এক ॥
ডাকসু ও জাকসু নির্বাচন কি বাংলাদেশের রাজনীতিতে টার্নিং পয়েন্ট বলে বিবেচিত হবে? ঢাকা ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ নির্বাচনে শিবিরের বিশাল জয় কি আগামী নির্বাচনের ওপর কোনো প্রভাব বিস্তার করবে- এ প্রশ্ন এখন রাজনৈতিক সচেতন মহলে ব্যাপকভাবে আলোচিত হচ্ছে। ডাকসু ও জাকসু নির্বাচনে ছাত্রশিবির-সমর্থিত প্যানেল জয়ী হয়েছে প্রতিপক্ষকে ধরাশায়ী করে। ডাকসুতে সহসভাপতি, সাধারণ সম্পাদক, সহকারী সাধারণ সম্পাদকসহ ২৮টি পদের ২৩টিতেই ছাত্রশিবির জিতেছে সুস্পষ্ট ভোটের ব্যবধানে। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সহসভাপতি পদের নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছাত্রদলের প্রার্থী আবিদুল ইসলাম খানের চেয়ে প্রায় আড়াই গুণ বেশি ভোট পেয়েছেন ছাত্রশিবির প্রার্থী সাদিক কায়েম। জাকসুতে সহসভাপতি পদে জিতেছেন সাবেক ছাত্রলীগ নেতা স্বতন্ত্র শিক্ষা সম্মিলনের প্রার্থী আবদুর রশিদ জিতু। যিনি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়েছেন সামনের কাতারে দাঁড়িয়ে। জাকসুতে ২৫টি পদের মধ্যে শিবির-সমর্থিত প্যানেল ২০টি পদে জিতেছে বড় ব্যবধানে।
জুলাই গণ অভ্যুত্থানের পর বিএনপির অবস্থান ছিল জাতীয় নির্বাচনের আগে স্থানীয় নির্বাচন কোনোভাবে নয়। সেদিক থেকে ছাত্র সংসদ নির্বাচনও জাতীয় নির্বাচনের পর হতে হবে এমন অবস্থানে তাদের অটল থাকার কথা। কিন্তু বিএনপির ছাত্রসংগঠন ছাত্রদলের শক্তিসামর্থ্য সম্পর্কে অতি ধারণা তাদের জন্য শেষ পর্যন্ত কাল হয়ে দাঁড়ায়। ডাকসু ও জাকসু নির্বাচনে ছাত্রদলকে হারাতে নিষিদ্ধ ছাত্রসংগঠন ছাত্রলীগের কর্মী-সমর্থকরা ছাত্রশিবিরকে ভোট দিয়েছেন এমন অভিযোগ ছাত্রদলের। নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ কিংবা আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে এ অভিযোগ নাকচ করা হয়নি। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, আওয়ামী লীগের পৌনে ১৬ বছরে কোনো পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রতিপক্ষ কোনো ছাত্রসংগঠনকে দাঁড়াতে দেয়নি ছাত্রলীগ। এ দুঃসময়েও ছাত্রশিবির দেশের সব বিশ্ববিদ্যালয়ে তাদের অস্তিত্ব বজায় রাখতে সক্ষম হয়। প্রকাশ্যে ছাত্রলীগ সেজে শিবির কর্মীরা গোপনে তাদের তৎপরতা চালায়। সোজা কথায় বলা যায়, আওয়ামী লীগের ১৬ বছরে দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ছাত্রশিবির ছাড়া আর কোনো ছাত্রসংগঠনের কার্যক্রম ছিল না। তারই প্রমাণ মিলেছে ডাকসু ও জাকসু নির্বাচনের ফলাফলে।
