৩৬ বছর পর রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (রাকসু) নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হয়েছে। এতে ১৫ সেপ্টেম্বর ভোট অনুষ্ঠিত হবে। সোমবার বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট ভবনে অনুষ্ঠিত এক সভায় এ ঘোষণা দেওয়া হয়। তবে সুষ্ঠু নির্বাচন নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেছে শাখা ছাত্রদল ও ছাত্রফ্রন্ট।
প্রধান নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক আমজাদ হোসেন বলেন, কিছু জটিলতা থাকায় নির্ধারিত সময়ের পর তফসিল ঘোষিত হলো। তবে কমিশন তফসিল অনুসারে যথাসময়ে কাজ শেষ করতে তৎপর থাকবে।
তফসিল ঘোষণা অনুসারে, ৩১ জুলাই নির্বাচনের আচরণবিধি প্রকাশ, ৬ আগস্ট খসড়া ভোটার তালিকা, ৭, ১০, ১২ আগস্ট আপত্তি গ্রহণ, ১৪ আগস্ট চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশ, ১৭ আগস্ট থেকে মনোনয়ন বিতরণ, ২১-২৫ আগস্ট মনোনয়ন দাখিল, ২৭-২৮ আগস্ট মনোনয়ন বাছাই, ৩১ আগস্ট প্রার্থীর খসড়া তালিকা প্রকাশ, ২ সেপ্টেম্বর মনোনয়ন প্রত্যাহার, ৪ সেপ্টেম্বর চূড়ান্ত প্রার্থীর তালিকা প্রকাশ, ১৫ সেপ্টেম্বর ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে।
তফসিল ঘোষণায় রাকসু ৩৫ বছরের সংকট কাটিয়ে উঠবে বলে মনে করছেন শিবিরসহ বেশকিছু সামাজিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ। তবে সুষ্ঠু নির্বাচনে শঙ্কা প্রকাশ করেছে শাখা ছাত্রদল ও সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্ট।
শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক সুলতান আহমেদ রাহী বলেন, এই প্রশাসন জামায়াত-শিবিরের কাছে জিম্মি। সেই সংগঠনের ইচ্ছার প্রতিফলন ঘটাতে চায় প্রশাসন। আমরা তফসিল ঘোষণার অনুষ্ঠান সম্পর্কে অবগতই নয়। আমরা লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরিতে যেসব দাবি জানিয়েছিলাম, সেগুলো প্রশাসন আমলেই নেয়নি। এমনকি সম্প্রতি অ্যালামনাই নির্বাচনে জামাতপন্থী একক নির্বাচন ও প্রশাসনের ভূমিকা যথেষ্ট প্রশ্নবিদ্ধ। সার্বিক বিষয় নিয়ে একটি সুষ্ঠু নির্বাচন নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করছি।
সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্টের আহ্বায়ক ফুয়াদ রাতুল বলেন, দীর্ঘ দিনের আন্দোলনের ফল রাকসু নির্বাচন। এ নির্বাচনকে স্বাগত জানাই। তবে রেজিস্ট্রারের বাড়িতে ককটেল বিস্ফোরণ, কোরআন পোড়ানো ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তের অভাব, এমনকি রুয়া নির্বাচনে প্রশাসনের দুর্বল আমাদের শঙ্কিত করে। ফলে প্রশাসন যতদ্রুত নিজেদের অবস্থা পরিষ্কার করবে, শিক্ষার্থী কাছে ততই গ্রহণযোগ্যতা বাড়বে৷
এর আগে, জুনের শেষ সপ্তাহে রাকসু নির্বাচনের কথা থাকলেও বিভিন্ন জটিলতায় সেটা কয়েক দফা পিছিয়েছে নির্বাচন কমিশন।
উল্লেখ্য, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার প্রায় এক দশক পর ১৯৬২ সালে রাকসু প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। এরপর মোট ১৪টি নির্বাচন হয়। সর্বশেষ রাকসু নির্বাচন হয়েছিল ১৯৮৯ সালে। এরপর ৩৬ বছর ধরে রাকসু নির্বাচন হয়নি।
বিডি প্রতিদিন/আরাফাত