ইউক্রেনের পশ্চিমাঞ্চলীয় শহর তেরনোপিলে রুশ হামলায় কমপক্ষে নয়জন নিহত হয়েছে। এ ঘটনায় আহত হয়েছে আরও অনেকে।
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি এ তথ্য জানিয়েছে।
তিনি বলেন, “রাশিয়া রাতভর ইউক্রেনে ৪৭০টিরও বেশি ড্রোন ও ৪৭টি ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছে।”
দেশটির দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর খারকিভের তিনটি জেলাও ব্যাপক ড্রোন হামলার শিকার হয়েছে। এতে ৩০ জনেরও বেশি মানুষ আহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে শিশু রয়েছে। অনলাইনে ছড়িয়ে পড়া ছবিতে দেখা গেছে, ভবন ও গাড়িতে আগুন ধরে গেছে।
ইউক্রেনের জ্বালানি মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, হামলার কারণে দেশের বেশ কয়েকটি অঞ্চলে বিদ্যুৎ বিভ্রাট দেখা দিয়েছে।
বুধবার ভোরের এই হামলা ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে রাশিয়ার পূর্ণমাত্রার আগ্রাসন শুরুর পর পশ্চিম ইউক্রেনে সবচেয়ে প্রাণঘাতী হামলাগুলোর একটি।
জেলেনস্কি জানান, তেরনোপিলে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে এবং ধ্বংসস্তূপের নিচে মানুষ আটকে থাকতে পারে।
হামলায় পশ্চিম ইউক্রেনের অন্যান্য অঞ্চলে জ্বালানি সুবিধা, পরিবহন ও বেসামরিক অবকাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
ইভানো-ফ্রাঙ্কিভস্ক অঞ্চলের জ্বালানি খাতও হামলার শিকার হয়েছে। সেখানে আহত তিনজনের মধ্যে দু’জনই শিশু।
জেলেনস্কি জানান, লাভিভ অঞ্চলেও গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। অঞ্চলের প্রধান জানান, একটি জ্বালানি স্থাপনা লক্ষ্য করে হামলা চালানো হয়েছে।
ইউক্রেনের সেনাবাহিনী রাশিয়ার অভ্যন্তরে সামরিক লক্ষ্যবস্তুতে মার্কিন সরবরাহকৃত দূরপাল্লার এটিএসিএমএস ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করার একদিন পর রাশিয়ার এই হামলা চালানো হলো। ইউক্রেন প্রথমবারের মতো রাশিয়ায় এটিএসিএমএস ব্যবহার করার কথা স্বীকার করেছে।
রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় ইউক্রেনকে দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর ভোরোনেজ-এ চারটি ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপের জন্য অভিযুক্ত করেছে। কিন্তু বলেছে যে, সবগুলো ক্ষেপণাস্ত্র বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা দ্বারা ভূপাতিত করা হয়েছে।
এদিকে, যুদ্ধ শেষ করার জন্য মার্কিন প্রচেষ্টা পুনরুজ্জীবিত করার প্রয়াসে জেলেনস্কি তুরস্কের রাজধানী আঙ্কারায় যাচ্ছেন। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের বিশেষ দূত কিরিল দিমিত্রিভের সঙ্গে একটি পরিকল্পনা নিয়ে কাজ করছেন এমন খবরের মধ্যে জেলেনস্কি তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যেপ এরদোয়ানের সঙ্গে আলোচনা করবেন।
ক্রেমলিন জানিয়েছে, আঙ্কারায় কোনও রাশিয়ান প্রতিনিধি আলোচনায় যোগ দেবেন না।
রাশিয়ার পূর্ণ-স্কেল আক্রমণ শুরুর চতুর্থ বার্ষিকী আগামী ফেব্রুয়ারিতে এগিয়ে আসার সাথে সাথে, যুদ্ধের অবসান কীভাবে করা যায় সে বিষয়ে মস্কো ও কিয়েভ মৌলিক বিরোধিতা বজায় রেখেছে।
চলতি মাসের শুরুতে রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভ জানান, ২০২৪ সালে পুতিন শান্তি চুক্তির জন্য রাশিয়ার শর্তাবলী নির্ধারণ করার পর থেকে তাতে আর কোনও পরিবর্তন হয়নি। সূত্র: বিবিসি
বিডি প্রতিদিন/একেএ