দেশে সাম্প্রতিক কয়েকবার ভূমিকম্পের ঘটনায় জনমনে আতঙ্ক তৈরি হলেও সাধারণ জনগণকে স্বস্তিতে থাকার আহ্বান জানিয়েছেন বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তরের (বিএমডি) পরিচালক (চলতি দায়িত্ব) মো. মমিনুল ইসলাম। বারবার ভূমিকম্প হওয়ার বিষয়টি সিসমোলজির দৃষ্টিকোণ থেকে স্বাভাবিক বলেই মন্তব্য করেন তিনি।
সংবাদমাধ্যমকে মমিনুল ইসলাম জানান, পরপর ঘটে যাওয়া ছোট কম্পনগুলো মূলত ‘আফটার শক’। যা প্রধান কম্পন বা ‘মেইন শকের’ শক্তি নির্গমনের স্বাভাবিক প্রক্রিয়া। আগামী ৭২ ঘণ্টা পর্যন্ত এমন ছোট কম্পন অনুভূত হতে পারে। তবে আমাদের অবজারভেশন অনুযায়ী, আপাতত বড় ভূমিকম্পের ঝুঁকি নেই। আবহাওয়া অধিদপ্তরের পরিচালকের এই বক্তব্য অনুযায়ী আজ (২৪ নভেম্বর) বেলা ১১টা পর্যন্ত ‘আফটার শক’ অথবা মৃদু ভূমিকম্প হতে পারে। তিনি বলেন, ‘গত শুক্রবারের কম্পনটিকে আমরা মেইন শক হিসেবে মনে করি। একটি বড় আর্থকোয়েকের আগে প্রি-শক এবং পরে আফটার শক হয়ে থাকে। শনিবার যে ছোট ছোট কম্পনগুলো অনুভূত হয়েছে, তা হলো আফটার শক। একটি ইভেন্ট (ভূমিকম্প) ঘটার পরে ৭২ ঘণ্টা পর্যন্ত ছোট ছোট কম্পন হতে পারে। এতে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই।’ পরপর কম্পনের পর নরসিংদী ও বাড্ডাসহ বিভিন্ন স্থানে মানুষ রাস্তায় নেমে আসে। এর মধ্যে কিছু গুজবের খবর ছড়িয়ে পড়ে যে, ‘আর দুই ঘণ্টা পর বড় ভূমিকম্প হবে’, যা মানুষের মধ্যে আরও বেশি ভয় সৃষ্টি করে। বিএমডির পরিচালক এই গুজবকে কঠোরভাবে প্রত্যাখ্যান করে বলেন, ‘এ ধরনের ভবিষ্যৎ বাণী কেউ দিতে পারে না। ভূমিকম্পের ফোরকাস্ট বা পূর্বাভাসের কোনো সুযোগ নেই।
আমরা বারবার বলছি, বাংলাদেশ মেট্রোলজিক্যাল ডিপার্টমেন্টকে ফলো করুন। এখন যেগুলো হচ্ছে, তা কেবলই আফটার শক। এটি সবসময় মূল শকের চেয়ে ছোট হবে এবং অলরেডি বেশ কয়েকটি হয়ে গেছে, হয়তো আর না-ও হতে পারে।’
জনগণের প্রতি শান্ত থাকার এবং কর্তৃপক্ষের নির্দেশনা মেনে চলার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, যেহেতু একটি ৫.৭ মাত্রার কম্পনকে ভূখন্ড অ্যাবজর্ব করতে পেরেছে, তাই ৩ বা ৪ মাত্রার আফটার শক নিয়ে উদ্বিগ্ন হওয়ার কিছু নেই। আফটার শকগুলো সাধারণত মেইন শকের পর ৭২ ঘণ্টার মধ্যে শেষ হয়ে যায়। ভূমিকম্পের পূর্বাভাস সংক্রান্ত কোনো গুজবে কান না দিয়ে বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তরের নির্দেশনা মেনে চলার আহ্বান জানান তিনি।