কয়েক দশকের মধ্যে সবচেয়ে শক্তিশালী ভূমিকম্পে কেঁপে উঠেছে দেশ। তীব্র ঝাঁকুনিতে হেলে পড়েছে বহুতল ভবন, রেলিং ভেঙে, দেয়াল ধসে সারা দেশে নিহত হয়েছে ১০ জন, আহত হয়েছে ছয় শতাধিক। আতঙ্কে রাস্তায় নেমে পড়ে মানুষ, ভয়ে অনেকে কান্নায় ভেঙে পড়ে। অপরিকল্পিতভাবে গড়ে ওঠা নগরে মূর্তিমান আতঙ্ক এখন ভূমিকম্প।
আবহাওয়া অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, গতকাল সকাল ১০টা ৩৮ মিনিটে ভূমিকম্প আঘাত হানে। রিখটার স্কেলে এর মাত্রা ছিল ৫ দশমিক ৭। মার্কিন ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা (ইউএসজিএস) জানিয়েছে ভূমিকম্পের মাত্রা ছিল ৫ দশমিক ৫। উৎপত্তিস্থল নরসিংদীর মাধবদী, ভূপৃষ্ঠের ১০ কিলোমিটার গভীরে। স্থায়িত্ব ছিল ২৬ সেকেন্ড।
ভূমিকম্পে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে হতাহতের ঘটনায় শোক প্রকাশ করেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। এক শোকবার্তায় সরকারপ্রধান নিহত ব্যক্তিদের আত্মার মাগফিরাত কামনার পাশাপাশি শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানান। প্রধান উপদেষ্টা আহতদের দ্রুত আরোগ্য কামনার পাশাপাশি ক্ষতিগ্রস্ত স্থানে উদ্ধার কার্যক্রম জোরদার করতে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দিয়েছেন। মুহাম্মদ ইউনূস বলেন, সরকারের পক্ষ থেকে পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে এবং ক্ষয়ক্ষতির পূর্ণ বিবরণ সংগ্রহের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ভূমিকম্পে ক্ষয়ক্ষতি ও হতাহতের ঘটনায় শোক প্রকাশ করেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। গতকাল দলটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে এই শোক প্রকাশ করেন তিনি। বিবৃতিতে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, ‘এই ভয়াবহ প্রাকৃতিক দুর্যোগে আমি ক্ষতিগ্রস্ত মানুষদের প্রতি সংহতি ও সহানুভূতি প্রকাশ করছি। আমি মহান রাব্বুল আলামিনের নিকট দোয়া করছি, তিনি যেন ভূমিকম্পে হতাহতদের পরিবারবর্গকে শোক ও কষ্ট সহ্য করার ক্ষমতা দান করেন।’
ভূমিকম্পে হতাহতের ঘটনায় গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান। গতকাল গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, ‘নিহতদের রুহের মাগফিরাত কামনা করছি। নিহত ও আহতদের পরিবার-পরিজনদের প্রতি গভীর সমবেদনা জ্ঞাপন করছি।’ ফায়ার সার্ভিস জানিয়েছে, রাজধানীর আরমানিটোলার কসাইটুলী এলাকার একটি আটতলা ভবনের পাশের দেয়াল এবং কার্নিশ থেকে ইট ও পালেস্তারা খসে নিচে পড়ে, যেখানে একটি গরুর মাংস বিক্রির দোকান ছিল। সেখানে থাকা ক্রেতা ও পথচারীরা আহত হন। ফায়ার সার্ভিস ঘটনাস্থলে পৌঁছানোর আগেই স্থানীয় লোকজন তাদের হাসপাতালে নিয়ে যান। হাসপাতালে নেওয়ার পর চিকিৎসকরা তিনজনকে মৃত ঘোষণা করেন। বংশাল থানার ওসি রফিকুল ইসলাম জানিয়েছেন নিহতরা হলেন রাফিউল ইসলাম (২২), হাজী আবদুর রহিম (৪৭) ও তার ছেলে মেহরাব হোসেন রিমন (১২)। রাফিউল ইসলাম স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক (হাসপাতাল ও ক্লিনিকসমূহ) চিকিৎসক আবু হোসেন মো. মঈনুল আহসান। এ ছাড়া রাজধানীর মুগদা মদিনাবাগে নির্মাণাধীন ভবনের রেলিং ধসে মাকসুদ (৫০) নামে এক নিরাপত্তাকর্মীর মৃত্যু হয়েছে। নিহত রাফিউল ইসলাম রাফি গতকাল মা নুসরাত বেগমের সঙ্গে মহিষের মাংস কিনতে বেরিয়েছিলেন। বংশালের কসাইটুলীতে একটি ভবনের নিচতলায় নয়নের মাংসের দোকানের সামনে দাঁড়িয়ে ছিলেন তারা। হঠাৎ ভূমিকম্প শুরু হয়। তীব্র ঝাঁকুনিতে দোকানের সামনে থাকা ক্রেতাদের ওপর ভবনের ছাদের রেলিং ভেঙে পড়ে।
