চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলায় পাওনা টাকা নিয়ে বিরোধের জের ধরে ১৪ মার্চ ছুরিকাঘাতে খুন করা হয় মো. মানিক নামে এক যুবককে। পরদিন রাউজানে তর্কাতর্কির জেরে খুন হন কমর উদ্দিন নামে এক বিএনপি নেতা। এর আগে ১১ মার্চ নগরীর ইপিজেড এলাকায় পরকীয়ার জের ধরে বন্ধুর হাতে খুন হন মোহাম্মদ আইয়ুব নবী নামে এক যুবক। একই দিন আনোয়ারা উপজেলায় টিউবওয়েলের পানি নিষ্কাশনের জন্য পাইপ স্থাপন নিয়ে তর্কাতর্কির জের ধরে বড় ভাইয়ের হাতে খুন হন সালামত আলী নামে এক ব্যক্তি। চট্টগ্রামে এগুলো সবই খুনের ঘটনা। কিন্তু এ খুনের পেছনের ঘটনা খুবই সাধারণ। অর্থাৎ চট্টগ্রামে ঠুনকো ঘটনার জেরে হচ্ছে একের পর এক খুন। চলতি মাসের ১৮ দিনেই চট্টগ্রাম নগরী এবং জেলায় খুনের ঘটনা ঘটেছে ১২টি। এসব ঘটনার শিকার এবং শিকারি দুই পক্ষেই একে অপরের ঘনিষ্ঠ। সংঘটিত বেশির ভাগ ঘটনার নেপথ্য কারণ ছিল তর্কাতর্কি কিংবা পারিবারিক কলহ।
চট্টগ্রাম জেলা পুলিশের মুখপাত্র ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. রাসেল বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে জেলায় যে খুনের ঘটনা ঘটেছে, তার বেশির ভাগই ঠুনকো ঘটনার জেরে। অর্গানাইজ ক্রাইমের মতো এগুলো আগে থেকে প্রতিরোধ করা যায় না। তবে সামাজিক সচেতনতার মাধ্যমে তা প্রতিরোধ করা সম্ভব। তা প্রতিরোধে সচেতনতার দিকেই মনোযোগ দিচ্ছে পুলিশ।
সমাজ বিশ্লেষকরা বলছেন, চলতি মার্চ মাসের ১৮ দিনে চট্টগ্রাম নগরী এবং জেলার বিভিন্ন এলাকায় ১২টি খুনের ঘটনা ঘটে। এসব খুনের বেশির ভাগরই নেপথ্য কারণ ছিল পারিবারিক কলহ বা তর্কাতর্কি। এ ছাড়া পাওনা টাকা নিয়ে বিরোধ এবং পরকীয়ার বিরোধের জের ধরেও হয়েছে খুন। এসব ঘটনার শিকার ও শিকারি দুই পক্ষেই একে অপরের ঘনিষ্ঠজন। ভাইয়ের হাতে ভাই কিংবা মেয়ের স্বামীর হাতে শাশুড়ি খুন হওয়ার নজির রয়েছে একাধিক।
এর মধ্যে ৯ মার্চ আনোয়ারা উপজেলায় মেয়ের স্বামীর হাতে খুন হয়েছেন রশিদা খাতুন নামে এক নারী। ৩ মার্চ সাতকানিয়ায় মাইকে ঘোষণা দিয়ে গণপিটুনি দিয়ে হত্যা করা হয় দুজনকে। যদিও আধিপত্য এবং চাঁদাবাজির কারণে এ ঘটনা হয় বলে জানিয়েছে পুলিশ। ২ মার্চ নগরীর কোতোয়ালি থানা এলাকায় তর্কাতর্কির জের ধরে ছুরিকাঘাত করে হত্যা করা হয় এক ভবঘুরেকে। একই দিন মিরসারাই এলাকা থেকে উদ্ধার করা হয় অজ্ঞাতনামা এক নারীর লাশ। ১ মার্চ বাঁশখালীতে দুর্বৃত্তদের ছুরিকাঘাতে খুন হন জাহিদুল ইসলাম নামে এক অটোরিকশা চালক। একই দিন মিরসরাইয়ের মেয়ের স্বামীর হাতে খুন হন সবুরা খাতুন নামে এক নারী। সিএমপির দেওয়া তথ্য মতে, ২০২৪-এর আগস্ট থেকে ২০২৫ সালের ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত চট্টগ্রাম নগরীর ১৬ থানায় মোট মামলা হয়েছে ২ হাজার ৬৭টি। এর মধ্যে হত্যা মামলা হয়েছে ৪৪টি।