‘পড়িলে বই আলোকিত হই, না পড়িলে বই অন্ধকারে রই’-এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে বসুন্ধরা শুভসংঘের সিদ্ধিরগঞ্জ থানা শাখার উদ্যোগে অনুষ্ঠিত হলো এক অনন্য সাহিত্য আড্ডা। শুক্রবার সকালে আয়োজিত এ অনুষ্ঠান সাহিত্যপ্রেমী তরুণদের প্রাণের মেলবন্ধনে রূপ নেয়।
অনুষ্ঠানে কাজী নজরুল ইসলামের রচনাবলীর উপর আলোচনা ও সাম্যবাদী কাব্যগ্রন্থ থেকে আবৃত্তি করা হয়। পাশাপাশি সাহিত্যের নানা দিক ও সমকালীন প্রেক্ষাপটে তার গুরুত্ব নিয়ে আলোচনা হয়। তরুণদের অংশগ্রহণে প্রাণবন্ত এই আড্ডা ছিল চিন্তার খোরাক এবং মননশীলতার বিকাশের এক উজ্জ্বল উদাহরণ।
বাংলা সাহিত্যে কাজী নজরুল ইসলাম এক অনন্য প্রতিভা। তিনি কবি, গান-রচয়িতা, নাট্যকার, প্রাবন্ধিক ও ঔপন্যাসিক-সবক্ষেত্রেই স্বকীয়তা দেখিয়েছেন। তার রচনা সংগ্রহ বিস্তৃত ও বহুমাত্রিক। বিশেষ করে তার কবিতা ও গান বাংলা জাতির মুক্তি-চেতনা, প্রতিবাদ-স্পৃহা এবং মানবমুক্তির বার্তা দিয়েছে।
কাজী নজরুল ইসলামের রচনা আমাদের সামনে এক সর্বজনীন সাহিত্যকীর্তি উন্মোচন করে, যেখানে প্রেম ও বিদ্রোহ, ভক্তি ও প্রতিবাদ, দুঃখ ও আশার সম্মিলন ঘটেছে। তার সাম্যবাদী কাব্যগ্রন্থ সামাজিক অসাম্য ও বৈষম্যের বিরুদ্ধে কবিতার ভাষায় এক সুস্পষ্ট প্রতিবাদপত্র। এই কাব্যগ্রন্থের মাধ্যমে তিনি দেখিয়েছেন, সাহিত্য শুধু সৌন্দর্যচর্চার মাধ্যম নয়, বরং শোষণ-বঞ্চনার বিরুদ্ধে প্রতিবাদের হাতিয়ারও হতে পারে।
ঢাকা মহানগরের সমন্বয়ক আব্দুল হান্নান মিল্টনের নির্দেশনায় এবং শাখার সভাপতি খান শাহরিয়ার ফয়সালের সার্বিক তত্ত্বাবধানে অনুষ্ঠানটি সফলভাবে সম্পন্ন হয়। এ সময় উপস্থিত ছিলেন শাখার সহসভাপতি হাবিবুল বাশার সুজন, সাধারণ সম্পাদক সামিদা আলম, পাঠচক্র সম্পাদক নুসরাত জাহান অথৈসহ সদস্য তাবাসসুম, জান্নাতুল ফেরদৌস, লামিয়া আমিন, তানভীর গাজী, সামির, নোমান, সিনথিয়া ইসলাম, ইয়াসিন আহমেদ, তাসরিন হোসেন রাফি, তুলনা আক্তার মৌরিন প্রমুখ।
বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কথাসাহিত্যিক তারিকুল ইসলাম ও শাখার শুভাকাঙ্ক্ষী সাবিকুন নাহার সোনালীসহ আরও অনেকে।
আয়োজন সম্পর্কে জানতে চাইলে সভাপতি খান শাহরিয়ার ফয়সাল বলেন, ‘মেধা ও মননশীলতা বিকাশে এই ধরনের ব্যতিক্রমী আয়োজন বারবার হোক।’
এই আয়োজন তরুণদের সাহিত্যের প্রতি আগ্রহ বাড়ানোর পাশাপাশি জ্ঞানচর্চা ও পাঠাভ্যাসে নতুন মাত্রা যোগ করবে বলে আয়োজকরা আশা প্রকাশ করেন।
বিডি প্রতিদিন/এমআই