এ ঘটনায় গুরুতর আহত হন রাফিউল ও তার মা নুসরাত। স্থানীয় লোকজন তাদের উদ্ধার করে স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ মিটফোর্ড হাসপাতালে নিয়ে যান। রাফিউলকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক। তার মা নুসরাত হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তিনি মাথায় প্রচণ্ড আঘাত পেয়েছেন। ফায়ার সার্ভিস জানায়, সূত্রাপুরের স্বামীবাগে আটতলা একটি ভবন অন্য একটি ভবনে হেলে পড়েছে। কলাবাগানের আবেদখালী রোডে একটি সাততলা ভবন হেলে পড়েছে। তবে কেউ হতাহত হয়নি। বারিধারা এফ ব্লকের ৫ নম্বর রোডে একটি বাসায় আগুনের ঘটনা ঘটেছে। একই সঙ্গে মুন্সিগঞ্জের গজারিয়ায় একটি বাসায় আগুন লাগার ঘটনা ঘটেছে। এ ছাড়া রাজধানীর আরমানিটোলার কসাইটুলীতে ছয়তলা ভবন ধসে পড়েছে। ফায়ার সার্ভিসের কন্ট্রোল রুমের দায়িত্বরত কর্মকর্তা খালেদা ইয়াসমিন বলেন, আরমানিটোলার কসাইটুলীতে ছয়তলা ভবনের একাংশ ধসে পড়ার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছে ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা সেখানে কাজ শুরু করেছেন। তবে হতাহতের কোনো খবর পাওয়া যায়নি। তিনি বলেন, প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়সহ ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় ভবন হেলে পড়েছে, কোনো ভবনে ফাটল ধরেছে এবং কোথাও পলেস্তরা খসে পড়ার খবর পাওয়া গেছে। এ ছাড়া মগবাজারে মীরেরটেকে ভূমিকম্পের সময় নির্মাণাধীন ভবন ধসে তিন শ্রমিক গুরুতর আহত হয়েছেন। তাৎক্ষণিকভাবে তাদের উদ্ধার করে মগবাজার কমিউনিটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাদের ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। ভবনটির পাশের একজন দোকানদার জানান, নির্মাণাধীন ভবনটির সাততলায় কয়েকজন শ্রমিক কাজ করছিলেন।
ভূমিকম্পের তীব্র ঝাঁকুনিতে ভবনের দেয়াল ধসে তারা সাততলা থেকে নিচে পড়ে যান। এতে তিনজন গুরুতর আহত হন। নির্মাণাধীন এই ভবনের পাশের জাহাঙ্গীর টাওয়ারের বাসিন্দারা জানান, কয়েক দিন থেকেই ভবনটির নির্মাণকাজ চলছে। জীবিকার তাগিদে ঢাকার বিভিন্ন এলাকা থেকে নির্মাণশ্রমিকরা এখানে এসে কাজ করেন। ভূমিকম্পে আতঙ্ক ছড়িয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) আবাসিক হলগুলোতে। কম্পনের ফলে ফাটল দেখা দেয় বিভিন্ন হলের ভবনে। আতঙ্কে হলের ভবন থেকে লাফ দিয়ে আহত হয়েছেন চারজন শিক্ষার্থী। প্রাণ বাঁচাতে ছোটাছুটি করতে গিয়ে আহত হয়েছেন আরও বেশ কয়েকজন। ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল নরসিংদীতে তীব্র কম্পন অনুভূত হয়। ভূমিকম্পে নরসিংদীতে বাবা-ছেলেসহ পাঁচজন নিহত হয়েছেন। শহরের গাবতলী এলাকায় ছাদের রেলিং ভেঙে পড়ে দেলোয়ার হোসেন (৫০) এবং তার ছেলে ওমর (৮) আহত হন। পরে হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তারা মারা যান। এ ছাড়া পলাশ উপজেলার মালিকা গ্রামে ভূমিকম্পে মাটির ঘরের দেয়ালচাপায় কাজম আলী (৭৫) নামে এক ব্যক্তি মারা গেছেন। পলাশের ডাঙ্গা কাজিরচর এলাকার নাসির উদ্দিন (৬৫) আতঙ্কিত হয়ে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যায়। শিবপুর উপজেলার আজকিতলা গ্রামের ফুরকান মিয়া (৪২) ভূমিকম্পের সময় গাছ থেকে পড়ে মারাত্মকভাবে আহত হন। দ্রুত তাকে নরসিংদীর ১০০ শয্যা হাসপাতালে নেওয়া হয়। অবস্থা সংকটাপন্ন হলে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজে পাঠানোর পথে রাস্তায় মৃত্যু হয়।
ঘোড়াশাল এলাকায় ছয়টি বাড়ি এবং এস এ প্লাজা নামে একটি সাততলাবিশিষ্ট শপিং মলে ফাটল ধরে। একই এলাকার বিভিন্ন ভবনের ছাদ থেকে দেয়ালের ইট পড়ে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। পলাশ রেসিডেন্সিয়াল মডেল কলেজের আঙিনার মাটি দেবে যায়।
ঘোড়াশাল বাজারের মুদি দোকানদার আসলাম মিয়া বলেন, ‘আমার দোকানের কাচের জিনিসপত্র পড়ে ভেঙে গেছে।’ ঘোড়াশাল ঈদগাহ রোডের মারকাসুল সুন্নাহ তাহফিজুল কুরআন সুন্নাহ মাদ্রাসার পরিচালক মুফতি সালা উদ্দিন আনসারী বলেন, ‘আমাদের ছয়তলা ভবনের চার-পাঁচ জায়গায় ফাটল দেখা দিয়েছে। শিক্ষার্থীরা ভয় পেয়েছে, আতঙ্কিত হয়ে পড়ে।’ নরসিংদী সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. গুলশানা কবির বলেন, ভূমিকম্পে ৫০ জনেরও বেশি আহত ব্যক্তিকে সেবা দেওয়া হয়েছে।
নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে ভূমিকম্পে দেয়াল ধসে এক বছরের এক শিশুর মৃত্যু হয়েছে। ভুলতা-গাউছিয়া যাওয়ার সময় সড়কের পাশের দেয়াল ধসে শিশু ফাতেমা, তার মা কুলসুম বেগম ও প্রতিবেশী জেসমিন বেগমের ওপর পড়ে। এ সময় ঘটনাস্থলেই শিশু ফাতেমার মৃত্যু হয়। নারায়ণগঞ্জের বন্দরে ভূমিকম্পের সময় বৈদ্যুতিক ট্রান্সফরমারের তারের সঙ্গে তারের ঘর্ষণে পাশের একটি তুলার কারখানায় অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। খবর পেয়ে বন্দর ও সোনারগাঁ ফায়ার সার্ভিসের পাঁচটি ইউনিট ঘটনাস্থলে পৌঁছে তিন ঘণ্টা চেষ্টার পর আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।
কারখানার মালিক জুলহাস মিয়া বলেন, মুহূর্তেই আগুন পুরো কারখানায় ছড়িয়ে যায়। অগ্নিকাণ্ডে প্রায় কোটি টাকার মালামাল পুড়ে গেছে। নারায়ণগঞ্জ ফায়ার সার্ভিসের জোন-২-এর উপসহকারী পরিচালক ওসমান গণী বলেন, পাঁচটি ইউনিট তিন ঘণ্টা চেষ্টার পর আগুন নেভাতে সক্ষম হয়। বন্দর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) লিয়াকত আলী বলেন, খবর পেয়ে ধামগড় ফাঁড়ির পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। ভূমিকম্পে সোনারগাঁয়ের পিরোজপুর ইউনিয়ন পরিষদসংলগ্ন দ্বীন ইসলামের প্লাস্টিক গোডাউনে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। গজারিয়া ফায়ার সার্ভিসের একটি ইউনিট প্রায় এক ঘণ্টা চেষ্টার পর আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। এ সময় গোডাউনের সব মালপত্র পুড়ে ছাই হয়ে যায়। মোগরাপাড়া ইউনিয়নের কাবিলগঞ্জ এলাকায় দেয়ালচাপায় রাকেশ রায় (৩২) নামের এক