দীর্ঘদিন ধরে সংস্কারের অভাবে বেহাল দশা লক্ষ্মীপুর পৌরসভার বেশির ভাগ সড়কের। খানাখন্দে ভরা এসব সড়কে প্রতিনিয়ত ঘটছে ছোট বড় দুর্ঘটনা। কিছু সড়কে যানবাহন চলাচল দূরের কথা এখন হেঁটে চলাচলই দায়। এতে চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন স্থানীয়রা। পৌর কর্তৃপক্ষ বলছে, আগের তুলনায় কার্যক্রম বেগবান হয়েছে। সড়ক সংস্কার ও ক্ষেত্রবিশেষ নতুন রাস্তা নির্মাণ করে পৌর নাগরিকদের স্বাচ্ছন্দ্য জীবনযাপন নিশ্চিতে কাজ চলছে। সরেজমিন লক্ষ্মীপুর পৌরসভার ২ নম্বর ওয়ার্ডের জনগুরুত্বপূর্ণ মনছুর আলী ভূঁইয়া সড়কে গিয়ে দেখা যায়, সংস্কারের অভাবে চলাচলের পুরোপুরি অনুপোযোগী। স্থানীয় মেঘনা রোড থেকে জালালিয়া মাদরাসায় যাতায়াতের পথ এটি। কয়েক বছর আগেও এ সড়ক দিয়ে যানবাহন চলাচল করত। এখন দেখে বোঝার উপায় নেই যে, এটি একটি সড়ক। সড়কটি এখন পরিত্যক্ত। অনেক স্থানে গাছগাছালিও জন্মে গেছে। আশপাশের বাসিন্দারা কোনোমতে ব্যবহার করলেও এ সড়কে যানবহন চলাচল করে না। স্থানীয় কয়েকজন বাসিন্দা জানান, পৌরসভার রেকর্ডীয় রাস্তা এটি। ২ নম্বর ওয়ার্ডের ২০-৩০ হাজার মানুষ যানবাহন নিয়ে শহরে প্রবেশের সরাসরি পথ ছিল এটি। ১৫-১৬ বছর ধরে সংস্কারের অভাবে বর্তমানে বেহাল এ সড়ক। স্থানীয়রা চরম দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন।
শুধু এ সড়কই নয়, এমন নাজুক অবস্থা পৌরসভার ১৫টি ওয়ার্ডের অন্য সড়কগুলোরও। এর মধ্যে জনগুরুত্বপূর্ণ স্থানীয় কালি কিংকর সড়ক, ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের কোরালিয়া মসজিদ রোড, ১২ নম্বর ওয়ার্ডের বাইশমারা গাজীবাড়ি সড়ক, ৭ নম্বর ওয়ার্ডের সমসেরাবাদ আবদুস সোবাহান সড়ক, তেরবেকী সড়কসহ বেশির ভাগই এখন বেহাল। এসব এলাকার বাসিন্দারা অভিযোগ করেন, ‘নিয়মিত পৌর কর দিয়ে এলেও আমরা নাগরিক সুবিধা থেকে বঞ্চিত। রাস্তাঘাটের এমন বেহাল অবস্থা। একবারেই চলাচল অনুপোযোগী। অসুস্থ ব্যক্তি কিংবা নারী-শিশু ও বয়োবৃদ্ধদের নিয়ে বাড়ি থেকে বের হওয়া কষ্টকর। ভোগান্তির শেষ নেই। কোনো ধরনের যানবাহনই চলে না এসব সড়কে। বিগত ১৫ বছরে এসব সড়কে কোনো উন্নয়নের ছোঁয়া লাগেনি।’ দ্রুত এসব রাস্তা সংস্কার ও যানবাহন চলাচলের উপযোগী করার দাবি জানান তারা।
লক্ষ্মীপুর পৌরসভার প্রশাসক জসীম উদ্দিন জানান, দীর্ঘদিন ধরে সংস্কারের অভাবে সড়কগুলোর বেহাল অবস্থা। তাছাড়া বন্যায়ও সড়কগুলোর ক্ষতি হয়েছে। বিগত সময়ের তুলনায় কার্যক্রম বেগবান রয়েছে। একটি প্রকল্পে ১৫ কোটি ২০ লাখ টাকা পেয়েছি। এতে ২১টি রাস্তার কাজ চলমান রয়েছে। এ ছাড়া অন্য এলাকায় সড়ক সংস্কার ও ক্ষেত্রবিশেষ নতুন রাস্তা নির্মাণকাজও হাতে নেওয়া হয়েছে। আশা করা যাচ্ছে, দ্রুত সময়ের মধ্যে পৌর নাগরিকদের স্বাচ্ছন্দ্য জীবনযাপন নিশ্চিতে আমরা সক্ষম হব। জানা যায়, ১৯৭৬ সালে লক্ষ্মীপুর পৌরসভা প্রতিষ্ঠিত হয়। প্রথম শ্রেণিতে উন্নীত হয় ১৯৯৬ সালে। ১৫টি ওয়ার্ড নিয়ে গঠিত এ পৌরসভার আয়তন ২৮.২৬ কিলোমিটার। বর্তমানে জনসংখ্যা দেড় লাখেরও বেশি। পৌরসভাটিতে সড়ক ২১০ কিলোমিটার। এর মধ্যে পাকা সড়ক ১৪৫ কিলোমিটার., আধাপাকা ৩৫ কিলোমিটার এবং কাঁচা সড়ক ৩০ কিলোমিটার।