বান্দরবানে বসুন্ধরা শুভসংঘের উদ্যোগে অনুষ্ঠিত হলো এক প্রাণবন্ত ও বর্ণিল সাহিত্য পাঠচক্র। তরুণ সমাজকে বইয়ের প্রতি আগ্রহী করে তোলা, পাঠাভ্যাস গড়ে তোলা এবং সাহিত্যচর্চায় নতুন প্রাণ সঞ্চার করতেই এ আয়োজনে স্থানীয় তরুণ, শিক্ষার্থী ও সাহিত্যবিষয়ক আগ্রহীদের মিলনমেলা ঘটে।
অনুষ্ঠানটি অনুষ্ঠিত হয় জেলার একটি মনোরম স্থানে। আয়োজনটিকে ঘিরে অংশগ্রহণকারীদের মাঝে বই, লেখক পরিচিতি, সাহিত্য ভাবনা ও ব্যক্তিগত পাঠ–অনুভূতি বিনিময়ের চমৎকার পরিবেশ সৃষ্টি হয়।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বান্দরবান বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রভাষক অধ্যাপক মোহাম্মদ ওয়াহিদুর রহমান। তিনি বলেন,‘সাহিত্য মানুষের হৃদয়, চিন্তা ও চেতনাকে উন্মুক্ত করে। তরুণ প্রজন্মকে মানবিক মূল্যবোধ ও জ্ঞানচর্চায় সম্পৃক্ত করতে পাঠচক্র অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। বসুন্ধরা শুভসংঘের মতো সংগঠনের এ ধরনের উদ্যোগ সময়োপযোগী ও প্রশংসনীয়।’
বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বসুন্ধরা শুভসংঘ পার্বত্য অঞ্চল সমন্বয়ক ও বান্দরবান জেলা সভাপতি উয়ই সিং মার্মা। তিনি তরুণদের পাঠসংস্কৃতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন,‘ডিজিটাল বিনোদনের যুগে তরুণদের পাঠাভ্যাস কমে যাচ্ছে। সাহিত্য পাঠচক্র তাদের মানসিক বিকাশে, সৃজনশীলতা বাড়াতে এবং সমাজ ভাবনাকে দৃঢ় করতে কার্যকর ভূমিকা রাখবে।’
তিনি আরও জানান, পার্বত্য অঞ্চলে শিক্ষা, সংস্কৃতি ও মানবিক উদ্যোগে শুভসংঘ নিয়মিত বিভিন্ন কর্মসূচি পরিচালনা করে যাচ্ছে।
পাঠচক্রকে ‘মনের সমবায়’ হিসেবে উল্লেখ করে সংগঠনের সাংগঠনিক সম্পাদক উ অং সিং মার্মা বলেন, ‘পাঠচক্র শুধু বই পড়ার আয়োজন নয়; এটি এক সামাজিক ও বৌদ্ধিক উৎসব। এখানে সবাই নিজের শেখা ভাগ করে নেয়, আবার অন্যদের থেকে শেখার সুযোগও তৈরি হয়। পাঠ্যবইয়ের গণ্ডি ছাড়িয়ে জীবনবোধ, মূল্যবোধ, সংস্কৃতি ও অভিজ্ঞতা সব মিলেই পাঠচক্রকে সমৃদ্ধ করে।’
বিষয়ভিত্তিক আলোচনা ও মতবিনিময় আয়োজনে অংশগ্রহণকারীরা বিভিন্ন সাহিত্যকর্ম পাঠ, বিশ্লেষণ, মতবিনিময় ও তা নিয়ে স্বাধীন আলোচনায় অংশ নেন। তরুণদের সাহিত্য অনুরাগ, অংশগ্রহণ ও প্রাণবন্ত উপস্থিতি পুরো আয়োজনকে উজ্জীবিত করে তোলে। অনুষ্ঠান শেষে অংশগ্রহণকারীদের হাতে বই ও সাহিত্য উপহার তুলে দেওয়া হয়। আয়োজকরা জানান, ভবিষ্যতে আরও বৃহৎ পরিসরে সাহিত্য, সংস্কৃতি ও শিক্ষামূলক কর্মসূচি আয়োজনের পরিকল্পনা রয়েছে।
এবারের পাঠচক্রে আরও অংশ নেন বসুন্ধরা শুভসংঘ বান্দরবান জেলা শাখার সদস্য শান্ত চিচি, রবিন তঞ্চঙ্গ্যা, শিমূল তঞ্চঙ্গ্যা, উ অং সিং মার্মা, অং অং মার্মা, স্বর্ণা চাকমা, নুপুর ত্রিপুরা, মৈএীময় চাকমা, উ মং হ্লা মার্মাসহ স্থানীয় তরুণ-তরুণীরা।
বিডি-প্রতিদিন/আশফাক