সংখ্যানুপাতিক প্রতিনিধিত্বের (পিআর) পদ্ধতির মতো বিষয়কে আসন্ন সংসদ নির্বাচনের জন্য প্রতিবন্ধকতা মনে করেন বিএনপির আন্তর্জাতিক সম্পর্কবিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার নাসির উদ্দিন অসীম। সম্প্রতি একটি বেসরকারি টেলিভিশনের টক শো অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।
এসময় তিনি আরও বলেছেন, প্রোপোরশনাল রিপ্রেজেন্টেশনাল (পিআর) বা সংখ্যানুপাতিক প্রতিনিধিত্ব ব্যবস্থা আসন্ন সংসদ নির্বাচনের এক ধরনের প্রতিবন্ধকতা। বাংলাদেশের বাস্তবতা কিংবা তৃতীয় বিশ্বের দেশ হিসেবে গত ৫৪ বছরে যেখানে গণতন্ত্রকেই প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিতে পারেনি সেখানে এসব বিষয় নির্বাচনের পথে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করবে।
জনগণ কিংবা ভোটাররা কোনও প্রতিবন্ধকতা তৈরি করছে না জানিয়ে তিনি বলেন, নির্বাচনের নিয়ে যে পিআর পদ্ধতির কথা বলা হচ্ছে এসব হচ্ছে নির্বাচনকে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করার জন্য। জনগণ কিংবা ভোটাররা কোনো প্রতিবন্ধকতা তৈরি করছে না। গত ১৫ বছরে দেশের মানুষ তো ভোট দিতে পারেনি। মানুষ প্রতীক্ষা করছে তারা সুন্দর পরিবেশে ভোট দেবে। কাকে দেবে সেটা তাদের বিষয়। এখন যে পিআর পদ্ধতি নিয়ে কথা বলছেন, এটা অসাংবিধানিক কথা।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের ছাত্র উপদেষ্টারাও নিরপেক্ষ নির্বাচনের অন্যতম প্রতিবন্ধক মন্তব্য করে তিনি বলেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকার হলো নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকার। তবে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার এখন নির্দলীয় না। তারা কোনো দলের প্রতিনিধিত্ব করতে পারেন না। কিন্তু ছাত্র উপদেষ্টাদের সহকর্মীরা রাজনৈতিক দল গঠন করেছেন। একজন উপদেষ্টা পদ থেকে পদত্যাগ করে দলের আহ্বায়ক হয়েছেন। তাদের মধ্য থেকে একজন উপদেষ্টাও নির্বাচন করার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছেন। এই সরকারের অধীনে নির্বাচন হলে সেই নির্বাচন নিরপেক্ষ হবে কিনা, এরকম একটা প্রশ্ন থেকে যাচ্ছে।
তিনি বলেন, আমরা বলেছি, যে দুইজন ছাত্র উপদেষ্টা আছেন তাদের পদত্যাগ করতে হবে, নির্বাচনের আগেই পদত্যাগ করা উচিত। তারা যদি রাজনীতি করতে চান, নির্বাচন করতে চান, তাহলে সরকার থেকে ওনাদের রিজাইন করা উচিত।
ব্যারিস্টার নাসির উদ্দিন অসীম বলেন, নির্বাচনে সহিংসতা যেন কম হয় সে বিষয়টা ফোকাস হওয়া উচিত। বৃহত্তর গণতন্ত্রের দেশ ভারতে নির্বাচনে একেকটা প্রদেশে একদিনে ১০০ জনের ওপরে নিহত হয়। নির্বাচনে সহিংসতা থাকবে, হয়রানি থাকবে। ভোটারদেরকে যেন কেউ ভয়ভীতি দেখাতে না পারে, ভোটকেন্দ্রে আসতে বাধা না দিতে পারে, নির্বাচনের দিন ওটাই চ্যালেঞ্জ। ভোটারা নির্ভয়ে, নির্বিঘ্নে, নির্দ্বিধায় গিয়ে ভোট দিতে পারে, সে পরিবেশটা যেন থাকে।
তিনি আরও বলেন, নির্বাচন কি ফেব্রুয়ারিতে হবে না এপ্রিলে হবে, তার দৃশ্যমান কোনো অগ্রগতি আমরা দেখিনি। প্রথম রিফর্ম করা উচিত ছিল পুলিশের মধ্যে, প্রশাসনের মধ্যে। এখন দেখলাম গত কয়েকদিনে বিভিন্ন জেলায় যারা ডিসি ছিলেন কিংবা এসপি ছিলেন তাদের ক্লোজ করা হচ্ছে বা অপেক্ষাকৃত কম গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে বসানো হয়েছে। এটা অনেক আগেই হতে পারতো।
তিনি বলেন, নির্বাচনের আগে সমস্ত সংস্কার করতে হবে, সমস্ত বিচার করতে হবে বলে প্রতিবন্ধকতাগুলো তৈরি করা হচ্ছে। বিচার কখনোই একদিনে সম্ভব না। সংস্কারও একদিনে সম্ভব না। এটা ধারাবাহিক একটা প্রক্রিয়া। এসব বলাই হচ্ছে প্রতিবন্ধকতা।
বিডি-প্রতিদিন/আব্দুল্লাহ