ঢাকা ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রশিবির-সমর্থিত প্যানেলের জয় দেশের ছাত্ররাজনীতি শুধু নয়, জাতীয় রাজনীতির জন্যও শিক্ষণীয়। ডাকসুকে বলা হয় মিনি পার্লামেন্ট। আগামী ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠেয় জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মিনি পার্লামেন্টের ফলাফল কতটা প্রভাব বিস্তার করবে তা এখন দেশজুড়ে আলোচ্য বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। জাতীয় সংসদের সঙ্গে ছাত্র সংসদ নির্বাচনের তুলনা করার খুব একটা সুযোগ নেই। স্বাধীনতার পর ছাত্র ইউনিয়ন ডাকসুতে বিপুলভাবে জয়ী হয়েছে ১৯৭২ সালে। কিন্তু পরবর্তী জাতীয় নির্বাচনে তাদের মূল দল ন্যাপ ও কমিউনিস্ট পার্টিকে একটি আসন নিয়েই সন্তুষ্ট থাকতে হয়েছে। ১৯৭৩ সালের ডাকসু নির্বাচনের ব্যালট বাক্স ছিনতাই করা হয় জাসদ ছাত্রলীগের জয় প্রতিরোধের জন্য। পরের দুই বছরও ডাকসু নির্বাচন হয়নি সম্ভবত একই উদ্দেশ্য সামনে রেখে। ১৯৭৯ সালের ডাকসু নির্বাচনে ছিল জাসদ ছাত্রলীগের মান্না-আখতার প্যানেলের জয়জয়কার। ১৯৮০-তে জাসদ ভেঙে গড়ে ওঠা বাসদের ছাত্রসংগঠন ছাত্রলীগের মান্না-আখতার প্যানেল জয়ী হয় দাপট দেখিয়ে। পরের বছরও জয়ী হয় বাসদ ছাত্রলীগ। ছাত্ররাজনীতিতে বাসদ ছাত্রলীগের অর্জন ডাকসুতেই সীমাবদ্ধ থাকে। জাতীয় রাজনীতিতেও বাসদের ওই অংশটি নিজেদের অস্তিত্ব বজায় রাখতে পারেনি।
দীর্ঘ সাত বছর পর ১৯৮৯ সালের ডাকসু নির্বাচনে জয়ী হয় ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের প্যানেল। ওই নির্বাচনে সহসভাপতি পদে জয়ী হন আওয়ামী লীগ-সমর্থিত ছাত্রলীগের সুলতান মোহাম্মদ মনসুর আহমদ। সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন জাসদ ছাত্রলীগের ডা. মুশতাক হোসেন। ১৯৯০-এ ছাত্রদল-সমর্থিত প্যানেলের আমান উল্লাহ আমান ও খায়রুল কবির খোকন ডাকসুর সহসভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। ওই নির্বাচনের প্রভাব পড়ে নব্বইয়ের স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে। ডাকসু ও জাকসু নির্বাচনে ছাত্রবান্ধব নীতির জয়জয়কার হয়েছে। আগামী জাতীয় নির্বাচনে জিততে হলে কারা বড় দল কারা ছোট দল- সে বিবেচনা না করে সব দলকে ভোটারদের আস্থা অর্জনে কঠিন মেহনত করতে হবে। মনে রাখতে হবে, স্বাধীনতার পর থেকে দেশের রাজনীতি আওয়ামী লীগ ও আওয়ামী লীগবিরোধী শিবিরে বিভক্ত।
