ওভালে ইংল্যান্ডের ইনিংসের শুরু থেকেই লেগে গিয়েছিল আকাশ দীপ ও ডাকেটের। পেসার আকাশ দীপের একটা বল রিভার্স পুল করে ছক্কা মারেন ডাকেট। তার পর ইংরেজ ব্যাটার আকাশদীপকে বলেন, “তুমি আমাকে আউট করতে পারবে না।”
এতে আকাশ দীপও উত্তেজিত হয়ে পড়েন। দু’জনের মধ্যে লড়াই চলতে থাকে। আকাশদীপের একটা বল ডাকেটের প্যাডে লাগলে এলবিডব্লিউয়ের আবেদন করে ভারত। আম্পায়ার আউট দেননি। রিভিউ নিয়ে দেখা যায়, বল উইকেটের উপর দিয়ে যাচ্ছে। পরের ওভারেই আকাশদীপের বলে তিনটে চার মারেন ডাকেট।
৪৩ রানের মাথায় আকাশ দীপের বলে রিভার্স স্কুপ করার চেষ্টা করেন ডাকেট। বল ব্যাটের কানায় লাগে। উইকেটরক্ষক ধ্রুব জুরেল ক্যাচ ধরেন। ৩৮ বলে ৪৩ রান করে আউট হন ডাকেট। তার পরে দেখা যায়, আকাশ দীপ ডাকেটের গলা জড়িয়ে ধরে কিছু একটা বলছেন। তার মুখে হাসি থাকলেও ধারাভাষ্যকারদের মনে হয়েছে বিদ্রুপ করছেন তিনি। ডাকেটের মুখে কিন্তু হাসি ছিল না। কিছুক্ষণের মধ্যে আকাশদীপকে সরিয়ে নিয়ে যান লোকেশ রাহুল।
এমন দৃশ্যের পর আইসিসির পক্ষ শাস্তি নেমে আসে সাধারণত। তবে আকাশের বিরুদ্ধে কোনো শাস্তি ঘোষণা হয়নি। ডাকেটের কোচ জেমস নট মনে করেন শাস্তি দেওয়া উচিত ছিল।
ডাকেটের কোচ জেমস নট টাইমস অব ইন্ডিয়াকে বলেন, ‘এটি প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক সিরিজের অংশ ছিল, তবে অবশ্যই তরুণদের নিরুৎসাহিত করতে শাস্তি প্রয়োজন। একই সঙ্গে, ব্যক্তিগতভাবে এটি আমাকে বিরক্ত করে না।’
পুরো সিরিজে ডাকেট ৪৬২ রান করেছেন, গড় ছিল ৫১.৩৩ এবং স্ট্রাইক রেট ৮২.৯৪। সিরিজের শেষ দিকে ইংল্যান্ড তাদের আক্রমণাত্মক ভঙ্গি কিছুটা বদলালেও ডাকেট সবসময় আক্রমণাত্মক খেলেছেন।
তার কোচ বলেন, ‘অনেকে বলে সে হয়তো খুব বেশি নির্লিপ্ত, কিন্তু উইকেটে থাকলে সে খুব প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ, যেমনটা সাম্প্রতিক টেস্ট সিরিজে দেখা গেছে। শুভমান গিল আমাকে বলেছিল, ডাকেট ক্রিজে থাকলে চ্যালেঞ্জ উপভোগ করে।’
নট আরও বলেন, ‘সে খাটো, বাঁহাতি, উইকেটের দু’পাশে রান করে, দুই দিকেই সুইপ মারে। এই কারণে তাকে বল করা কঠিন। গিলের কথা ভাবুন, সে অনেক বেশি প্রথাগত খেলোয়াড়। প্রথমবার ডাকেটকে দেখার সময়ই তার রিভার্স সুইপ ও সুইচ হিট ছিল, পরে আমরা অরথোডক্স সুইপ যোগ করি তার ব্যাটিংয়ে। ছোটবেলায় সে আকারে ছোট ছিল, কিন্তু অন্যদের চেয়ে জোরে বল মারত। অনূর্ধ্ব-১৪ বা অনূর্ধ্ব-১৫ ক্রিকেটে সে শিখেছিল যে বাউন্ডারির বাইরে বল পাঠানোর শক্তি সবসময় থাকবে না, তাই বল নিচে রাখার কৌশল রপ্ত করে, যা সে এখনও করে।’
ডাকেটকে ক্রিকেট মাঠে বেশ শান্ত প্রকৃতির একজন বলেই মনে হয়। তবে তিনি ছেলেবেলায় ছিলেন তার ঠিক উলটো মানুষটা। নট বললেন, ‘স্কুল পর্যায়ে কয়েকবার তাকে শৃঙ্খলাবিধি ভঙ্গের জন্য বেঞ্চে বসানো হয়েছিল, যদিও ঘটনা বেশি ছিল না। সে তা মেনে নিয়েছিল এবং ফিরে এসে আরও পরিণত হয়েছিল, যা তার চরিত্র গঠনে সাহায্য করেছে। কখনো কাঁধে হাত রাখা প্রয়োজন হয়েছে, আবার কখনো কঠোর তিরস্কার। জীবনের কঠিন সময়ে ডাকেট একা ছিল, এখন তার একটি সন্তান আছে এবং বিয়ে করতে যাচ্ছে। এসব জীবনে নতুন দৃষ্টিভঙ্গি এনে দেয়।’
সূত্র: আনন্দবাজার
বিডি প্রতিদিন/নাজিম