সাতক্ষীরার আশাশুনি উপজেলার আনুলিয়া ইউনিয়নের বিছট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় সংলগ্ন খোলপেটুয়া নদীর বেড়িবাঁধে ভয়াবহ ভাঙনে কমপক্ষে ১০টি গ্রামের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। ভেসে গেছে হাজার হাজার বিঘা মৎস্য ঘের ও ফসলি জমি।
আজ সোমবার (৩১ মার্চ) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে বিছট গ্রামের আব্দুর রহিম সরদারের চিংড়ি ঘেরের কাছ থেকে প্রায় ১৫০ ফুট বেড়িবাঁধ হঠাৎ খোলপেটুয়া নদীর গর্ভে বিলীন হয়ে যায়। এরফলে আনুলিয়া ইউনিয়নবাসীর মধ্যে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। ঈদের আনন্দ গ্রামবাসীর কাছে দুঃখে পরিণত হয়েছে।
স্থানীয় গ্রামবাসী স্বেচ্ছাশ্রমের ভিত্তিতে ভাঙ্গন পয়েন্টে বিকল্প রিংবাধ নির্মাণের চেষ্টা চালালেও তা জোয়ারের তোড়ে ভেস্তে যায়। এদিকে, বেড়িবাঁধ দ্রুত সংস্কার করা না হলে উপজেলার খাজরা, বড়দল ও প্রতাপনগরের নিম্নাঞ্চলের বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা।
বিছট গ্রামের অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক নজরুল ইসলাম জানান, সকালে তারা ঈদের নামাজ আদায় করছিলেন। নামাজ শেষে খবর পান আব্দুর রহিম সরদারের ঘেরের পাশের বেড়িবাঁধ ভেঙে গেছে। দ্রুত মসজিদের মাইকে গ্রামবাসীকে জানানো হয় এবং সবাই স্বেচ্ছাশ্রমে বিকল্প রিংবাঁধ তৈরি করতে চেষ্টা করেন। তবে তিন ঘণ্টা চেষ্টা করেও বাঁধটি রক্ষা করা সম্ভব হয়নি।
এদিকে, বিছট, বল্লবপুর, নয়াখালী, আনুলিয়া ও আশপাশের আরও ৬টি গ্রামে পানি প্রবাহিত হয়েছে। গ্রামবাসীর বাড়িঘরে পানি ঢুকেছে এবং মৎস্য খামারগুলোও প্লাবিত হয়েছে।
স্থানীয় আনুলিয়া ইউপি চেয়ারম্যান রুহুল কুদ্দুস জানান, বিছট গ্রামে বেড়িবাঁধ ভাঙনের খবর পেয়ে সাথে সাথে আমি ঘটনাস্থলে যাই। বেড়িবাঁধের প্রায় ১৫০ ফুট এলাকা জুড়ে সম্পূর্ণ খোলপেটুয়া নদীর গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। বিষয়টি আশাশুনি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও সাতক্ষীরা পানি উন্নয়ন বোর্ড বিভাগ-১ এর নির্বাহী প্রকৌশলীকে জানানো হয়েছে।
সাতক্ষীরা পাউবো বিভাগ-১ এর নির্বাহী প্রকৌশলী মো. সাখাওয়াত হোসেন জানান, বেড়িবাঁধ ভাঙ্গনের খবর পেয়ে সংশ্লিষ্টদের সেখানে পাঠানো হয়েছে। দ্রুত প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের পক্ষ থেকে জিও ব্যাগের ব্যবস্থা করা হয়েছে। এছাড়া বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।
বিডি প্রতিদিন/জামশেদ