১৯৭২ সালে জাসদের অভ্যুদয় ঘটে কালবৈশাখির মাতম তুলে। আওয়ামী লীগ বিরোধিতার ধ্বনি তুলে তারা রাতারাতি বিরোধী দলের ভূমিকায় আসে। ১৯৭৫ সাল পর্যন্ত জাসদ ছিল আওয়ামী লীগের প্রধান প্রতিপক্ষ। ১৯৭৫ সালের ৭ নভেম্বর সিপাহি জনতার বিপ্লবের মাধ্যমে ক্ষমতায় আসেন জেনারেল জিয়াউর রহমান। ১৯৭৮ সালে তাঁর নেতৃত্বে গঠিত হয় বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদী ধারার দল বিএনপি। রাজনীতির মেরূকরণে নতুন দলটি আওয়ামী লীগের প্রধান প্রতিপক্ষ হয়ে দাঁড়ায়। নির্বাচিত রাষ্ট্রপতি বিচারপতি সাত্তারের বুকে বন্দুক ঠেকিয়ে এরশাদ ক্ষমতায় আসেন ১৯৮২ সালে। দেশের রাজনীতিতে আওয়ামী লীগের প্রতিপক্ষ হিসেবে আবির্ভূত হয় তাঁর গড়ে তোলা জাতীয় পার্টি। ১৯৯০ সালের গণ অভ্যুত্থানে এরশাদের সেনাশাসনের অবসান ঘটে। ১৯৯১ সালের নির্বাচনের আগে আওয়ামী লীগ বিরোধী শক্তির প্রতিনিধি হিসেবে আবার আবির্ভূত হয় বিএনপি। সাংগঠনিক ক্ষমতার বিবেচনায় সে নির্বাচনের আগে আওয়ামী লীগ ছিল সুপার পাওয়ার আর বিএনপির অবস্থান ছিল নড়বড়ে। কিন্তু আওয়ামী লীগবিরোধী ভোটকে সম্বল করে নির্বাচনে একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করে বিএনপি। জামায়াতের সমর্থন নিয়ে তারা সরকার গঠনেও সক্ষম হয়। ১৯৯৬ সালের নির্বাচনে নৌকার পালে হাওয়া লাগে। প্রতিপক্ষ বিএনপির সঙ্গে জামায়াতের ভোট কাটাকাটিতে জয়ী হয় আওয়ামী লীগ। ২০০১-এর নির্বাচনে বিএনপি-জামায়াতসহ সমমনা দলগুলোর সঙ্গে জোট বেঁধে বিস্ময়কর সাফল্য অর্জন করে। ভরাডুবির সম্মুখীন হয় আওয়ামী লীগ। ওয়ান/ইলেভেনে ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয় বিএনপি। এর বিপরীতে কিন্তু প্রতিপক্ষ দলগুলোর একলা চলো নীতির কারণে ২০০৮ সালের নির্বাচনে বিপুলভাবে জয়ী হয় আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন মহাজোট। আওয়ামী লীগ না থাকায় আগামী নির্বাচনে বিএনপি ও জামায়াত পরস্পরের প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে আবির্ভূত হতে যাচ্ছে। এ নির্বাচনের ভাগ্য নির্ধারণ করবে আওয়ামী লীগের ভোট। ডাকসু ও জাকসু নির্বাচনে ছাত্রলীগের ভোট পেয়ে ছাত্রশিবির বিস্ময়কর সাফল্য দেখিয়েছে। আগামী নির্বাচনে আওয়ামীপন্থিরা একই কৌশল অবলম্বন করলে তা বিএনপির জন্য কাল হয়ে দাঁড়াবে। আবার বিএনপি একাত্তর ইস্যুকে সামনে রেখে আওয়ামী সমর্থকদের মন জোগাতে পারলে তা তুরুপের তাস হিসেবে আবির্ভূত হবে।
দুই॥
