শারদীয় দুর্গাপূজাকে সামনে রেখে দিনাজপুরজুড়ে জমে উঠেছে পূজার প্রস্তুতি। চারদিকে বাজছে আগমনী সুর, ঢাক-ঢোলের প্রতীক্ষায় সনাতন ধর্মাবলম্বীরা। আর প্রতিমা তৈরিতে এখন ব্যস্ত সময় পার করছেন মৃৎশিল্পী ও কারিগররা। চলছে রং-তুলির শেষ আঁচড়, অলংকারে সাজছে মা দুর্গা ও তার সঙ্গীরা।
দেবীর মুখে রং তুলির নিখুঁত টানে ফুটে উঠছে জীবনের আবহ, মণ্ডপে বসানোর আগেই প্রতিমাগুলো হয়ে উঠছে চোখ জুড়ানো। প্রতিমা তৈরির কাজ এখন প্রায় শেষ পর্যায়ে, চলছে সাজসজ্জা ও সৌন্দর্য বৃদ্ধির কাজ।
আগামী ২৮ সেপ্টেম্বর শুরু হচ্ছে পাঁচ দিনব্যাপী দুর্গোৎসব। এ বছর দেবী গজে (হাতিতে) আগমন করবেন এবং গমন করবেন দোলায় (ঘোড়ায়)- যা শুভ ও অশুভ দুই বার্তাই বহন করে।
দিনাজপুর জেলা প্রশাসনের তথ্য মতে, জেলার ১৩টি উপজেলায় মোট ১২৬৩টি পূজামণ্ডপে দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হবে। যা এই অঞ্চলের মধ্যে একটি বড় পরিসরের ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক উৎসব।
দিনাজপুর শহরের শ্যামরাই ঠাকুরবাড়ী মণ্ডপে প্রতিমা নির্মাণে ব্যস্ত শিল্পী রাজন বশাক জানান, প্রতিমা তৈরির উপকরণ তথা খড়, কাঠ, মাটি ও রঙ সব কিছুর মূল্যবৃদ্ধির কারণে খরচ বেড়েছে কয়েকগুণ। আগে যেখানে একটি পূর্ণাঙ্গ প্রতিমা সেট পাওয়া যেত ১০-১৫ হাজার টাকায়, বর্তমানে সেটি বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩০-৫০ হাজার টাকায়। এছাড়া দক্ষ মৃৎশিল্পীর সংকটও একটি বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
দিনাজপুর হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সভাপতি সুনীল চক্রবর্তী জানান, ‘প্রতি বছরের মতো এবারও দুর্গাপূজা ধর্মীয় সম্প্রীতির পরিবেশে, সর্বজনীনভাবে উদযাপিত হবে।’
জেলা প্রশাসনের আয়োজিত প্রস্তুতি সভায় জেলা প্রশাসক রফিকুল ইসলাম জানান, সনাতন ধর্মাবলম্বীদের বৃহত্তম এই উৎসব নির্বিঘ্ন করতে প্রশাসনের পক্ষ থেকে সর্বোচ্চ প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। উপজেলা পর্যায়ে আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে রাখতে পুলিশ, র্যাবসহ সব বাহিনী থাকবে সতর্ক অবস্থানে। পূজা উদযাপন কমিটি, রাজনৈতিক দল ও সামাজিক সংগঠনের প্রতিনিধিদের অংশগ্রহণে প্রস্তুতিমূলক সভাও সম্পন্ন হয়েছে।
বিডি প্রতিদিন/জামশেদ