গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জে বৈশাখী মেলার আড়ালে চলছিল জমজমাট জুয়ার আসর ও অশ্লীল নৃত্য। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে এলাকাবাসী প্যান্ডেল ভেঙে তাতে আগুন ধরিয়ে দেয়। তবে পরিস্থিতি টের পেয়ে আয়োজক ও জুয়ারীরা আগেই পালিয়ে যাওয়ায় কেউ আটক বা হতাহত হয়নি।
শুক্রবার (২৫ এপ্রিল) দিবাগত রাত সাড়ে ১০টার দিকে উপজেলার রামজীবন ইউনিয়নের কৈকাশদহ গ্রামের মটেরকুড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
স্থানীয়রা জানান, বৈশাখ উপলক্ষে কৈ কাশদহ গ্রামের একটি বিলের ফাঁকা জায়গায় সাত দিনের মেলার আয়োজন করা হয়। শুক্রবার দিনের বেলায় মেলায় কিছু দোকানপাটের সাথে একটি প্যান্ডেলে জাদু (ম্যাজিক) দেখানো হয়। কিন্তু সন্ধ্যার পর আরেকটি ঝলমলে প্যান্ডেলে চলে নাচ-গানের সাথে অশ্লীল নৃত্য। পাশাপাশি সেখানে বসানো হয় ফর-ডাবু দিয়ে জমজমাট জুয়ার আসর।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, স্থানীয় রাজনৈতিক দলের নেতাদের ছত্রছায়ায় স্থানীয় জাকির মিয়া ও গোলজার মেম্বারের নেতৃত্বে মেলার আড়ালে অশালীন নৃত্যসহ জুয়ার আসর বসায় সংঘবদ্ধ একটি চক্র। প্রশাসনের অনুমতি ছাড়াই এমন আয়োজনে স্থানীয়রা বাধা দিলেও শোনেননি আয়োজকরা। পরে রাতে উচ্চশব্দে গান-বাজনা শুনে স্থানীয় জনতা ক্ষিপ্ত হয়ে উঠেন। এক পর্যায়ে আশপাশ এলাকার লোকজনসহ বিক্ষুদ্ধ জনতা লাঠি হাতে মেলায় গিয়ে জুয়া ও অশ্লীল নৃত্যের প্যান্ডেল ভাঙচুর করেন। এরপর জুয়া খেলার সরঞ্জামে আগুন ধরিয়ে দেয়া হয়। এসময় জুয়ারীসহ আয়োজকরা দৌড়ে অন্ধাকারে পালিয়ে যায়।
এদিকে, এ ঘটনার পর বালারছিড়া বাজারে স্থানীয়রা এক প্রতিবাদ সভার আয়োজন করেন। এতে বক্তব্য রাখেন গাইবান্ধা জেলা জামায়াতের নায়েবে আমির ও সুন্দরগঞ্জ উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মাজেদুর রহমান সরকার।
তিনি বলেন, মেলার নামে জুয়া আসর ও অশ্লীল গান-নৃত্যের কারণে এলাকার পরিবেশ নষ্ট হয়ে যাচ্ছিলো। সুন্দরগঞ্জের মাটিতে কোন ধরণের অপকর্ম চলবেনা। জুয়া-যাত্রা ও মাদকের সাথে জড়িতদের ধরে প্রয়োজনে হাত-পা ভেঙে দেয়া হবে। এজন্য এলাকাবাসীকে ঐক্যবদ্ধ থাকার পাশাপাশি তিনি সংশ্লিষ্ট পুলিশ-প্রশাসনের সহযোগিতা কামনা করেন।
তিনি আরও বলেন, এলাকাবাসীকে এখন ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। আমরা চাই, প্রশাসন দ্রুত কার্যকর ব্যবস্থা নিক। অপরাধীদের হাত-পা ভেঙে দেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়ে বলছি, সুন্দরগঞ্জকে জুয়া ও অশ্লীলতা মুক্ত রাখা এখন আমাদের অঙ্গীকার।
সুন্দরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাকিম আজাদ বলেন, মেলার আয়োজন সম্পর্কে থানাকে কেউ আগে থেকে অবহিত করেনি। বিষয়টি জানার পর বিকেলেই পুলিশ পাঠানো হয় এবং তারা রাত ৯টা পর্যন্ত সেখানে দায়িত্ব পালন করে। তবে রাত ১০টার দিকে স্থানীয় জনতা একত্রিত হয়ে প্যান্ডেল ভাঙচুর করে তাতে আগুন ধরিয়ে দেয়।
তিনি আরও বলেন, মাদক ও জুয়াসহ যেকোনো ধরনের অপরাধ দমনে পুলিশ নিয়মিত অভিযান চালিয়ে যাচ্ছে। এসব অপরাধে জড়িত কাউকেই ছাড় দেওয়া হবে না।
বিডি প্রতিদিন/এএ