চলতি বছরের ৯ এপ্রিল ‘স্পষ্টভাষণ’ কলামে নেপালের রাজতন্ত্রপন্থি বিক্ষোভকারীদের জ্বালাও পোড়াও আন্দোলন সম্পর্কে লিখেছিলাম। ‘নেপালে অশান্তির পেছনে মোদি না ট্রাম্প’ শীর্ষক ওই লেখায় নেপালের রাজতন্ত্রের ইতিবৃত্ত তুলে ধরে সে দেশের মানুষ যে রাজতন্ত্রের পথে ফিরে যাবে না, সে আশাবাদ ব্যক্ত করেছিলাম। লিখেছিলাম ‘২০০১ সালের ৪ জুন রাজা হিসেবে শপথ নেন জ্ঞানেন্দ্র। তারপর থেকে শুরু হয় ক্ষমতা কুক্ষিগত করার ষড়যন্ত্র। নির্বাচনের আয়োজন ও মাওবাদীদের আলোচনার টেবিলে নিয়ে আসতে না পারার অজুহাতে পরপর তিনজন প্রধানমন্ত্রীকে বরখাস্ত করা হয়। তারপর ২০০৫ সালের ফেব্রুয়ারিতে পার্লামেন্ট স্থগিত করে সব ক্ষমতা নিজের হাতে তুলে নেন রাজা। জ্ঞানেন্দ্রর সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে প্রতিবাদী হয়ে ওঠে সব রাজনৈতিক দল। রাজপথে নেমে আসে সাধারণ মানুষ। ২০০৬ সালের শুরুতেই রাজার কর্তৃত্ব কাঠমান্ডুর রিং রোডের রাজপ্রাসাদে সীমাবদ্ধ হয়ে পড়ে। সেনাবাহিনী রাজার প্রতি অনুগত থাকলেও সেখানেও ছিল অনিশ্চয়তা। ঠিক এ অবস্থায় ঈশ্বরের অবতার নেপালের রাজাকে রক্ষায় এগিয়ে আসে বিশ্বরাজনীতির ঈশ্বর যুক্তরাষ্ট্র। এগিয়ে আসে দক্ষিণ এশিয়ায় মহাক্ষমতাধর দেবতার ভূমিকায় আবির্ভূত ভারত। তাদের পরামর্শে রাজা স্থগিত পার্লামেন্ট পুনর্বহালে বাধ্য হন। পার্লামেন্ট সংবিধান সংশোধনে গণপরিষদের বৈঠক ডাকে। ২০০৮ সালে গণপরিষদের প্রথম বৈঠকেই রাজতন্ত্র বিলোপের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। হিন্দু রাষ্ট্রের বদলে ধর্মনিরপেক্ষ প্রজাতান্ত্রিক রাষ্ট্রে পরিণত হয় নেপাল।
২০০৬ সালে যুক্তরাষ্ট্র ও ভারত নাক না গলালে বিপ্লবের মাধ্যমে রাজা জ্ঞানেন্দ্রর পতন ঘটত। রাজতন্ত্র দূরের কথা রাজার জীবন বাঁচানোও দায় হয়ে পড়ত। প্রশ্ন হলো, সেই নেপালে রাজতন্ত্র ফিরে পেতে চাচ্ছে কারা বিক্ষোভ সংঘটনে কলকাঠি নাড়ছে। নেপালে এ মুহূর্তে কমিউনিস্টরা সবচেয়ে শক্তিশালী পক্ষ। স্থলবেষ্টিত ওই দেশের দুই দিকে দুই বৃহৎ প্রতিবেশী চীন ও ভারত। চীনবিরোধী অবস্থানের জন্য যুক্তরাষ্ট্র কখনো চাইবে না নেপালে কমিউনিস্ট আধিপত্য জেঁকে বসুক। এ ক্ষেত্রে ভারতের স্বার্থও অভিন্ন। ভারতে হিন্দুত্ববাদী দল বিজেপি ক্ষমতায় থাকলেও সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতায় হিন্দু রাষ্ট্র ঘোষণার পথে হাঁটতে পারছে না তারা।
