ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবায় পারিবারিক কলহের জের ধরে স্ত্রীকে ছুরিকাঘাত করে মারা গেছে মনে করে নিজেও গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে স্বামী পারভেজ মিয়া (২৬)। স্ত্রী লাকী আক্তার (২০) এর অবস্থা আশংকাজনক। তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
পুলিশ নিহতের লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠিয়েছে। নিহত পারভেজ মিয়া কসবা উপজেলার কাইমপুর ইউনিয়নের মইনপুর গ্রামের বাবুল মিয়ার ছেলে এবং স্ত্রী লাকী আক্তার একই উপজেলার খাড়েরা ইউনিয়নের খাড়েরা গ্রামের মৃত নিজাম মিয়ার মেয়ে।
নিহতের পরিবার, পুলিশ ও স্থানীয় সুত্রে জানা গেছে, দুই-আড়াই বছর আগে পারিবারিক ভাবে পারভেজ মিয়া ও লাকী আক্তারের সাথে বিয়ে হয়েছে। বিয়ের পর থেকেই তাদের মধ্যে পারিবারিক কলহ চলে আসছিল। লাকী আক্তার স্বামীর সংসার করবে না বলে খাড়েরা গ্রামে বাবার বাড়িতে চলে আসে। স্ত্রীকে নিতে পারভেজ প্রায়ই তার বাবার বাড়িতে আসলে স্ত্রী লাকী আক্তার স্বামীর বাড়িতে যায় না। তিনি খাড়েরা গ্রামের বাবার ভাড়া বাড়ির পাশেই স্থানীয় কামাল মাস্টার এর বাড়িতে গৃহকর্মীর কাজ নেয়। গত এক সপ্তাহ আগে পারভেজের পরিবারের অভিভাবকরা এসেও স্থানীয় সাহেব-সর্দারকে বিষয়টি অবহিত করেন। তখনই লাকি আক্তার স্বামীর বাড়িতে যাবে না বলে অস্বীকৃতি জানায়। কামাল মাস্টার ও তাঁর স্ত্রী চিকিৎসার জন্য ঢাকা চলে গেছেন। বাড়িতে কামাল মাষ্টারের মেয়ে লিমা আক্তার ও গৃহকর্মী লাকী আক্তার ছিলেন। বুধবার রাত সাড়ে আটটার দিকে পারভেজ মিয়া কামাল মাস্টারের বাড়িতে গিয়ে লাকি আক্তার আনতে চেস্টা করে। এক পর্যায়ে হাতে থাকা ছুরি দিয়ে স্ত্রীর বুকে উপর্যপুরি ছুরিকাঘাত করে। এসময় লাকি আক্তার মাটিতে পড়ে যায়। স্ত্রী লাকি আক্তার মারা গেছে মনে করে সে নিজেই নিজের উপর কয়েক দফা ছুরিকাঘাত করে ওই ঘরের ছিলিং ফ্যানে গামছা দিয়ে গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করে। রাতেই স্থানীয় লোকজন লাকি আক্তারকে কসবা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে এলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠায়। সেখানে অবস্থার অবনতি হলে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরন করে। রাতেই কসবা সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার আতিকুর রহমান, কসবা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ আবদুল কাদের ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন এবং রাতেই পুলিশ নিহত পারভেজ মিয়ার লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠিয়েছে।
কসবা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ আবদুল কাদের বলেন, পারিবারিক কলহের জের ধরে স্ত্রীকে উপর্যপুরি ছুরিকাঘাত করে মারা গেছে মনে করে নিজেও গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে। স্ত্রীর অবস্থা আশংকাজনক। নিহতের লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর হপসাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।
বিডি প্রতিদিন/এএম