আর মাত্র ক’দিন পরই পবিত্র ঈদুল আযহা বা কোরবানির ঈদ। কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে একেবারে শেষ মুহুর্তে জমজমাট হয়ে উঠেছে পশুর হাট। ক্রেতা বিক্রেতাদের পদচারণা ও বেচা বিক্রিতে জমে উঠেছে জেলার সব কটি হাট। এবারের হাটে মাঝারী প্রকৃতির গরুর চাহিদা সবচেয়ে বেশি। ক্রেতারা বলছেন- গত বছরের তুলনায় এবার কোরবানির পশুর দাম বেশি। যদিও বিক্রেতারা বলছেন- গো-খাদ্যসহ যাবতীয় দাম বেশি হওয়ায় এবার হাটে দাম কিছুটা বেশি চাওযা হচ্ছে। তবে খুভ একটা বেশি না। এদিকে- কোরবানির পশুর হাটে যেন নির্বিঘ্নে কেনা বেচা হয় সে জন্য প্রশাসন থেকে নেয়া হয়েছে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা।
সরেজমিনে পশুর হাট ঘুরে দেখা যায়- প্রতিটি হাটে খামারীরা বিভিন্ন আকারের গরু নিয়ে আসছেন। বিক্রির জন্য এসব গরু সারিবদ্ধ করে সাজিয়ে রেখেছেন বিক্রেতারা। দেশীয়ভাবে খামারে পালনকৃত এসব পশু ক্রেতাদের নজর কাড়ে। খামারে পালনকৃত একেকটি গরুর ওজন সর্বোচ্চ ২০ মন থেকে ১০ মণ ওজনের। বিক্রেতারা এসব গরুর দাম হাঁকেন ১৫ লাখ থেকে ৫ লাখ টাকা পর্যন্ত। ক্রেতারা ঘুরে ঘুরে গরু দেখেন এবং দর কষাকষি করেন। পছন্দ আর দামে বনিবনা হলে ক্রেতারা ক্রয় করছেন এসব পশু। শুধুু খামারী নয়, গ্রাম-গঞ্জে কৃষাণ-কৃষানীদের পালন করা দেশীয় জাতের অনেক গরুও আসছে হাটে। এসব গরুর দাম ১ লাখ টাকা থেকে ২ লাখ টাকা পর্যন্ত। তবে হাটে ক্রেতাদের কাছে বড় আকারের গরুর চেয়ে ছোট ও মাঝারী আকারের চাহিদা বেশি।
শহরের যশেরআব্দা গরুর হাটের সবচেয়ে আকর্ষনীয় গরু ছিল ২০ মন ওজনের মধু। গরুটির মালিক শহরের উমেদনগর এলাকার তুহিন মিয়া। তিনি সবচেয়ে বড় আকর্ষনীয় এই গরুটির দাম হাঁকান ১৫ লাখ টাকা। তবে ক্রেতারা ১০ লাখ টাকা পর্যন্ত গরুটি দাম বলেছেন। চাহিদামতো দাম না পাওয়ায় গরুটি তিনি বিক্রি করেন নি। এছাড়া আকর্ষনীয় আরো কয়েকটি গরু তিনি নিয়ে আসেন হাটে। খামারী সাব্বির আহমেদও তার খামারে পালনকৃত কয়েকটি গরু নিয়ে আসেন। গরুগুলো আকর্ষনীয় থাকায় ক্রেতাদের নজর কাড়ে। এছাড়াও দেশীয় জাতের প্রতিটি গরু ওই নজর কেড়েছে ক্রেতাদের।
ক্রেতা আশরাফুল ইসলাম বলেন- বাজারে এসেছি গরু কিনতে। হাট ঘুরে দেখছি। এবার দাম কিছু টা বেশি। পছন্দ আবার বাজেটে মিললে কিনব। সুজন মিয়া বলেন- আরো দুই একটা হাট রয়েছে। দেখছি শেষ সময়ে এসে দামে দরে বনলে কিনব। রুবেল মিয়া বলেন- দামে দরে বনে যাওয়ায় মাঝারি সাইজের একটি গরু ১ লাখ ৩৫ হাজার টাকা কিনেছি। বিক্রেতা রফিক মিয়া বলেন- এবার হাটে এখন পর্যন্ত ২৫টি গরু নিয়েছিলাম। এখন পর্যন্ত ১৫টি বিক্রি করেছি। আরো ১০টি গরু রয়েছে। আশা করছি ঈদের আগে ওই সবকটি বিক্রি করে দিতে পারব। সাব্বির আহমেদ বলেন- এবার মনে হচ্ছে গত বছরের চেয়ে কিছুটা কম গরু বিক্রি হচ্ছে। তবে শেষ সময়ে বাড়তে পারে।
হবিগঞ্জ পুলিশ সুপার এ.এন.এম সাজেদুর রহমান বলেন, ‘আমাদের মূল লক্ষ্য হলো, ঈদের আগে ও পরে গবাদি পশুর হাটগুলোতে শান্তিপূর্ণ ও সুষ্ঠু পরিবেশ বজায় রাখা, যাতে সবাই নিরাপদে এবং নির্বিঘ্নে পশু ক্রয়-বিক্রয় করতে পারেন। ক্রেতা-বিক্রেতাদের সঙ্গে যাতে কেউ প্রতারণা করতে না পারে সে লক্ষ্যে পুলিশের কয়েকটি টিম কাজ করছে’।
বিডি প্রতিদিন/এএম