মিরপুর-২ নম্বরের শিয়ালবাড়ি বস্তিবাসীর অনেকেরই জানাশোনা পরিচিত মুখ বসুন্ধরা শুভসংঘ রূপনগর থানার বন্ধুরা। নানা ধরনের সহায়তা নিয়ে এই বস্তিতে প্রায়শই হাজির হন তারা। বস্তিবাসী তাদের আদর করে ডাকে 'শুভসংঘের মামা'।
মঙ্গলবার (১৮ মার্চ) ইফতারের পূর্ব মুহূর্তে মিরপুর ২নং শিয়ালবাড়ি বস্তিতে হঠাৎ হাজির হয়েছেন বসুন্ধরা শুভসংঘ রূপনগর থানার বন্ধুরা। সুবিধাবঞ্চিত মানুষগুলো তাদের দেখেই বুঝতে পেরেছেন কিছু একটা নিয়ে এসেছেন। তাদের দেখেই ছুটে আসে শিশু থেকে বৃদ্ধ। শুভসংঘের বন্ধুরা পরম মমতায় তাদের হাতে তুলে দিয়েছেন ইফতার সামগ্রী ও পানির বোতল। ইফতার সামগ্রীতে ছিল খেজুর, মাল্টা, জিলাপি, বিরিয়ানি ও সালাদ।
রুনা নামের এক নারী এসেছেন তার দুই বছরের বাচ্চাকে কোলে নিয়ে। তিনি বসুন্ধরা শুভসংঘের দেওয়া ইফতার পেয়ে বলেন, 'আমরা গরীব মানুষ। ভালা খাওন দিয়া ইফতার করনের সামর্থ্য নাই। তয় বসুন্ধরা শুভসংঘের মামারা সব সময় ভালা ভালা জিনিস নিয়া আহে। আইজকা ইফতার পাইয়া খুব খুশি লাগতাছে। মজা কইরা ইফতার করবার পারমু।'
বস্তির আশেপাশে শ্রমজীবী মানুষের মাঝেও ইফতার সামগ্রী বিতরণ করেন বসুন্ধরা শুভসংঘ রূপনগর থানার বন্ধুরা। শ্রমজীবী মানুষগুলো ইফতার পেয়ে আনন্দ প্রকাশ করেন।
রোজা রেখে সারাদিন রিকশা চালিয়েছেন আক্কাস মিয়া। এখন আর যাত্রী টানবেন না। শরীরের ঘাম এখনো শুকায়নি। আর কিছুক্ষণ পরেই আযানের ধ্বনি ভেসে আসবে। আজ কি দিয়ে ইফতার করবেন তাই ভাবছিলেন। ইফতার যোগার করতে যাবেন এমন সময় বসুন্ধরা শুভসংঘের বন্ধুরা তার হাতে হঠাৎ ইফতার সামগ্রী ও পানি তুলে দেন। ইফতার পেয়ে তিনি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বলেন, 'আইজ আমার টেহা বাঁইচা গেলো। খরচের সাথে আর পারা যায় না। আপনেগো খাবার পেট ভইরা খাইতে পারমু। গায়ে শক্তি পামু। ধন্যবাদ আপনেগো।'
ইফতার বিতরণে উপস্থিত ছিলেন বসুন্ধরা শুভসংঘ রূপনগর থানার সভাপতি শাইমুল আজাদ চয়ন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সাদমান তাওছিফ, সমাজ কল্যাণ সম্পাদক মাজেদুর রহমান, দপ্তর সম্পাদক আবির হোসেন, সদস্য সায়মন প্রমুখ।
বসুন্ধরা শুভসংঘ রূপনগর থানা শাখার সভাপতি চয়ন বলেন, 'আমাদের লক্ষ্য হলো সুবিধাবঞ্চিত মানুষের মুখে হাসি ফোটানো এবং রমজানের আনন্দ তাদের সঙ্গেও ভাগ করে নেওয়া। ভবিষ্যতে এমন আরও উদ্যোগ নেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে।'
বিডি প্রতিদিন/মুসা