গম ফসলের মারাত্মক রোগ গম ব্লাস্ট দ্রুত শনাক্তকরণের জন্য উদ্ভাবিত কিটের ব্যবহারিক প্রয়োগের কার্যকারিতা যাচাই শীর্ষক একটি প্রশিক্ষণ কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়েছে গাজীপুর কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে (গাকৃবি)।
বৃহস্পতিবার (৬ নভেম্বর) সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের পুরাতন অডিটোরিয়ামে আয়োজিত এ কর্মশালাটি পরিচালনা করে ইনস্টিটিউট অব বায়োটেকনোলজি অ্যান্ড জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং (আইবিজিই)। ‘Disease Early Warning System (DEWAS)-Wheat Blast Diagnostic’ প্রকল্পের প্রধান গবেষক প্রফেসর ড. মো. তোফাজ্জল ইসলামের সার্বিক তত্ত্বাবধানে কর্মশালাটি অনুষ্ঠিত হয়।
কর্মশালায় আলোচিত হয় যে, নবউদ্ভাবিত এই কিটের মাধ্যমে গম ব্লাস্ট সৃষ্টিকারী ছত্রাক Magnaporthe oryzae Triticum (MoT) মাত্র ৩০ মিনিটে শনাক্ত করা সম্ভব। পিসিআরডি (PCRD) স্ট্রিপ পদ্ধতিভিত্তিক এই প্রযুক্তি দ্রুত, সহজ, সাশ্রয়ী ও নির্ভরযোগ্যভাবে কাজ করতে সক্ষম। প্রতিটি নমুনা পরীক্ষায় খরচ হয় মাত্র ৩০০–৪০০ টাকা।
দিনব্যাপী তিন পর্বের এ কর্মশালার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন গাজীপুর কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. জিকেএম মোস্তাফিজুর রহমান। সভাপতিত্ব করেন আইবিজিই’র পরিচালক অধ্যাপক ড. শাহ মোহাম্মদ নাইমুল ইসলাম। বিশেষ অতিথি ছিলেন গাকৃবির প্রো–ভিসি প্রফেসর ড. এম. ময়নুল হক ও ট্রেজারার প্রফেসর ড. মো. সফিউল ইসলাম আফ্রাদ।
কর্মশালায় বারি, বিরি, বিএডিসি, বিজেআরআই, ওএমসি হেলথ কেয়ার, বিডব্লিউএমআরআই, এসিআই, অ্যাপেক্স বায়োফার্টিলাইজার, লালতীর, সুপ্রীম সিড, ব্র্যাক সিডসহ বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়, জাতীয় গবেষণা প্রতিষ্ঠান, আন্তর্জাতিক সংস্থা ও শিল্পখাতের প্রায় ৭০ জন প্রতিনিধি অংশগ্রহণ করেন।
উদ্বোধনী পর্বে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন প্রকল্পের প্রধান গবেষক প্রফেসর ড. মো. তোফাজ্জল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘এই প্রযুক্তি মাঠ পর্যায়ে কৃষকদের ব্যবহারের উপযোগী। এটি সীমান্ত, বিমানবন্দর ও উদ্ভিদ কোয়ারেন্টাইন কেন্দ্রেও দ্রুত রোগ শনাক্তে ব্যবহার করা যাবে। ভবিষ্যতে এই প্রযুক্তি অন্যান্য ফসলের রোগ নির্ণয়ের ক্ষেত্রেও মডেল হিসেবে কাজ করবে।’
প্রধান অতিথি তাঁর বক্তব্যে বলেন, ‘গাকৃবিতে আন্তর্জাতিক মানের বিজ্ঞানীরা কাজ করছেন বলেই এই বিশ্ববিদ্যালয় বিভিন্ন আন্তর্জাতিক র্যাংকিংয়ে প্রথম সারিতে অবস্থান করছে। গম ব্লাস্ট শনাক্তকরণ কিটের মাধ্যমে দ্রুত রোগ সনাক্ত হওয়ায় সময়মতো প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা নেওয়া সম্ভব হবে, যা দেশের গম উৎপাদন ও খাদ্য নিরাপত্তা রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।’
দ্বিতীয় পর্বে কিটের কার্যকারিতা, পরীক্ষণ পদ্ধতি ও মাঠ পর্যায়ের ব্যবহার নিয়ে হাতে–কলমে প্রশিক্ষণ প্রদান করেন আইবিজিই’র সহযোগী অধ্যাপক ড. দীপালী রাণী গুপ্তা। এরপর প্রফেসর ড. তোফাজ্জল ইসলামের নেতৃত্বে অনুষ্ঠিত হয় প্রাণবন্ত প্রশ্নোত্তর পর্ব। সার্টিফিকেট প্রদান অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে দিনব্যাপী এ গুরুত্বপূর্ণ ও ফলপ্রসূ কর্মশালার সমাপ্তি ঘটে।
বিডি-প্রতিদিন/জামশেদ