বাংলাদেশ ব্যাংকের সব স্তরের কর্মকর্তা–কর্মচারীদের এখন থেকে ফরমাল পোশাকে অফিস করতে হবে। নারী কর্মকর্তা–কর্মচারীদের শাড়ি, সালোয়ার–কামিজ, ওড়না ও অন্যান্য পেশাদার শালীন পোশাক পরতে হবে। শর্ট স্লিভ ও লেংথের ড্রেস; তথা ছোট হাতা ও ছোট দৈর্ঘ্যর পোশাক ও লেগিংস পরা যাবে না। আর পুরুষদের ফরমাল শার্ট, প্যান্ট, জুতা পরে অফিস করতে হবে। তারা জিন্স বা গ্যাবার্ডিন প্যান্ট পরে আর অফিসে আসতে পারবেন না।
গত ২১ জুলাই এ সংক্রান্ত একটি অফিস আদেশ জারি করেছে বাংলাদেশ ব্যাংকের মানবসম্পদ বিভাগ। বুধবার আদেশটি সব বিভাগ ও অফিসে বিতরণ করা হয়েছে।
নির্দেশনায় ফরমাল জুতা, সাদামাটা হেডস্কার্ফ বা হিজাব পরার বিষয়ে উল্লেখ করা হয়েছে। কর্মকর্তারা নির্দেশনা মেনে চলছেন কিনা তা তদারকির জন্য একজন করে কর্মকর্তা মনোনয়ন করতে হবে। কেউ এ নির্দেশনার ব্যতয় ঘটিয়ে অফিসে আসলে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা বা কর্মচারীর বিরুদ্ধে শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগ আনতে বলা হয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক আরিফ হোসেন খান গণমাধ্যমকে বলেন, কেন্দ্রীয় ব্যাংকে সবাই যেন ফরমাল পোশাক পরে অফিস করেন; সে লক্ষ্যেই এ নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। নিজেদের মধ্যে পোশাকবৈষম্য দূর করা এর অন্যতম লক্ষ্য।
তিনি বলেন, এ নির্দেশনার মাধ্যমে কাউকে হিজাব পরতে বাধ্য করা হয়নি। বরং হিজাব যে পরা যাবে সেটা পরিষ্কার করা হয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র বলেন, বর্তমানে কেউ অশালীন পোশাক পরে অফিস করেন তেমন না। তবে বিশ্ববিদ্যালয় শেষ করে একেবারে নতুন যারা যোগদান করেন অনেক সময় তাদের কারও–কারও পোশাক নিয়ে অন্য নারী সহকর্মীরা প্রশ্ন তুলেন। আবার পুরুষদের মধ্যে অনেকেই টি-শার্ট, জিন্স বা গ্যাবার্ডিন প্যান্ট পরে অফিসে আসছেন। যে কারণে ফরমাল শার্ট–প্যান্ট পরতে বলা হয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর–৩ জাকির হোসেন চৌধুরীর সভাপতিত্বে সম্প্রতি অনুষ্ঠিত বিভাগীয় মাসিক সভায় আলোচনার ভিত্তিতে এ নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। ওই সভার কার্যবিবরণীতে অন্তর্ভুক্ত বিভিন্ন আলোচনার মধ্যে ১১ নম্বর ছিলো– যৌন হয়রানি, কর্মকর্তা–কর্মচারিদের আচারণ ও পোশাক সংশ্লিষ্ট।
সেখানে বলা হয়, নারী সহকর্মীদের প্রতি আচরণের বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংক স্টাফ রেগুলেশন, ২০০৩–এর নির্দেশনা মেনে চলতে হবে। যৌন হয়রানি-সংক্রান্ত অভিযোগ পাওয়ার ৩০ কর্মদিবসের মধ্যে মানবসম্পদ বিভাগ গঠিত কমিটিতে পাঠাতে হবে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহার বিষয়ে নির্দেশনা যথাযথভাবে অনুসরণ করতে হবে।
নির্দেশনা আরও বলা হয়, ইতিবাচক কর্মপরিবেশ তৈরির লক্ষ্যে দাপ্তরিক শিষ্টাচার ও আচারণবিধি তথা সততা, নৈতিকতা, সময়ানুবর্তিতা, শৃঙ্খলাবোধ, অর্পিত দায়িত্ব–কর্তব্য পালনে নিষ্টা থাকতে হবে। সহকর্মীদের প্রতি শ্রদ্ধাশীল আচারণ ও সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক (পারস্পারিক সম্মান, সৌজন্যতাবোধ, সহযোগীতামূলক মনোভাব) মেনে চলতে হবে।
বিডি প্রতিদিন/নাজিম