কুষ্টিয়ার কুমারখালীর কয়া, শিলাইদহ, মাজগ্রাম, কল্যাণপুর ও আশাপাশের পদ্মা নদী থেকে প্রতিদিন লাখ লাখ টাকার মোটা বালু লুটের অভিযোগ উঠেছে একটি প্রভাবশালী চক্রের বিরুদ্ধে। ফলে একদিকে হুমকিতে পড়েছে পরিবেশ। অন্যদিকে রাজস্ব হারাচ্ছে সরকার। এতে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন স্থানীয়রা।
দুপুরে সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, শিলাইদহ ইউনিয়নের কল্যাণপুর ও মাজগ্রাম এলাকায় পদ্মা নদী থেকে ড্রেজার মেশিন দিয়ে বালু তুলে বলগেট ভরাট করছেন কয়েক জন শ্রমিক। খবর পেয়ে সেখানে অভিযান চালায় প্রশাসন। অভিযানে ৬জনকে আটক করা হয়। পরে বাংলাদেশ পরিবেশ ও সংরক্ষণে আইনে তাদের প্রত্যেককে ২০ হাজার টাকা করে মোট এক লাখ ২০ হাজার টাকা জরিমানা করেছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। আদালত পরিচালনা করেন উপজেলা সহকারী কমিশনার ( ভূমি) বিজয় কুমার জোয়ার্দার।
এসময় শ্রমিক মো. হানিফ বলেন, আমরা দৈনিক ৭০০ - ৮০০ টাকা হাজিরা হিসেবে কাজ করি। আমাদের নিয়ে এসেছে বালু ব্যবসায়ী সম্রাট।
গাইবান্ধা থেকে আসা শ্রমিক আসাদুল ইসলাম বলেন, সম্রাটসহ কয়েকজন মিলে বালু তুলছে। আমরা শ্রমিক। একটি বলগেটে ৬ হাজার ফিট বালু থাকে। কত টাকায় বিক্রি হয় তা জানিনা। তার ভাষ্য, আজই প্রথম বালু তোলা হচ্ছে। একটু আগে অন্য একটি বলগেট ভরা বালু চলে গেছে।
স্থানীয়দের ভাষ্য, প্রতি ফিট বালু মান ও আকার ভেদে ৩০ থেকে ৪০ টাকায় বিক্রি করা হয়। গেল তিন-চার মাস ধরে একটি চক্র অবৈধভাবে পদ্মার তলদেশ থেকে বালু তুলছেন।
এ বিষয়ে বালু ব্যবসায়ী সম্রাট হোসেন অভিযোগ অস্বীকার করে ফোনে বলেন, বকুল নামের এক যুবদল নেতা পদ্মা ইজারা নিয়েছেন। আমি তার কাছ থেকে বালু কিনে অন্যত্র বিক্রি করছি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সম্রাটের এক সহযোগী বলেন, বকুল নৌকা চলাচলের জন্য প্রতি ফিট বালুর জন্য দেড় টাকা এবং বালু তোলার জন্য প্রতি ফিটে ৪ টাকা করে নেন। তার ভাষ্য, তিন-চার মাস ধরে চলছে বালু উত্তোলনের কাজ।
অভিযোগ অস্বীকার করে ইজারাদার সালমান এফ রহমান ওরফে বকুল বলেন, আমি শুধু বৈধ দেড়টাকা নিচ্ছি। স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা সম্রাট অবৈধভাবে প্রভাব খাটিয়ে বালু তুলছেন নিয়মিত।
উপজেলা সহকারী কমিশনার ( ভূমি) বিজয় কুমার জোয়ার্দার বলেন, পদ্মায় অভিযান চালিয়ে বাংলাদেশ পরিবেশ ও সংরক্ষণ আইনে ৬ জনকে এক লাখ ২০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। জনস্বার্থে অভিযান অব্যাহত থাকবে।
বিডি প্রতিদিন/এএম