কয়েক মাসব্যাপী অচলাবস্থার পর অবশেষে একটি বাণিজ্য চুক্তিতে উপনীত হয়েছে বিশ্বের দুই প্রধান অর্থনৈতিক শক্তি যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)।
স্কটল্যান্ডে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ভন ডের লেনের মধ্যে মেক-অর-ব্রেক আলোচনার পর এই চুক্তি সম্পাদিত হয়।
চুক্তি অনুযায়ী, ইইউ পণ্যের উপর যুক্তরাষ্ট্র ১৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করবে, যা ট্রাম্পের পূর্বের ৩০% হুমকির অর্ধেক। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ঘোষণা করেছেন যে ২৭ সদস্যের এই ব্লক যুক্তরাষ্ট্রের রপ্তানিকারকদের জন্য নির্দিষ্ট কিছু পণ্যে শূন্য শুল্কে তাদের বাজার উন্মুক্ত করবে।
ভন ডের লেনও এই চুক্তিকে স্বাগত জানিয়েছেন। তিনি বলেন, এটি উভয় মিত্রের জন্য স্থিতিশীলতা আনবে, যারা সম্মিলিতভাবে বিশ্ব বাণিজ্যের প্রায় এক-তৃতীয়াংশের অংশীদার।
ট্রাম্প বিশ্ব অর্থনীতিকে নতুন করে সাজাতে এবং আমেরিকান বাণিজ্য ঘাটতি কমাতে প্রধান মার্কিন বাণিজ্য অংশীদারদের বিরুদ্ধে শুল্ক আরোপের হুমকি দিয়েছিলেন। ইইউ ছাড়াও, তিনি যুক্তরাজ্য, জাপান, ইন্দোনেশিয়া এবং ভিয়েতনামের সাথে শুল্ক চুক্তি স্বাক্ষর করেছেন, যদিও তার ৯০ দিনে ৯০টি চুক্তি করার লক্ষ্য পূরণ হয়নি।
উভয় পক্ষই এই চুক্তিকে নিজেদের বিজয় হিসেবে দাবি করতে পারে। রবিবার সাউথ আয়ারশায়ারের টার্নবেরি গল্ফ কোর্সে ট্রাম্প এবং ভন ডের লেনের মধ্যে ব্যক্তিগত আলোচনার পর চুক্তিটি ঘোষণা করা হয়। স্কটল্যান্ডে পাঁচ দিনের সফরে থাকা ট্রাম্প ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্টের সাথে সংক্ষিপ্ত বৈঠকের পর বলেন, আমরা একটি চুক্তিতে পৌঁছেছি। এটি সবার জন্য একটি ভালো চুক্তি। তিনি আরও যোগ করেন, এটি আমাদের আরও কাছাকাছি আনবে। ভন ডের লেনও এটিকে কঠিন আলোচনার পর একটি বিরাট চুক্তি হিসেবে প্রশংসা করেছেন।
চুক্তি অনুযায়ী, ট্রাম্প বলেছেন যে ইইউ যুক্তরাষ্ট্রে ৬০০ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ বাড়াবে, শত শত বিলিয়ন ডলারের আমেরিকান সামরিক সরঞ্জাম ক্রয় করবে এবং ৭৫০ বিলিয়ন ডলার জ্বালানি খাতে ব্যয় করবে। ভন ডের লেন বলেন, আমেরিকান তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস, তেল এবং পারমাণবিক জ্বালানিতে এই বিনিয়োগ ইউরোপের রাশিয়ান বিদ্যুৎ উৎসের উপর নির্ভরতা কমাতে সাহায্য করবে। তিনি ব্যক্তিগতভাবে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকে তার ব্যক্তিগত প্রতিশ্রুতি এবং এই অগ্রগতি অর্জনে তার নেতৃত্বের জন্য ধন্যবাদ জানান। তিনি বলেন, তিনি একজন কঠিন আলোচক, তবে তিনি একজন চুক্তি-প্রণেতাও। মার্কিন প্রেসিডেন্ট আরও বলেন, ইস্পাত ও অ্যালুমিনিয়ামের উপর বিশ্বব্যাপী তার আরোপিত ৫০ শতাংশ শুল্ক বহাল থাকবে।
ইইউ-এর জন্য, শুল্ক আরও খারাপ হতে পারত; এটি যুক্তরাজ্যের ১০ শতাংশ শুল্ক হারের মতো ভালো না হলেও, জাপানের সাথে ১৫% হারের সমান।
সূত্র: বিবিসি
বিডি প্রতিদিন/নাজমুল