চট্টগ্রাম সমিতি-ঢাকার উদ্যোগে ৩২ তোপখানা রোডস্থ চট্টগ্রাম সমিতি ভবনের নিজস্ব মিলনায়তনে ‘শহীদ জিয়ার প্রথম চট্টগ্রাম, শেষ চট্টগ্রাম’ শীর্ষক দুই দিনব্যাপী দোয়া, খতমে কোরআন, দুস্থদের মাঝে খিচুরি বিতরণ কর্মসূচি ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
কর্মসূচির প্রথম দিন রবিবার দোয়া, খতমে কোরআন, দুস্থদের মাঝে খিচুরি বিতরণ কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয় এবং দ্বিতীয় দিন সোমবার সকাল ১০টায় শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের শাহাদাতবার্ষিকী উদযাপন কমিটির আহ্বায়ক চট্টগ্রাম সমিতি-ঢাকার আজীবন সদস্য সাবেক ছাত্রনেতা মীর দোস্ত মোহাম্মদ খানের সভাপতিত্বে চট্টগ্রাম সমিতির আহ্বায়ক সাবেক ছাত্রনেতা এম এ হাশেম রাজু ও যুগ্ম আহ্বায়ক নাসির উদ্দিন মিজানের পরিচালনায় আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা চট্টগ্রাম সমিতির আজীবন সদস্য আসলাম চৌধুরী।
আলোচনা সভায় আসলাম চৌধুরী বলেন, পৃথিবীর ইতিহাসে ইসলামী মূল্যবোধ, জাতীয়তাবাদী চেতনার ক্ষণজন্মা পুরুষ গুটি কয়েকজনের মধ্যে শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান বীরউত্তম অন্যতম। শহীদ জিয়ার জন্ম না হলে বাংলাদেশের মাটি মানুষ মানচিত্র ভারতীয় আধিপত্যবাদ, সাম্রাজ্যবাদ ও সম্প্রসারণবাদ থেকে রেহাই পেত না। শহীদ জিয়া মুসলিম বিশ্বের দরবারে যেখানে সংঘাত-সংঘর্ষ হয়েছে সেখানেই শান্তির বার্তা নিয়ে ছুটে গিয়েছেন। তার ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় ইরাক-ইরানের ৮ বছর ব্যাপী যুদ্ধ শেষ হয়েছিল। দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে সহযোগিতা বাড়াতে তিনি সার্ক প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। মুসলিম দেশগুলোর মধ্যে ভ্রাতৃত্ববোধ জোরদার করতে তৎকালীন সময়ে ওআইসিকে শক্তিশালী করতে ভূমিকা রেখেছিলেন।
প্রধান বক্তা আন্তর্জাতিক মানবাধিকার কমিশন বাংলাদেশ চ্যাপ্টারের অ্যাম্বাসেডর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক প্রফেসর ড. মো. মিজানুর রহমান বলেন, শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান আজও আমাদের স্মৃতিতে অম্লান। তিনি ছিলেন সততার প্রতীক, অন্তিম মুহূর্তে মুক্তির কান্ডারী, অকুতোভয় সেনা, বাংলার উন্নয়নের পৃথিকৃত। তিনি বাংলাদেশের প্রথম ব্যক্তি যিনি বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদের প্রবর্তন করেন। তিনি উপলব্ধি করেছিলেন জাতীয়তাবাদ কখনো নৃতাত্তিক গোষ্ঠী, ভাষা বা ধর্মের মধ্যে সীমাবদ্ধ হতে পারে না। এ জন্য তিনি বাংলাদেশের মধ্যে যারা অবস্থান করে, বাংলাদেশের সত্ত্বায় যারা বিশ্বাস করে তাদের সবাইকে বাংলাদেশি বলে সংজ্ঞায়িত করেছিলেন।
চট্টগ্রাম সমিতির আজীবন সদস্য প্রখ্যাত আইনজীবী রাজনীতিবিদ আব্দুল মোমেন চৌধুরী বলেন, শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান বাংলাদেশের পটভূমিতে আইনের সুশাসন, বহুদলীয় গণতন্ত্র, সামাজিক ন্যায়বিচার, সাম্য প্রতিষ্ঠায় ছিলেন আন্তরিক। তার প্রমাণ বিলুপ্ত আওয়ামী বাকশালকে পুনরায় রাজনীতির সুযোগ দেওয়া।
চট্টগ্রাম সমিতি-ঢাকার আহ্বায়ক সাবেক ছাত্রনেতা এম এ হাশেম রাজু বলেন, চট্টগ্রাম সমিতির ১১৫ বছরের ইতিহাসের এই প্রথম সমিতির উদ্যোগে স্বাধীনতার ঘোষক বিএনপি’র প্রতিষ্ঠাতা শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের শাহাদাতবার্ষিকী উদযাপন করা হলো। গত ১৭ বছর ফ্যাসিবাদী হাসিনার দালাল খুনি লুটেরারা চট্টগ্রাম সমিতি দখল করে রেখেছিল। তাদের সময়ে চট্টগ্রাম সমিতি বৃহত্তর চট্টগ্রামের আপামর জনগণের জন্য নয় বরং তাদের ব্যক্তি স্বার্থে ব্যবহৃত হয়েছে। জুলাইয়ের ঐতিহাসিক ছাত্র-জনতার বিপ্লবের পর সারাদেশের ন্যায় চট্টগ্রাম সমিতিও মুক্ত হয়েছে। আমাদের এই মুক্ত চট্টগ্রাম সমিতি চট্টগ্রামবাসীর সার্বজনীন প্রতিষ্ঠানে পরিণত হবে।
অন্যান্যদের মধ্যে আরও বক্তব্য রাখেন সাংবাদিক কামরুজ্জামান বাবলু, কবি মাহমুদুল হাসান নিজামী, ডা. সেলিনা আক্তার, হেফাজতে ইসলামী নেতা মাওলানা জসিম উদ্দিন, ড. নুরুল আলম, ড. শামছুল হক, সমিতির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক প্রফেসর ড. মুহাম্মদ মুসা খান, যুগ্ম আহ্বায়ক গুলতাজ বেগম, অ্যাডভোকেট নাজিম উদ্দিন, মো. নাছির উদ্দিন, মো. ইকবাল হোসেন, সমন্বয়ক মোহাম্মদ মুবিনুল ইসলাম, যুগ্ম সচিব মনজুর মোর্শেদ মামুন, কে এম আক্কাস, সদস্য শাহজাহান মন্টু, ইঞ্জি. কে এম ইমতিয়াজ, মো. ইসমাঈল, এস এম ফরিদ, আব্দুল আউয়াল জাহেদ, হাজী আব্দুল গণি, মোস্তফা আল ইহযায প্রমুখ।
বিডি প্রতিদিন/এমআই