অ্যাশেজ সিরিজের উত্তাপ এবার মাঠ থেকে ছড়িয়ে পড়ল আম্পায়ারিং সিদ্ধান্তে, আর সেই আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছেন বাংলাদেশি আম্পায়ার শরফুদ্দৌলা ইবনে শহীদ সৈকত।
অ্যাশেজের দ্বিতীয় দিন শনিবার ইংল্যান্ডের দ্বিতীয় ইনিংসে জেমি স্মিথের আউট নিয়ে সৃষ্টি হয়েছে বিতর্ক। শুরুতে অনফিল্ড আম্পায়ার নট আউট দিলেও রিভিউ নেওয়ার পর স্মিথকে আউট দিয়েছেন সৈকত, তা নিয়েও শুরু হয়েছে আলোচনা। তবে সৈকতের সাহসী সিদ্ধান্তকে শেষ পর্যন্ত সঠিক বলে রায় দিয়েছেন কিংবদন্তি আম্পায়ার সাইমন টফেল।
ঘটনাটি ঘটে ইংল্যান্ডের দ্বিতীয় ইনিংসের ২৮তম ওভারে। অজি পেসার ব্রেন্ডন ডগেটের প্রথম বলটি ব্যাটে লাগাতে ব্যর্থ হন জেমি স্মিথ। উইকেটরক্ষক অ্যালেক্স ক্যারি ক্যাচ লুফে নেওয়ার পর অনফিল্ড আম্পায়ার নিতিশ মেনন নাকচ করে দেন। কিন্তু অস্ট্রেলিয়া অধিনায়ক স্টিভেন স্মিথ সঙ্গে সঙ্গেই রিভিউ নেন। তৃতীয় আম্পায়ার হিসেবে দায়িত্বে থাকা সৈকত রিভিউতে ‘রিয়েল-টাইম স্নিকো’ প্রযুক্তি ব্যবহার করে রিপ্লে পর্যবেক্ষণ করেন।
ফুটেজে দেখা যায়, বল ব্যাটের ঠিক পাশ দিয়ে যাওয়ার মুহূর্তে স্পাইক (শব্দতরঙ্গ) না দেখা গেলেও ঠিক এক ফ্রেম পরেই স্পাইক দেখা যাচ্ছে। ক্রিকেটের নিয়ম অনুযায়ী, বলের গতিপথে এমন বিলম্বিত স্পাইকও ব্যাটের স্পর্শ হিসেবে গণ্য হয়। বিষয়টি নিশ্চিত হয়ে সৈকত অনফিল্ড আম্পায়ারকে সিদ্ধান্ত পরিবর্তনের নির্দেশ দেন এবং জেমি স্মিথকে আউট ঘোষণা করা হয়।
মাঠে থাকা ইংলিশ সমর্থকরা এই সিদ্ধান্তে ক্ষোভ প্রকাশ করলেও সৈকতের পাশে দাঁড়িয়েছেন আম্পায়ারিং জগতের অন্যতম সেরা ব্যক্তিত্ব সাইমন টফেল। তিনি ব্যাখ্যা করেন, অস্ট্রেলিয়ায় ব্যবহৃত ‘রিয়েল-টাইম স্নিকো’ প্রযুক্তি বিশ্বের অন্যান্য দেশে সচরাচর ব্যবহৃত ‘আল্ট্রাএজ’ থেকে কিছুটা ভিন্ন।
টফেল বলেন, ‘রিয়েল-টাইম স্নিকো ব্যবহার করা সব আম্পায়ারের জন্য সহজ নয়, কারণ এটির অভিজ্ঞতা খুব কম দেশেরই আছে। তবে নিয়ম হলো, বল ব্যাটের খুব কাছ দিয়ে যাওয়ার পরের ফ্রেমে স্পাইক দেখা গেলে সেটিকেও কন্ট্যাক্ট বা স্পর্শ হিসেবে ধরা হয়। জেমি স্মিথের আউটের ক্ষেত্রে সৈকত সেই নিয়মটিই সঠিকভাবে প্রয়োগ করেছেন।’
আন্তর্জাতিক অঙ্গনে এর আগেও নিজের নির্ভুল সিদ্ধান্তের জন্য প্রশংসা কুড়িয়েছেন শরফুদ্দৌলা সৈকত। অ্যাশেজের মতো হাই-প্রোফাইল সিরিজে প্রযুক্তির এমন খুঁটিনাটি বিষয় মাথায় রেখে সঠিক সিদ্ধান্ত দিয়ে তিনি আবারও নিজের দক্ষতার প্রমাণ দিলেন।
বিডি প্রতিদিন/এমআই