২০১৮ সালে নির্বাচনের দায়িত্বে থাকা পুলিশ কর্মকর্তারা তাদের পদকের টাকা ফেরত দেওয়া শুরু করেছেন। গত প্রায় পাঁচ বছর বিপিএম ও পিপিএম পদকের বিপরীতে প্রতি মাসে তারা যে টাকা পুরস্কার পেয়েছিলেন, তা ফেরত নিচ্ছে পুলিশ সদর দপ্তর।
এর আগে গত ২৩ ফেব্রুয়ারি সাবেক পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনসহ ১০৩ পুলিশ কর্মকর্তার বিপিএম ও পিপিএম পদক প্রত্যাহার করা হয়। ২০১৮ সালের নির্বাচনের দায়িত্বে ছিলেন এই ১০৩ পুলিশ কর্মকর্তা।
রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সহকারী সচিব তৌছিফ আহমদ স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনে পদকগুলো বাতিল করা হয়।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত ২৪ জুন পদকের বিপরীতে পাওয়া মোট ২ লাখ ৩ হাজার ৫০০ টাকা চালানের মাধ্যমে পুলিশ সদর দপ্তরে জমা দেওয়া হয়েছে। খুলনা মহানগর পুলিশের (কেএমপি) সাবেক কমিশনার মো. মোজাম্মেল হক কমিউনিটি ব্যাংকের খুলনা শাখার মাধ্যমে ওই টাকা জমা দেন। পুলিশ সদর দপ্তরের অতিরিক্ত ডিআইজি (ফাইন্যান্স) আতিকুর রহমান এ প্রতিবেদককে বলেন, আমরা পদকের টাকা ফেরতের জন্য সারা দেশে বিভিন্ন ইউনিটে চিঠি পাঠিয়েছি। ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কর্মকর্তাদের মধ্যে যাদের পাওয়া গেছে তাদের মধ্যে কেউ কেউ টাকা ফেরত দিয়েছেন। পদক বাতিল হওয়া কর্মকর্তাদের মধ্যে রয়েছেন সাবেক আইজিপি, অতিরিক্ত আইজিপি, ডিআইজি, অতিরিক্ত ডিআইজি, পুলিশ সুপার, র্যাবের কর্নেল, লেফটেন্যান্ট কর্নেল, কমান্ডার ও উইং কমান্ডার পদমর্যাদার কর্মকর্তারা।
এদের মধ্যে বাধ্যতামূলক অবসরে যাওয়া নাম প্রকাশ্যে অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তা বলেন, টাকা ফেরত দেওয়ার জন্য সরকারের পক্ষ থেকে আদেশ আছে। তাই দিতেই হবে। এক্ষেত্রে আমরা সরকারের আদেশ যথাযথভাবে পালন করছি। ২০১৮ সালে নির্বাচনের নামে অর্থ অপচয়, আত্মসাৎ, জালিয়াতি ও জাতির সঙ্গে প্রতারণার অভিযোগ অনুসন্ধানে নেমেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। অসুন্ধানের জন্য একটি শক্তিশালী টিম গঠন করেছে সংস্থাটি। দুদক সূত্র জানায়, ২০১৮ সালের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিভিন্ন অনিয়ম, যেমন- দিনের ভোট রাতে করা, ব্যালট জালিয়াতি, অনেক কেন্দ্রে অবিশ্বাস্যভাবে ৯০ শতাংশের বেশি কাস্টিং দেখানো, ব্যাপক আর্থিক লেনদেন, ক্ষমতার অপব্যবহার করে প্রার্থীকে জেতানো ইত্যাদি নানা অভিযোগ বিভিন্ন মিডিয়ায় প্রকাশিত হয়েছে। এ ছাড়া দুদকে ওই নির্বাচন সংক্রান্ত দুর্নীতি, জালিয়াতি ও প্রতারণার পৃথক কিছু অভিযোগও জমা পড়েছে।