাজায় ইসরায়েল যুদ্ধাপরাধ করেছে। এর মধ্যে প্রতি ১০ জনের ৪ জন বিশ্বাস করেন যে ইসরায়েল গাজায় ফিলিস্তিনিদের ওপর গণহত্যা চালিয়েছে।
জরিপের বরাত দিয়ে ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যম দ্য জেরুজালেম পোস্ট বলেছে, মার্কিন ইহুদিদের ৬৮ শতাংশ ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর প্রতি নেতিবাচক মনোভাব পোষণ করেন। প্রায় ৪৮ শতাংশ মার্কিন ইহুদির মতে, নেতানিয়াহুর নেতৃত্ব ‘নিম্নমানের’। পাঁচ বছর আগে পিউ গবেষণায় এই সংখ্যা ছিল ২৮ শতাংশ। অর্থাৎ গত পাঁচ বছরে মার্কিন ইহুদিদের মধ্যে নেতানিয়াহুবিরোধী মনোভাব ২০ শতাংশ বেড়েছে।
যে যুক্তরাষ্ট্রের পূর্ণ সমর্থন নিয়ে ইসরায়েল মধ্যপ্রাচ্যে তাণ্ডব চালিয়ে যাচ্ছে, সেই যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসকারী ইহুদিদের এমন মনোভাব ইসরায়েলের প্রতি মার্কিন প্রশাসনের ‘একচোখা’ নীতিতে কিছুটা হলেও প্রভাব ফেলবে বলে আশা করা যায়।
তিন॥
গাজায় মানবিক সহায়তার জন্য ফ্লোটিলা বহরে যাঁরা গেছেন তাঁদের মধ্যে সর্বাধিক আলোচিত সুইডেনের গ্রেটা থুনবার্গ। স্কুলে পড়া অবস্থাতেই গ্রেটা প্রকৃতি ও পরিবেশ রক্ষার আন্দোলন করে বিশ্বজুড়ে পরিচিত হয়ে ওঠেন। ইসরায়েলি বাহিনী ফ্লোটিলা নৌবহর আটক করে ১৩৭ জনকে তুরস্কে পাঠালেও গ্রেটা থুনবার্গকে গ্রেপ্তারের পর ইসরায়েলি কারাগারে পাঠানো হয় এবং তাঁর সঙ্গে অপমানজনক ও অমানবিক আচরণ করা হয়।
তুর্কি সাংবাদিক এরসিন চেলিক বলেছেন, তিনি নিজে থুনবার্গের ওপর ‘নির্যাতনের দৃশ্য’ প্রত্যক্ষ করেছেন। তাঁর ভাষায় : ‘তারা এই ছোট মানুষটির চুল ধরে টেনেহিঁচড়ে নিয়ে যায়। আমাদের সামনে তাঁকে পেটায়, এবং ইসরায়েলি পতাকায় চুমু দিতে বাধ্য করে। তাঁর সঙ্গে এটা করার উদ্দেশ্য হচ্ছে এর মাধ্যমে অন্যদের সতর্ক ও কঠিন বার্তা দেওয়া। তাঁর সঙ্গে যা করা হয়েছে অন্যদের জন্য এর চেয়েও অকল্পনীয় কিছু অপেক্ষা করছে।’ গ্রেটাকে পর্যাপ্ত খাবার-পানিও দেওয়া হয়নি। পাঁচ ঘণ্টার বেশি সময় হাত বেঁধে তাঁকে হাঁটু গেড়ে থাকতে বাধ্য করা হয়। সুইডেনের পরিবেশ আন্দোলন ও রাজনীতিক কর্মী গ্রেটা থুনবার্গসহ গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলার ১৫৬ জন অভিযাত্রীকে গ্রিসে ফেরত পাঠাচ্ছে ইসরায়েল। ইসরায়েলের টেলিভিশন সংবাদমাধ্যম আই ২৪ নিউজ এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, ফ্লোটিলা অভিযানে গ্রিসের যত নাগরিক ছিলেন, তাঁদের এবং গ্রেটাসহ ১৬৫ জন অভিযাত্রীকে একটি বিশেষ বিমানে গ্রিসে পাঠানো হচ্ছে।
আটক অবস্থায় ইসরায়েলে সুইডেনের দূতাবাসের কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে দেওয়া হয়েছিল গ্রেটাকে। কর্মকর্তাদের তিনি জানিয়েছেন যে তাঁকে ছারপোকায় ভরা একটি কারাকক্ষে রাখা হয়েছে এবং প্রয়োজনীয় খাবার ও পানি দেওয়া হচ্ছে না।
লেখক : সিনিয়র সহকারী সম্পাদক, বাংলাদেশ প্রতিদিন
ইমেইল : [email protected]