সৌদি আরব দ্রুতগতিতে গেমিং ও ইস্পোর্টস খাতে নিজেদের একটি বৈশ্বিক কেন্দ্রে পরিণত করার পথে হাঁটছে। সম্প্রতি রিয়াদে অনুষ্ঠিত 'ইস্পোর্টস ওয়ার্ল্ড কাপ' দেশটির এই উদ্যোগের অন্যতম বড় উদাহরণ। আন্তর্জাতিক মানের এই টুর্নামেন্টে অংশ নিয়েছে ৮৪টি দেশের ২ হাজারের বেশি প্রতিযোগী।
দর্শকদের উপচে পড়া ভিড়ে জমজমাট হয়ে ওঠে টুর্নামেন্টের ডোটা ২ ফাইনাল, যেখানে মুখোমুখি হয়েছিল টিম স্পিরিট এবং টিম ফ্যালকনস। ভক্তদের উচ্ছ্বাস আর টানটান উত্তেজনায় মুখর হয়ে ওঠে রিয়াদের গেমিং ভেন্যুগুলো।
ইস্পোর্টস ওয়ার্ল্ড কাপ ফাউন্ডেশনের চিফ অপারেটিং অফিসার মাইক ম্যাকক্যাব বলেন, আমাদের একটি জাতীয় গেমিং ও ইস্পোর্টস কৌশল আছে, যা ভিশন ২০৩০-এর একটি মূল স্তম্ভ। সরকারের সক্রিয় সহযোগিতা এবং জনগণের গভীর আগ্রহ—এই দুটি মিলেই সৌদি আরবকে আদর্শ গেমিং গন্তব্যে পরিণত করছে।
স্থানীয় গেমার হাসান আল হিমইয়ারি জানান, সম্প্রতি গেমিং সচেতনতা অনেক বেড়েছে। এখন প্রায় প্রতিটি শিশু বা কিশোরেরই কোনো না কোনো প্রিয় গেম রয়েছে।
চলমান ইস্পোর্টস ওয়ার্ল্ড কাপ চলবে ২৪ আগস্ট পর্যন্ত। বিশাল এই আয়োজনের পুরস্কার তহবিল ৭০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার, যা বিশ্বের সবচেয়ে বড় গেমিং প্রতিযোগিতাগুলোর মধ্যে অন্যতম।
এই খাতকে ঘিরে সৌদি আরবের পরিকল্পনাও যথেষ্ট বিস্তৃত। দেশটির ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমানের নেতৃত্বাধীন ভিশন ২০৩০-এর আওতায় খেলাধুলা, গেমিং ও প্রযুক্তি খাতে সরকার ব্যয় করছে শত শত বিলিয়ন ডলার, যা অর্থনীতিকে তেল-নির্ভরতা থেকে সরিয়ে আনতে সাহায্য করবে।
২০২২ সালে সৌদি আরবের পাবলিক ইনভেস্টমেন্ট ফান্ডের মালিকানাধীন স্যাভি গেমস গ্রুপ ঘোষণা দেয়, তারা গেমিং খাতে প্রায় ৩৭.৮ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করবে। এই বিনিয়োগের লক্ষ্য হলো ২০৩০ সালের মধ্যে ২৫০টি স্থানীয় গেম কোম্পানি প্রতিষ্ঠা, ৩৯ হাজার কর্মসংস্থান সৃষ্টি এবং জিডিপিতে গেমিং খাতের অবদান ৫০ বিলিয়ন রিয়ালে উন্নীত করা।
বিশ্লেষকদের মতে, সৌদি আরবের এই পরিকল্পনা শুধু মধ্যপ্রাচ্য নয় বরং গোটা বিশ্বে ইস্পোর্টস শিল্পে বড় ধরনের পরিবর্তন এনে দিতে পারে।
বিডি প্রতিদিন/নাজমুল