পটুয়াখালীতে মো. আলমগীর তালুকদার (৫০) নামের এক ব্যক্তির হাত-পা ও মুখ বাঁধা ঝুলন্ত অর্ধগলিত মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। শনিবার দুপুরে সদর উপজেলার আউলিয়াপুর ইউনিয়নের বড় আউলিয়াপুর গ্রামের শশুরবাড়ীতে নিজের তোলা বসতঘর থেকে মরদেহটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠায় পুলিশ।
নিহত আলমগীর তালুকদার (৫০) পাশর্^বর্তী জৈনকাঠি ইউনিয়নের কেশবপুর ঠ্যাংগাই গ্রামের মোজাম্মেল তালুকদারের ছেলে। নিহতের বড় ছেলে মো. রিয়াজ হোসেন (৩০) বলেন, গত ৮ এপ্রিল (মঙ্গলবার) থেকে বাবা আলমগীর তালুকদারের মোবাইল ফোনে পাচ্ছিলাম না তাই তার সঙ্গে পরিবারের সবার যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন ছিল। ধারণা করছি, সেদিনই তাকে হত্যা করা হয়েছে।
তিনি জানান, বড় আউলিয়াপুর গ্রামের মৃত কাসেম সিকদার তার নানা। আমার মা-খালারা ৬ বোন। তাদের কোন ভাই ছিল না। তাই নানার সম্পতিতেই বাবা পাকা ভবন তুলে বসবাস করতেন। রিয়াজ বলেন, আমি ও মা ঢাকায় থাকি। মা ঈদের আগের দিন বাড়ীতে আসছেন। আমি ঈদের পরের দিন বাড়ীতে আসছি। ঈদের চার দিন পর ঘটনাস্থল থেকে দুই মিনিটের পথ আমার নানা বাড়ী। সেখানে আমার খালাতো বোনের বিবাহ অনুষ্ঠানে বাবাসহ আমরা সবাই ছিলাম। এর পর গত মঙ্গলবার থেকে বাবার মোবাইল বন্ধ তাই তার সাথে যোগাযোগ করতে পারিনি কেউই। রিয়াজ বলেন, আমরা ঢাকায় থাকি তাই ওই বাড়ীতে বাবা একাই বসবাস করতেন। শনিবার সকালে আমি ও আমার মা মাটি কাটার জন্য শ্রমিক নিয়ে বাড়ীতে গিয়ে পচা গন্ধ পেয়ে ঘরের তালা ভেঙে ঢুকলে বাবার মরদেহ ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পাই। আমার বাবার সঙ্গে কারও শত্রæতা ছিল না। কে বা কারা তাকে এভাবে হত্যা করেছে, তা বুঝে উঠতে পারছি না। বাবা কোন দিন বলেনও নাই কিছু। আমার বাবার হত্যার বিচার চাই বলেন ছেলে রিয়াজ।
খবর পেয়ে সদর থানা পুলিশ, সিআইডি, ডিবি, পিবিআইসহ জেলা পুলিশের একাধিক টিম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে। পরে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন পুলিশ সুপার মো. আনোয়ার জাহিদসহ অন্য কর্মকর্তারা।
পটুয়াখালী সদর থানার অফিসার ইনচার্জ ওসি ইমতিয়াজ আহম্মেদ জানান, হাত-পা ও মুখ বাধা ঝুলন্ত অবস্থায় আলমগীর তালুকদারের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। এটি হত্যাকান্ড, তবে এখনই কিছু বলা যাচ্ছে না। লাশে যেভাবে পচন ধরেছে তাই ধারনা করা হচ্ছে চার থেকে পাঁচদিন আগে তাকে হত্যা করে ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে।
পুলিশ সুপার আনোয়ার জাহিদ বলেন, ‘ঘটনাটি সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত করা হচ্ছে। সিআইডি ও পিবিআই যৌথভাবে কাজ করছে। ঘটনার সঙ্গে যারাই জড়িত থাকুক না কেন তাদের দ্রুত আইনের আওতায় আনা হবে।’
বিডি প্রতিদিন/এএম