মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে সেপটিক ট্যাংকে নেমে আপন দুই ভাইসহ চার তরুণের মৃত্যু হয়েছে। গত বুধবার রাতে উপজেলার হরিণছড়া চা বাগানে উত্তরলাইনে এই মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে। নিহতরা হলেন- রানা পট্টনায়েক, তার ভাই শ্রাবণ পট্টনায়েক, কৃষ্ণ রবিদাস ও নিপেন ফুলমালী।
জানা যায়, সেপটিক ট্যাংকে পড়ে যাওয়া একটি মোবাইল ফোন তুলতে গিয়ে ট্যাংকের ভিতরে বিষাক্ত গ্যাসের বিষক্রিয়ার তাদের মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় রবি বুনার্জী নামে অপর একজনকে গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। পরে চিকিৎসা শেষে তিনি বাড়ি ফিরে আসেন। রাজঘাট চা বাগানের প্যানেল ইউপি চেয়ারম্যান সেলিম আহমেদ প্রত্যক্ষদর্শীর বরাত দিয়ে বলেন, প্রকৃতির ডাকে সারা দিতে রানা পট্টনায়ক রাতে তার বাড়ি সংলগ্ন পায়খানায় যায়। সেখানে তার মোবাইল ফোনটি পড়ে যায়। পরে সে কমোড গর্ত থেকে সরিয়ে ফোন খুঁজতে ট্যাংকে নেমে ভিতরে আটকা পড়ে। পরে চিৎকার শুনে তার ভাই শ্রাবণ পট্টনায়েক তাকে উদ্ধার করতে ট্যাংকে নামলে সেও আটকে যায়।
মৌলভীবাজার সদর হাসপাতালের ডা. সব্যসাচী পাল তমাল জানান, রাতে তাদের হাসপাতালে আনা হলে চারজনকে মৃত দেখা যায়। ধারণা করা যাচ্ছে সেপটিক ট্যাংকের গ্যাসের বিষক্রিয়ায় তাদের মৃত্যু হয়েছে। অন্য একজনকে উন্নত চিকিৎসার জন্য সিলেট পাঠানো হয়েছে।
হরিণছড়া চা বাগানের ব্যবস্থাপক বিকাশ সিংহা বলেন, এটি একটি দুঃখজন ঘটনা। আমরা গতরাতেই তাদেরকে হাসপাতালে পাঠানোর ব্যবস্থা করেছি। একজনকে সিলেট পাঠিয়েছিলাম সে এখন সুস্থ হয়ে বাড়িতে ফিরে এসেছে। আমরা ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের পাশে থাকব।
সহকারী পুলিশ সুপার (শ্রীমঙ্গল কমলগঞ্জ সার্কেল) আনিসুর রহমান বলেন, নিহতের পরিবার থেকে ময়নাতদন্ত ছাড়া লাশ গ্রহণ করার আবেদন করা হয়েছে। তাদের কোনো অভিযোগ নেই। আমরা সেই প্রক্রিয়ায় মৃতদেহগুলো পরিবারের কাছে হস্তান্তর করার ব্যবস্থা করছি।
শ্রীমঙ্গল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. ইসলাম উদ্দিন বলেন, আমরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। নিহত পরিবারের জন্য আমরা মানবিক সহযোগিতা করছি। এদিকে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে বিএনপি ও জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)-এর প্রতিনিধিদল।