যুবক আহত হয়েছেন। ভূমিকম্পের আতঙ্কে মারুফ হোসেন (১৭) নামের এক মাদ্রাসাছাত্র দ্বিতীয় তলা থেকে লাফিয়ে পড়ে আহত হয়। তাকে সোনারগাঁ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা দেওয়া হয়। গজারিয়া ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন অফিসার মো. ফিরোজ মিয়া জানান, পিরোজপুর এলাকায় গিয়ে একটি প্লাস্টিকের গোডাউনের আগুন প্রায় এক ঘণ্টা চেষ্টার পর নিয়ন্ত্রণে আনা হয়েছে। কেরানীগঞ্জের জিঞ্জিরায় ভূমিকম্পে একটি সাততলা ভবন পাশের আরেকটি সাততলা ভবনের ওপর হেলে পড়েছে। সাত্তার কসাইয়ের মালিকানাধীন ভবনটি পাশে থাকা মো. ভুট্টো মিয়ার ভবনের দিকে হেলে পড়ে। এ সময় হুড়োহুড়ি করে নিচে নেমে আসতে গিয়ে কয়েকজন সামান্য আহত হন। স্থানীয় বাসিন্দা আবদুর রহিম বলেন, সাত্তার মিয়ার ভবনটি তিনতলা ফাউন্ডেশনের ওপর নকশা ছাড়া নির্মাণ করা হয়। কেরানীগঞ্জ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মনিরুল হক ডাবলু বলেন, ‘ভূমিকম্পে ভবন হেলে পড়ার খবর পেয়েছি। তবে এখন পর্যন্ত কোনো হতাহতের তথ্য পাওয়া যায়নি।’ গাজীপুরে ভূমিকম্পের আতঙ্কে একটি কারখানায় হুড়োহুড়ি করে নামতে গিয়ে শ্রমিক আহত হয়েছেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কারখানাটিতে ছুটি ঘোষণা করেছে কর্তৃপক্ষ।
ইটাহাটা এলাকায় কোস্ট টু কোস্ট কারখানায় ভূমিকম্পের সময় শ্রমিকদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। এ সময় কারখানা ত্যাগ করতে গিয়ে দেয়ালে ধাক্কা খেয়ে ও সিঁড়িতে পড়ে গিয়ে অন্তত ৩০ শ্রমিক আহত হন। তাদের উদ্ধার করে হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। চান্দনা চৌরাস্তা এলাকায় ঢাকা-জয়দেবপুর সড়কের পাশে হাসান-তানভীর ফ্যাশন ওয়্যার কারখানার শ্রমিকরা আতঙ্কে তাড়াহুড়ো করে বের হতে গিয়ে ছয় ব্যক্তি আহত হন। ৭টি বিদ্যুৎ কেন্দ্র বন্ধ : শক্তিশালী ভূমিকম্পে দেশে বৃহৎ ও ছোট আকারের সাতটি বিদ্যুৎ কেন্দ্র ট্রিপ (বন্ধ) করেছে। একই সঙ্গে একটি সাবস্টেশনও দুর্ঘটনার কারণে বন্ধ হয়ে গেছে। বিদ্যুতের চাহিদা কম থাকায় গ্রিডে বড় ধরনের কোনো প্রভাব পড়েনি। তবে পরিস্থিতি ঠিক হতে সময় লাগবে বলে বিপিডিবি ও পিজিসিবি কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে।
বিপিডিবি জানিয়েছে, ভূমিকম্পের পর গতকাল বেলা ১১টা ৫০ মিনিট পর্যন্ত দেশের সাতটি বিদ্যুৎ কেন্দ্র ও একটি গ্রিড সাবস্টেশন বন্ধের খবর পেয়েছে। বাকি বিদ্যুৎ কেন্দ্র ও গ্রিডের তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে বলে জানান বিপিডিবির দুজন কর্মকর্তা।
মসজিদে মসজিদে বিশেষ দোয়া : ভূমিকম্পসহ প্রাকৃতিক দুর্যোগ থেকে রক্ষা কামনায় জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমসহ দেশের বিভিন্ন মসজিদে বিশেষ দোয়া ও মোনাজাত হয়েছে। গতকাল জুমার নামাজ শেষে ভূমিকম্পসহ যে কোনো দুর্যোগ থেকে উম্মাহকে হেফাজত ও বাংলাদেশসহ বিশ্ববাসীকে স্রষ্টার রহমতের ছায়ায় রাখার আকুতি জানানো হয়। এ ছাড়া ভূমিকম্প অনুভূত হওয়ার পর রাজধানীসহ সারা দেশে অধিকাংশ মসজিদ থেকে আল্লাহ আকবর ধ্বনি দেন মুয়াজ্জিন। অনেক জায়গায় মসজিদের মাইক থেকে দোয়া এবং আজানের ধ্বনিও শোনা যায়।