শেরপুর জেলা শহর ও উপশহরগুলোয় দিনদিন বাড়ছে যানজট। চলাচলে প্রতিনিয়ত ভোগান্তির শিকার হচ্ছে শহরবাসী। ১৫ মিনিটের রাস্তা যেতে লেগে যায় ঘণ্টার পর ঘণ্টা। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, শেরপুরে যানজটের প্রধান কারণ ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা। এ ছাড়া ফুটপাত দখল, ভ্রাম্যমাণ দোকান, সড়কস্বল্পতা, ট্রাফিক আইন না মানা ও অপরিকল্পিত নগরায়ণে হচ্ছে যানজট। জেলা শহরের কলেজ মোড়, খড়মপুর মোড়, নিউমার্কেট, থানা মোড়, গোয়ালপট্টি মোড়, নয়আনি বাজার, হাসপাতাল রোড, খোয়ারপাড়-শাপলাচত্বর, শ্রীবরদী পৌর শহর, নকলার হলপট্টি, নালিতাবাড়ী মোড়, ব্রিজপাড়, নতুন ও পুরাতন বাজার এখন যানজটের হটস্পট।
জানা যায়, প্রতিদিন নতুন নতুন অটোরিকশা নামছে সড়কে। বাস, ট্রাক ও প্রাইভেট গাড়ি যেখানে সেখানে পার্কিং করা হচ্ছে। কোনো ধরনের প্রশিক্ষণ ছাড়াই অনেকে অটোরিকশা কিনে সড়কে নেমে পড়ছেন। গাড়ি চালানোর ক্ষেত্রে মানছেন না কোনো নিয়মনীতি। এতে একদিকে সড়কে বিশৃঙ্খলা তৈরি হচ্ছে, অন্যদিকে ঘটছে ছোটবড় দুর্ঘটনা। শেরপুর শহরে নেই পর্যাপ্ত সড়ক। যা-ও আছে অত্যন্ত সরু। নেই পর্যাপ্ত ট্রাফিকিং ব্যবস্থা। এ ছাড়া আইন না মানার প্রবণতা সড়কে যানজট সৃষ্টি করছে। সম্প্রতি এসব সংকট আরও প্রকট হয়েছে। সিএজি ও ব্যাটারিচালিত অটো-ইজিবাইক রাস্তার ওপর থামিয়ে যাত্রী ওঠানো-নামানো করা, চালকদের প্রতিযোগিতামূলক মনোভাব, ব্যাটারিচালিত অটোরিকশার বেপরোয়া চলাচল বিষিয়ে তুলেছে মানুষের জীবন। জানা যায়, দুই বছর আগে শহরের যানজট নিরসনে সকাল ৬টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত বড় ও মাঝারি গাড়ি প্রবেশ নিষিদ্ধ ছিল। পৌর কর্তৃপক্ষ অটো গাড়িগুলো লাল ও কমলা দুই রঙে ভাগ করে দিয়েছিল। এক দিন লাল গাড়ি, পর দিন কমলা গাড়ি চলাচল করত। শহরের নয়আনি কাঁচাবাজারে দিনে যান্ত্রিক গাড়ি চলার অনুমতি ছিল না। এসব সিদ্ধান্তে যানজট অনেকটা কমে ছিল। এখন এর কিছুই কার্যকর নেই। এতে সড়কে আবার বাড়ছে বিশৃঙ্খলা। জেলায় কতগুলো ব্যাটারিচালিত ইজিবাইক-অটোরিকশা চলাচল করে তার হিসাবও নেই কারও কাছে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন ট্রাফিক কর্মকর্তা জানান, শেরপুরে ৭০ হাজারের বেশি ব্যাটারিচালিত ইজিবাইক-অটোরিকশা চলাচল করছে। শেরপুরের ট্রাফিক ইন্সপেক্টর মমিনুল ইসলাম জানান, যানজট নিয়ন্ত্রণে সবাইকে আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হতে হবে। শহরের যানজট কমাতে কিছু কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। শেরপুর পৌর প্রশাসক শাকিল আহাম্মেদ জানান, যানজট কমাতে সব স্টেকহোল্ডার মিলে কিছু সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। কম সময়ের মধ্যে সিদ্ধান্তগুলো প্রয়োগ করা হবে। এতে যানজট অনেকটা নিরসন হবে।