একসময়ের হিন্দু রাষ্ট্র প্রতিবেশী নেপালের ধর্মনিরপেক্ষ হওয়াকে মেনে নিতে পারেনি বিজেপি ও তাদের মুরব্বি দল আরএসএস। তারা তাদের অনুসারী নেপালের রাষ্ট্রীয় প্রজাতন্ত্র পার্টিকে দিয়ে এ বছরের ৫ মার্চ নেপালে যে রক্তক্ষয়ী বিক্ষোভ প্রদর্শন করেছে, তাতে বরং রাজতন্ত্র বিরোধীরাই শক্তিশালী হয়ে উঠেছে। ইতোমধ্যে সাবেক রাজাকে বিক্ষোভে মদত দেওয়ার জন্য জরিমানা করেছে কাঠমান্ডু নগর কর্তৃপক্ষ। ব্যক্তিগত আলাপচারিতায় নেপালের সাংবাদিক বন্ধুরা সাফ সাফ বলেছেন, সে দেশের রাজনীতিতে কমিউনিস্টরাই সবচেয়ে জনপ্রিয় ও সুসংগঠিত। মোদি বা ট্রাম্প সাহেবরা রাজতন্ত্রীদের যত মদতই দিন না কেন, তাতে কোনো কাজ হবে না।’
ওই লেখাটি ছাপা হওয়ার পাঁচ মাসের মধ্যে নেপালে জ্বালাও পোড়াও আন্দোলনের মুখে নির্বাচিত সরকারের পতন ঘটেছে। নেপালের ইতিহাসের সবচেয়ে বড় সহিংস ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছে অন্তত ৭২ জন। শত শত কোটি টাকার সম্পদ ধ্বংস হয়েছে। বিক্ষোভকারীদের ভয়ে হেলিকপ্টারে করে দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা অলি। বিক্ষোভকারীরা পার্লামেন্ট, প্রধানমন্ত্রীর বাসভবন, সাবেক প্রধানমন্ত্রীসহ রাজনীতিবিদদের বাড়িতে অগ্নিসংযোগ ও লুটপাট চালিয়েছে। লুটপাট করা হয়েছে ব্যাংক-বিমা, হোটেলসহ বিভিন্ন স্থাপনা। আগুনে পুড়িয়ে হত্যা করা হয়েছে একজন সাবেক প্রধানমন্ত্রীর স্ত্রীকে। অর্থমন্ত্রীকে দিগম্বর করে শারীরিকভাবে হেনস্তা করা হয়েছে। ছাত্র ও তরুণদের গণ অভ্যুত্থানের পর সে দেশের সেনাপ্রধান দেশবাসীর উদ্দেশে ভাষণ দিয়েছেন। জাতীয় ঐক্য রক্ষায় সবাইকে সংযম প্রদর্শনের আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি যখন ভাষণ দিচ্ছিলেন সে সময় তাঁর পেছনে দেয়ালে শোভা পাচ্ছিল নেপালের সর্বশেষ রাজা জ্ঞানেন্দ্র বাহাদুর শাহর ছবি।
গণ অভ্যুত্থানের পর নেপালের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিয়েছেন সাবেক প্রধান বিচারপতি সুশীলা কার্কি। যাঁর স্বামী একজন বিমান হাইজ্যাকার। নেপালে রাজতন্ত্র পতনের পর থেকেই ক্ষমতায় ছিলেন ঘুরেফিরে চীনপন্থিরা। তাঁদের হটিয়ে দিয়েছে যে ছাত্র-জনতা তাদের পেছনে মোদি ও ট্রাম্পের মদত আছে বলে ব্যাপকভাবে বিশ্বাস করে নেপালের সাধারণ মানুষ।
নেপালে সরকার উৎখাত হলেও সংবিধান অক্ষত রয়েছে। সংবিধান অনুসারেই আগামী মার্চে অনুষ্ঠিত হবে নির্বাচন। ব্যক্তিগতভাবে আমার ধারণা, নির্বাচনে রাজতন্ত্রপন্থিদের ফিরে আসার সম্ভাবনা প্রায় ক্ষীণ। নেপালে হিন্দুত্ববাদ প্রতিষ্ঠার স্বপ্নও ঠেকিয়ে দেবে সে দেশের সাধারণ মানুষ। ঠেকিয়ে দেবে চীনের বিরুদ্ধে নেপালকে ব্যবহার করার মার্কিন ও ভারতীয় অভিলাস।
লেখক : সিনিয়র সহকারী সম্পাদক, বাংলাদেশ প্রতিদিন
ইমেইল : [email protected]